You dont have javascript enabled! Please enable it!

অতীতের ন্যায় আর বিচার প্রত্যাশিত হবে না

শহীদ মালেক হত্যা ও আ,স,ম আবদুর রবসহ প্রায় একশত ছাত্রলীগ কর্মীর ওপর হামলার প্রতিবাদে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে বায়তুল মোকাররম প্রাঙ্গণে এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় গৃহীত এ প্রস্তাবে দিনাজপুর থেকে আগত ছাত্রলীগ কর্মী শহীদ মালেক হত্যার বিচার বিভাগীয় তদন্তের জোর দাবি জানানো হয়। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নবনির্বাচিত সভাপতি জনাব শরীফ নুরুল আম্বিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই প্রতিবাদ সভায় অন্যায় হামলার তীব্র নিন্দা করে বক্তৃতা করেন ছাত্রলীগের নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক বিপ্লবী ছাত্রনেতা জনাব শাজাহান সিরাজ। সভায় দিনাজপুরের ছাত্রলীগ কর্মী আবদুল মালেকের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে শহীদের শোক সন্তপ্ত পরিবারবর্গের প্রতি সমবেদনা জানানো হয়।
শাজাহান সিরাজ : সভায় ছাত্রনেতা জনাব শাজাহান সিরাজ ঘোষণা করেন যে, শ্রেণি সংগামের মাধ্যমে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র কায়েমের সংগ্রামে আবদুল মালেক হচ্ছেন প্রথম শহীদ। তিনি বলেন, শহীদ আবদুল মালেকের রক্তরঞ্জিত পথই আগামি দিনের সংগ্রামী পথ। জনাব সিরাজ বলেন যে, এই হামলা শুধু রব ও মালেকের ওপর হামলা নয়। সাড়ে সাত কোটি মানুষের ওপর এই ঘৃণ্য হামলা চালানো হয়েছিল। জনাব সিরাজ বলেন যে, অতীতের ন্যায় আমরা আর বিচারের প্রত্যাশী হব না, অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমরা সংগ্রাম করবো। লাঠির জবাব লাঠিতে আর অস্ত্রের জবাব অস্ত্রের ভাষাতেই
রেডক্রসের সাহায্য সংক্রান্ত শ্বেতপত্র প্রকাশ করুন : জনাব সিরাজ অভিযোগ করেন যে, বাংলাদেশে রেডক্রস মারফৎ যে সাহায্য দ্রব্যাদি এসেছে বাংলার সাধারণ মানুষ তার অংশ পায় নাই। এসব সাহায্য দুর্নীতিপরায়ণ এম সি এ ও আওয়ামী লীগ কর্মীদের পকেটস্থ হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন যে, এযাবৎ বাংলার দুঃখি জনগণের মধ্যে ১০০ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে। অংকের হিসাব মতে সাড়ে সাত কোটি মানুষের মধ্যে এই ১০০ কোটি টাকা বিতরণ করলে প্রত্যেকের ১৫ টাকা করে পাওয়া উচিত। তিনি অভিযোগ করেন যে, রিলিফের কাপড় দিয়ে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর সাদা পোষাক ও টুপি তৈরি করে দেয়া হয়েছে। তিনি প্রশ্ন করেন যে, স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর পোষাক ধোয়া ও নাস্তার খরচ কোথা থেকে আসে? এই প্রসঙ্গে জনাব সিরাজ রেডক্রসের সাহায্য দ্রব্য সম্পর্কে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানান। বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র কায়েমের সঠিক পথ বেছে নেয়ার জন্য তিনি শ্রমিক লীগকে অভিনন্দন জানান। জনাব সিরাজ বাংলার বুকে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সাংবাদিকদের নির্ভয়ে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান। ছাত্রলীগের নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক জনাব আ,ফ,ম মাহবুবুল হক বলেন যে, জাতীয় শত্রুরা আবার আওয়ামী লীগের ছদ্মবেশে রাজনীতিতে আসার চেষ্টা করছে। কালোবাজারী ও দুর্নীতিপরায়ণ এম সি এ-র দল বাংলার স্বাধীনতাকে অর্থহীন করার জন্য জঘন্য খেলায় লিপ্ত রয়েছে, তাই স্বাধীনতা আন্দোলনের হোতা সংগ্রামী ছাত্র প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ছাত্রলীগ যখন স্বাধীনতার অর্থবহ করে তোলার জন্য শ্রেণি সংগ্রামের মাধ্যমে বৈজ্ঞানিক সমাজ ব্যবস্থা কায়েমের বক্তব্য শুরু হয়েছে। তাদের ইঙ্গিতে ছাত্রলীগ কর্মীদের ওপর লেলিয়ে দেয়া হচ্ছে হিংস্র নেকড়ের দল।৯৫

রেফারেন্স: ২৫ জুলাই ১৯৭২, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!