You dont have javascript enabled! Please enable it!

পাকিস্তানের যুদ্ধ ঘােষণা

ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রতিআক্রমণ মুক্তিবাহিনীর প্রবল অগ্রগতি

যুদ্ধ যুদ্ধ যুদ্ধ। রক্তপিপাসু বর্বর পাক শাসকেরা বাংলাদেশের উপর যে আঘাত হেনেছিল তা আরাে বিস্তৃত করে বাংলাদেশের মিত্র রাষ্ট্র ভারতের উপরেও ছড়িয়ে দিয়েছে। ৩রা ডিসেম্বর ভারতের কয়েকটি শহরের উপর বিনা প্ররােচনায় বিমান আক্রমণ করে এবং প্রায় সঙ্গে সঙ্গে ভারতের বিভিন্ন সীমান্ত অঞ্চল অতিক্রম করে পদাতিক বাহিনীর অনুপ্রবেশ করিয়ে দিয়ে পাক জঙ্গীচক্র ভারতকে জোর করে যুদ্ধে লিপ্ত হতে বাধ্য করেছে। ভারতের প্রধান মন্ত্রী শ্রীমতী গান্ধী অনন্যোপায় হয়ে ভারতীয় স্থল, বিমান, ও নৌ বাহিনীকে পাক বাহিনীর আক্রমণ প্রতিহত করে পাল্টা আক্রমণ হানতে নির্দেশ দেন। তিনি আরাে বলেন, “বাংলাদেশের জনগণের মুক্তি সংগ্রামকে আমরা প্রয়ােজনমত সাহায্য করবাে”। ফলে মুক্তি বাহিনী ও ভারতীয় সেনার যৌথ আক্রমণে প্রায় সমগ্র বাংলা দেশ মুক্ত।  ভারতের পূর্বাঞ্চলের সমরাধিনায়ক লেঃ জেঃ জগজিং সিং আরােরা কলকাতায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, “বাংলা দেশের কোন অঞ্চল দখল করে রাখা ভারতের উদ্দেশ্য নয়। ভারত চায় বাংলাদেশের জনগণের প্রতিনিধিত্বমূলক এক গণতান্ত্রিক সরকারকে সেখানে প্রতিষ্ঠিত করতে”।  ফলে মুক্তি বাহিনী ও ভারতীয় জওয়ানদের যৌথ আক্রমণ আরম্ভ হয়েছে। মুক্ত হয়েছে বরিশাল, পটুয়াখালি ও ফরিদপুর; পাক সেনারা পালিয়েছে, ময়নামতী ক্যান্টনমেন্ট থেকে। দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম-কুমিল্লার তৈল শােধনাগারে। ভারতীয় বিমানবাহিনী আঘাত হেনেছে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, যশােহর, সিলেট, রাজশাহী, কুমিল্লা, রংপুর ও আরাে অনেক জায়গায়। ভারতীয় নৌবাহিনী ঘিরে ফেলেছে চট্টগ্রাম বন্দর। স্থলপথেও বহু স্থান দিয়ে ভারতীয় বাহিনী প্রবেশ করেছে বাংলাদেশে। এ ছাড়া মুক্তি বাহিনী হেনে চলেছে তার চরমতম আঘাত। শুরু হয়েছে বাংলাদেশের মুক্তি যুদ্ধের শেষ কয়েক দিন।

বিপ্লবী বাংলাদেশ । ১; ১৬ ৫ ডিসেম্বর ১৯৭১

সূত্র:  গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ -খন্ড  ০৯

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!