সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যান- বঙ্গবন্ধু
জনাব আ. স. ম. আবদুর রব ও জনাব শাজাহান সিরাজের নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে। নির্বাচনে বিজয়ী বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কর্মী ও ছাত্ররা বঙ্গবন্ধুর আর্শিবাদ গ্রহণের জন্য রোববার সন্ধ্যায় গণভবনে তার সাথে দেখা করতে যান। বাসস জানাচ্ছে, বঙ্গবন্ধু গণভবনের পেছনের প্রশস্থ বারান্দায় ছাত্রদের সাথে মিলিত হন। জনাব রব, শাজাহান সিরাজ ও অন্যান্য ছাত্র নেতা বঙ্গবন্ধুকে মাল্য ভূষিত করে এবং জাতির পিতার আর্শিবাদ কামনা করেন। বঙ্গবন্ধু তাদের সাথে বেশ কিছু সময় আলাপ করেন। আলাপের সময় বঙ্গবন্ধু ছাত্রদেরকে স্বাধীনতার জন্য যারা যেভাবে লড়াই করেছে, সেই সহযোগিতা ও মনোবল নিয়ে স্বাধীনতা রক্ষা ও সমাজতন্ত্রের প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার উপদেশ দেন। আলাপের সময় মুহূর্ত মুহূর্ত করোতালি ও স্লোগান উঠতে থাকে। এর পূর্বে ছাত্র নেতা জনাব রব বঙ্গবন্ধুকে আশ্বাস দিয়ে বলেন যে, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশেই তারা দেশে শোষণ মুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম অবিরাম চালিয়ে যাবেন। তিনি ঘোষণা করেন যে, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে সকল অভ্যন্তরীণ ও বহিঃষড়যন্ত্র নস্যাৎ করার জন্য সগ্রাম করে যাবে। বঙ্গবন্ধুর জনপ্রিয়তা হ্রাসই এসব ষড়যন্ত্রের মূল উদ্দেশ্য। তিনি বলেন, আগামি ৫০ বছর বাংলাদেশে বিকল্প কোনো নেতৃত্বের সম্ভাবনা নেই। তিনি বঙ্গবন্ধুকে আশ্বাস দিয়ে বলেন, এদেশের সাধারণ মানুষের জীবনধারার সাথে সামঞ্জস্য রেখেই বাংলাদেশে সমাজতন্ত্র করা হবে। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সহকারী সম্পাদক জনাব মাহবুবুর রহমান তার ভাষণে বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বাস্তবায়িত করার জন্য এই ছাত্র সংগঠন নিরলসভাবে কাজ করে যাবে।
ছাত্রদের স্লোগানের ভাষা ছিল : বঙ্গবন্ধু জিন্দাবাদ, জয়বাংলা, সর্বহারার অপর নাম শেখ মুজিবুর রহমান, শেখ মুজিবের মন্ত্র-সমাজতন্ত্র, পুঁজিপতির গদিতে আগুন জ্বালো, স্বাধীনতা এনেছিসমাজতন্ত্র ও আনবো প্রভৃতি। সভাশেষে ছাত্ররা স্লোগান দিতে দিতে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
শহীদ মিনারে শপথ গ্রহণ : জনাব আবদুর রব ও শাজাহান সিরাজের নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হলের নির্বাচনে বিজয়ী বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কর্মী, নেতা ও ছাত্ররা রোববার কেন্দ্রিয় শহীদ মিনারে শ্রেণি সংগ্রাম ও সমাজতন্ত্রের মাধ্যমে শপথ গ্রহণ করেন।৭৭
রেফারেন্স: ২১ মে ১৯৭২, দৈনিক বাংলা
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ