সাড়ে সাতশ বাঙালি মেয়ের উপর অমানুষিক নির্যাতন
৭শ ৫৫ জন বাঙালি মেয়ে বর্তমানে করাচি ও কোয়েটার বন্দিশিবিরে অমানুষিক দৈহিক ও মানুষিক নির্যাতন ভোগ করেছে। পাকিস্তানি দখলদারবাহিনী তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান থেকে এদের অপহরণ করেছিল। এদের মধ্যে অনেকেই স্কুল ও কলেজ ছাত্রী। বাংলাদেশ পোস্ট অফিস ডিরেক্টরেটের সিনিয়র ক্লার্ক জনাব লুৎফর রহমান গত শনিবার এখানে উপরোক্ত তথ্য প্রকাশ করে বলে বাসসর এক খবরে জানা গেছে। জনাব রহমান সম্প্রতি ২শ মাইল নৌকায় ও ৩শ মাইল পায়ে হেটে ভারত হয়ে পাকিস্তান থেকে ফিরে আসতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি বলেন এসব হতভাগ্য মেয়ের অধিকাংশকেই তত্ত্বাবধায়কদের বর্বর লালসা চরিতার্থ করার জন্য পতিতাবৃত্তি গ্রহণে বাধ্য করা হচ্ছে। জনাব রহমান জানান যে, তিনি দুজন বাঙালি সিনিয়র অফিসারের নির্দেশে হায়দরাবাদ ও করাচি নিষিদ্ধ এলাকায় যান এবং সেখানে ১৪ জন বাঙালি মেয়ের সংস্পর্শে আসেন। এদের মধ্যে একজন বাঙালি মেয়েদের ওপর কৃত বর্বর অত্যাচার ও নির্যাতনের কাহিনী বর্ণনা প্রসঙ্গে তাকে জানান যে তাদেরকে বাংলায় কথাও বলতে দেওয়া হয়না। এসব মেয়ে পতিতালয়ে অশেষ দুর্ভোগের মধ্যে থাকলেও তারা বাংলাদেশে তাদের পিতামাতার সম্মানের খাতিরে নিজেদের ঠিকানা দিতে অস্বীকার করে। তাদের কথাবার্তা থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় যে, তারা সম্রান্ত পরিবারের মেয়ে এবং লেখাপড়া জানে। তারা জনাব রহমানকে অনুরোধ জানিয়ে বলেন যে, তিনি যেন তাদের দুঃখ দুর্দশার কাহিনী যাতে বঙ্গবন্ধুকে জানান, যাতে বঙ্গবন্ধু তাদের দেশে ফিরিয়ে নেবার ব্যবস্থা করেন।৬৯
রেফারেন্স: ১৮ জুন ১৯৭২, দৈনিক বাংলা
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ