আওয়ামী লীগ মাওবাদ-লেনিনবাদের মতো মুজিববাদ কায়েম করবে
বগুড়া। সোভিয়েত ইউনিয়ন লেনিনবাদ কায়েম করেছে, চীন মাওবাদ কায়েম করেছে। তেমনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কর্মীরা মুজিববাদ কায়েম করবে। তথ্য ও বেতার মন্ত্রী জনাব মিজানুর রহমান চৌধুরী আজ দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে একথা বলেন। তিনি বলেন, সমাজতন্ত্র কার্লক্সের। সোভয়েত ইউনিয়ন এটাকে লেনিনবাদ করেছে এবং চীন করেছে মাওবাদ। একইভাবে বাংলাদেশের মানুষ মুজিববাদের মাধ্যমে সমাজতন্ত্র আনবে। এই মুজিববাদ রাষ্ট্রের ৪ টি বিঘোষিত মুলনীতির ওপর গড়া। বঙ্গবন্ধু স্বয়ং এর উদ্যোক্তা। তথ্যমন্ত্রী স্থানীয় একটি প্রেক্ষাগৃহে আওয়ামী লীগ কর্মী সম্মেলনে বক্তৃতা দিচ্ছিলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি জনাব কাসিমুদ্দিন। সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জনাব এ. কে, মুজিবর রহমান ও দৈনিক বাংলাদেশ সম্পাদক জনাব আমানুল্লাহ খান বক্তৃতা করেন। জনাব মিজান চৌধুরী তার বক্তৃতায় বলেন, দেশ-কাল-পাত্র ভেদে পরিস্থিতি অনুযায়ী এক এক দেশে এক এক নামে সমাজতন্ত্র কায়েম হয়েছে। এটা যদি না হতো তাহলে সরাসরি মার্কসবাদ না বলে রাশিয়ায় লেনিনবাদ আর চীনে মাওবাদ এলো কি করে? তিনি বলেন, দেশভেদে পরিস্থিতি মাফিক সমাজতন্ত্র। কায়েম করা হয়েছে। তাই তার নামেরও পরিবর্তন হয়েছে। তথ্যমন্ত্রী বলেন, এদেশের মানুষ লেনিনবাদ- মাওবাদের মতই মুজিববাদ কায়েমে বদ্ধপরিকর। বিদেশির মতবাদ আমাদের দেশের উপযুক্ত নাও হতে পারে। এই জন্য তা পুরাপুরি নকল করতে তারা চায় না। তিনি আরও বলেন, খুব কম দেশেই বঙ্গবন্ধুর মতো নেতা লাভের সৌভাগ্য হয়েছে। এমন নেতা ছিল যুক্ত রাষ্ট্রের, তিনি জজ ওয়াশিংটন।
মুজিববাদের তাৎপর্য ওরা বুঝতে অক্ষম : জনাব মিজান চৌধুরী দুঃখ করে বলেন, এক শ্রেণির লোক মুজিববাদের তাৎপর্য বুঝতে পারে না। এরা সোচ্চার কণ্ঠে ‘বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের কথা বলে। অথচ এই বিশ্লেষণ তারা নিজেরাও দিতে পারে না। তিনি বলেন, এরা বিপ্লবী সরকারের কথা বলে, যার কোনো ভিত্তি নেই। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারও বিপ্লবী সরকার। আমি মনে করি না বঙ্গবন্ধু ছাড়া আর কোনো বিপ্লবী নেতা আছে।”৮৩
রেফারেন্স: ২২ জুলাই ১৯৭২, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ