মুক্তিবাহিনী কর্তৃক মন্ত্রীর বাড়ি ঘেরাও
আনােয়ার হােসেন প্রদত্ত রংপুর : মুক্তিবাহিনীর বিভিন্নমুখী আক্রমণে পাকবাহিনী ও তার অনুগামীরা রীতিমত শঙ্কিত হয়ে পড়েছে। তাদের এজেন্টরা বাংলাদেশে বিভিন্ন স্থানে ভেল বদলে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কিছু সংখ্যক মহিলা, বৃদ্ধা, যুবতীও এদের সাথে সহায়তা করছেন। সমপ্রতি পাকিস্তানের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী কাজী আবদুল কাদের সাহেবের বাড়ীতে আমাদের বীর মুক্তিযােদ্ধারা এক আকস্মিক আক্রমণের সম্মুখীন হয়। ঘটনার বিবরণে প্রকাশ রংপুর জেলার কইমারী অঞ্চলে কর্মরত মুক্তিবাহিনীর কাছে জনৈক বৃদ্ধা এসে তাদের জানান যে রাজাকারদের ঘাঁটি তাঁবু জানা আছে। মুক্তিবাহিনী ঐ অশীতিপর বৃদ্ধার সঙ্গে রওয়ানা হয়। বৃদ্ধা যাচ্ছিলেন আগে আগে মুক্তিসেনারা পিছে পিছে। হঠাৎ এক মুক্তিসেনা আর্তচীকার করে ঢলে পড়লে আর সবাই লক্ষ্য করলেন মন্ত্রীবরের দ্বিতল বাড়ী থেকে ওদের ওপর গুলি ছোঁড়া হচ্ছে। বৃদ্ধা অদৃশ্য। সাথে সাথে মুক্তিসেনাদের অস্ত্র গর্জে উঠল। ঘণ্টাখানেক গুলি বিনিময় হলাে। আত্মসমর্পন করল চারজন রাজাকার রাইফেলসহ। রাইফেলগুলাে ইংল্যাণ্ডে তৈরী। পরে। মুক্তিসেনারা সেই আত্মঘাতী বৃদ্ধাকে গ্রেফতার করেন। এদের মুক্তিবাহিনীর সদর দফতরে আনা হয়। সর্বশেষ প্রাপ্ত খবরে জানা যায়-লুট, হত্যা, ধর্ষণ ইত্যাদির অভিযােগে ৪ জন রাজাকারকে প্রকাশ্যে গুলি করে প্রমাণ করা হয় যে দালালীর শাস্তি মৃত্যু।
রণাঙ্গন (২) +
২ ডিসেম্বর ১৯৭১
সূত্র: গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ -খন্ড ০৯