You dont have javascript enabled! Please enable it! 1972.07.05 | যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ব্যুরেমবার্গ সনদ অনুযায়ী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হচ্ছে | দৈনিক আজাদ - সংগ্রামের নোটবুক

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ব্যুরেমবার্গ সনদ অনুযায়ী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হচ্ছে

লন্ডন। যুক্তরাজ্যস্থ বাংলাদেশের হাই কমিশনার সৈয়দ আবদুস সুলতান লন্ডনের এক বিরাট শ্রমিক সমাবেশে বলেছেন যে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্যে বাংলাদেশ সরকার ন্যুরেমবার্গের সনদ অনুযায়ী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করেছেন। তিনি বলেন, এই ট্রাইব্যুনাল গঠন আদেশে যুদ্ধবন্দিদের দণ্ড ও তার আওতা স্থির করা হবে। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পর হতে বিশেষ করে এ পর্যায়ে যে বিধানগত উন্নতি হয়েছে তাও এই ট্রাইব্যুনালে সন্নিবেশিত হবে। জনাব সুলতান বলেন, কোনো রকম প্রতিহিংসামূলক মনোভাব নিয়ে গণহত্যার জন্যে দায়ী যুদ্ধবন্দিদের বিচার করা হচ্ছে না, বরং মানবতা বিরোধী কার্যকলাপের জন্যে অপরাধীদের বিনা বিচারে ছেড়ে দেয়া হবে না বলেই তাদের বিচার অনুষ্ঠিত হবে। আমরা এসব জঘন্য অপরাধীদের যদি বিচারের কাঠগড়ায় খাড়া না করি তাহলে ভবিষ্যৎ বংশধরদের কাছে আমাদের জবাবদিহি করতে হবে। বাংলাদেশে অবস্থানরত বিহারীদের প্রসঙ্গে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘোষণার পুনরুল্লেখ করে বলেন, যে সব অবাঙালি বাংলাদেশে বসবাস করেত চান তাদের আমরা সাদরে ও পূর্ণ নাগরিক মর্যাদায় রাখবো। আর যারা অন্যত্র যেতে চান তাদেরও কোনো রকম বাধা দেয়া হবে না। তারা নির্ভয়ে চলে যেতে পারেন, অবশ্য তাদের বিরুদ্ধে যদি দালালীর কোনো অভিযোগ না থাকে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে সাত হাজারেরও বেশি অবাঙালির চাকুরির সংস্থান করা হয়েছে এবং তাদের বাংলা ভাষা শিক্ষা দেয়ার জন্যে বিশেষ কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। জনাব সুলতান অভিযোগ করেন যে, পাকিস্তানে আটক ৪ লাখেরও বেশি বাঙালি চরম দুর্দশার মধ্যে দিনাতিপাত করছেন। তাদের প্রতি পাকিস্তান সরকার উৎপীড়নমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। এসব নিরীহ বাঙালিদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ব্যবস্থা করার জন্যে এবং এ ব্যাপারে পাকিস্তান সরকারকে চাপ প্রদানের জন্যে তিনি বিশেষ মিত্রদেশগুলোর প্রতি অনুরোধ জানান।

রেফারেন্স: ৫ জুলাই ১৯৭২, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ