চা বাগান এলাকার বিস্তীর্ণ অঞ্চল মুক্ত
অফিসারসহ বহু হানাদার সৈন্য নিহত বিলম্বে প্রাপ্ত খবরে প্রকাশ, পনের/ষােল নভেম্বর রাতে মৃত্যুঞ্জয়ী মুক্তি ফৌজ ছাগলনাল চা বাগান এবং ফ্যাক্টরীতে এক দুঃসাহসিক হামলা চালায়। দখলদার পাকিস্তানী সৈন্যরা চা ফ্যাক্টরীকে তাদের ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহার করছিল। চার ঘণ্টা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর চা বাগান ও ফ্যাক্টরী মুক্তি বাহিনীর পদানত এ যুদ্ধে লেঃ রহিম সহ ৩০ জন কসাই সৈন্য প্রাণ হারায়। এদের কাছ থেকে প্রচুর পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র আমাদের বাহিনী দখল করে। একই রাতে মুক্তি সেনারা ফুলতলা চা ফ্যাক্টরীতে প্রচণ্ড আক্রমণ চালিয়ে হানাদার বাহিনীকে পর্যুদস্ত করে। পাঁচ ঘণ্টা স্থায়ী এই যুদ্ধে ২৫ জন দখলদার সৈন্য ও রাজাকার নিহত, ছয় জন রাজাকার বন্দী এবং প্রচুর পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র মুক্তি বাহিনীর দখলে আসে। | ১৬ই অক্টোবর মুক্তিফৌজ খাজুড়ি ছড়া চা বাগানে অবস্থানরত হানাদার বাহিনীর ওপর তীব্র আক্রমণ চালিয়ে তাদের বাঙ্কার ও চা-কারখানা ধ্বংস করে। ১৯শে অক্টোবর মুক্তি ফৌজ চম্পারে ছড়া চা বাগান আক্রমণ করে হানাদার বাহিনীকে সম্পূর্ণ হটিয়ে দিয়ে বাগান দখল করে নেয়। ১৯/২০শে অক্টোবর রাতে মুক্তি ফৌজ হানাদার বাহিনীর ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহৃত ধালাই চা ফ্যাক্টরী। আক্রমণ করে। উভয় পক্ষই স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রে সজ্জিত ছিল। এই প্রচন্ড যুদ্ধে মুক্তি বাহিনী ফ্যাক্টরী ভবনের কিয়দংশ এবং কয়েকটি বাঙ্কার ধ্বংস করে। ২৮শে অক্টোবর সকাল আটটায় মুক্তিবাহিনীর পাটরেখােলা চা এষ্টেটে অবস্থানরত হানাদার বাহিনীর ওপর বীর বিক্রমে আক্রমণ চালায়। একই সময়ে অপর একদল মুক্তি ফৌজ ধালাই চা-এষ্টেট আক্রমণ করে। এই আক্রমণ পাঞ্জাব রেজিমেন্টের একজন ক্যাপ্টেন সহ ৫০ জন পাক সৈন্য নিহত হয়। মুক্তি ফৌজ তিন জন রাজাকারকে বন্দী এবং ১০টি রাইফেল উদ্ধার করে। এ যুদ্ধে আমাদের একজন দুঃসাহসী মুক্তি সেনা গুরুতররূপে আহত হয়েছেন।
জয়বাংলা (১) ১: ৩০
৩ ডিসেম্বর ১৯৭১
সূত্র: গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ -খন্ড ০৯