বিরুদ্ধ শক্তি মোকাবিলা করতে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলুন- তাজউদ্দিন আহমদ
অর্থমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দিন বলেছেন বাংলার স্বাধীনতাকে নস্যাৎ করার জন্য সকল বিরুদ্ধ শক্তি ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। কাজেই সামগ্রিক জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই এই সব শক্রদের মোকাবিলা করতে হবে। অর্থমন্ত্রী শুক্রবার ইসলামিক একাডেমি মিলনায়তনে স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা কর্মচারী ইউনিয়ন সমূহের প্রতিনিধিদের এক সম্মেলনে প্রধান অতিথির ভাষণ দিচ্ছিলেন। সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক জনাব মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে প্রথম অধিবেশনে ওয়াপদা কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি জনাব আব্দুস সালাম খানও বক্তৃতা করেন। অর্থমন্ত্রী তার বক্তৃতায় বলেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আজ আর্থিক দাবি-দাওয়া তোলা হচ্ছে, বহু ক্ষেত্রে জোর করে দাবি আদায়ের ঘটনাও ঘটতে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু এ কথা সকলের মনে রাখা দরকার যে ঘেরাও করে অথবা বল প্রয়োগ করে দাবি আদায় করা যায়, কিছু কাগজের নোট আদায় করা যেতে পারে কিন্তু তাতে সমস্যার সমাধান হবে। কেননা কাগজের নোট মৌলিক প্রয়োজন মেটাতে পারে না। মৌলিক প্রয়োজন মেটাতে হলে সর্বক্ষেত্রে উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, উৎপাদন বাড়ানো দূরে থাকুক, আগের তুলনায় উৎপাদনের হার অনেক কমে গেছে। বহু কলকারখানার শ্রমিকদের এ বাহিনী সে বাহিনী করে প্যারেড করতে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু তারা কাজ করাচ্ছেন না। শিল্পে উৎপাদন হ্রাস পাওয়ার এটা অন্যতম কারণ। অর্থমন্ত্রী অভিযোগ করে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু সংখ্যক কর্মচারী ৩ হাজার নোটের বেশি গুনতে চান না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ধর্মঘট বেআইনী করে সম্প্রতি সরকার যে আদেশ জারী করেছেন সে সম্পর্কে অর্থমন্ত্রী বলেন, গত ৫ মাসে ধর্মঘটের নামে কোনো কোনো ক্ষেত্রে যে আচরণ করা হয়েছে তাতে বাধ্য হয়েই সরকার এ আদেশ জারী করেছে। ধর্মঘটের অধিকার থাকা দরকার, কিন্তু এ অধিকার যেন সঠিক হারে প্রয়োগ করা হয় সেদিকেও সকলের দৃষ্টি রাখতে হবে।৭
রেফারেন্স: ২ জুন ১৯৭২, দৈনিক বাংলা
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ