You dont have javascript enabled! Please enable it!

আফসারের নেতৃত্বে

বাংকার বিধ্বস্ত ৫জন খানসেনা নিহত। ভালুকার কনভেনশন মুসলীম লীগের বিশিষ্ট দালাল, কালােথেকের একনিষ্ঠ সেবক আফতাবউদ্দীন। চৌধুরী (চানমিয়া)র বাড়ীর দেড়শ গজ পশ্চিমে পাক দস্যুরা এক বাংকার তৈরী করে অবস্থান করতেছিল। গত ১১ই নভেম্বর দুর্ধর্ষ গেরিলারা কম্যান্ডার বশীর ও কম্যান্ডার সিরাজের নেতৃত্বে | বাংকারটি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত করে দেন। এর ফলে ৫ জন খানসেনা খতম হয়। প্রসঙ্গত উল্লেখযােগ্য যে  মল্লিকবাড়ী মুক্ত হওয়ার পর মুক্তিযােদ্ধারা ভালুকার খানসেনাদের সংরক্ষিত ঘাটিটি অবরােধ করে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দিক থেকে আক্রমণ অব্যাহত রেখেছেন। গ্রেনেড চার্জ। ১১ই নভেম্বর (নিজস্ব সংবাদদাতা) সাতখামাইর স্টেশনের উত্তরে রেল লাইনে পাহারারত রাজাকারদের উপর মফিজউদ্দিন নামক একজন দুঃসাহসী গেরিলা গ্রেনেড চার্জ করেন। এর ফলে তিনজন রাজাকার নিহত হয় এবং 3not3 রাইফেলের ১০০ রাউন্ড গুলী উদ্ধার করা হয়। ১২ ঘণ্টাব্যাপী প্রচণ্ড সংঘর্ষে ৫ জন খানসেনা ও ৯ জন রেজাকার নিহত ১০ই নভেম্বর (স্টাফ রিপাের্টার)। ভালুকা ধামশুর অঞ্চলে আজ অধিনায়ক আফসারের সাথে ১২ ঘণ্টা। স্থায়ী এক সম্মুখ সংঘর্ষ ঘটে। এ সংঘর্ষে ৫ জন খানসেনা ও ৯ জন রাজাকার খতম হয়। পরে, দস্যুরা মুক্তিযােদ্ধাদের প্রচন্ড আক্রমণে টিকতে না পেরে পালিয়ে যায়। বেঈমানীর শাস্তির এক পর্যায় কান কাটা। গত ১৭ই নভেম্বর ঢাকা জেলার কালিয়াকৈর থানার বিশিষ্ট দালাল, সার্কেল অফিসারকে কান কেটে ছেড়ে দেয়া হয়।

একই দিনে উক্ত এলাকায় আরাে ১২ জন রেজাকারকে কান কেটে বিদায় করা হয়। এক ব্রাশে ১৪ জন নিহত গত ১৩ই নভেম্বর রাজাকারদের একটি শ্লোপ সাতেঙ্গা গ্রামে অগ্নি সংযােগ করতে এলে অধিনায়ক আফসার বিশেষ কৌশল অবলম্বন করে এক আকস্মিক আক্রমণ চালান। তিনি এল, এম, জির এক ব্রাশেই ১৪ জন রাজাকারকে খতম এবং কয়েকজনকে আহত করেন। দু’টি রাইফেল উদ্ধার। ২১শে নভেম্বর (ষ্টাফ রিপাের্টার) আজ ঢাকা টাঙ্গাইল রােডে পশ্চিম পাকিস্তানী পুলিশ ভর্তি একখানা জীপের উপর অতর্কিতে মুক্তিবাহিনীর একটি দল গুলী চালায়। ফলে ৪ জন হানাদার পুলিশকে খতম করা হয় এবং দু’টি রাইফেল উদ্ধার করা হয়। অভিনন্দিত রেজাকার ভালুকা, ২০শে নভেম্বর। নরপিশাচ পাকসেনারা প্রায় যােগাযােগ বিচ্ছিন্ন ভালুকা থানার ঈদগাহ ময়দানে ঈদের নামাজ পড়ার সময়ে নিরাপত্তা বিধানের জন্যে এদলে রাজাকারকে পার্শ্ববর্তী এলাকায় প্রহরায় মােতায়েন করে। এদের মধ্য থেকে একজন (আবদুল হাকিম) তার সঙ্গীদের ফেলে ১টি রাইফেল এবং ৩১ রাউন্ড গুলি সহ পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। অবশ্য অন্যেরা তাকে উদ্দেশ্য করে গুলী ছুঁড়তে থাকলে সেও তার পাল্টা জবাব দেয়।

এভাবে, অবশেষে নিকটস্থ মুক্তিবাহিনীর ঘাটিতে পৌছলে রেজাকারটিকে বিপুল অভিনন্দন জানানাে হয়। জীপ দখল ২৩শে নভেম্বর (ষ্টাফ রিপাের্টার) আজ মুক্তিবাহিনীর বীর কম্যান্ডােরা ঢাকা-টাঙ্গাইল রােডে সখিপুর বাজারের পূর্বপার্শ্বে পাকসেনাদের একটি চলন্ত জীপের উপর আক্রমণ চালায়। ফলে জীপটির যথেষ্ট  ক্ষতিসাধিত হয় ও ৪ জন হানাদার সৈন্য নিহত হয়। তার কয়েক মিনিট পরেই পাকহানাদারদের আর একটি জীপ উক্ত রাস্তা দিয়ে যেতেছিল। মুক্তিবাহিনীর বীর সেনারা আবার গুলী চালায় এবং জীপটি দখল করে এ আক্রমণে একজন মেজর, একজন ক্যান্টিন, একজন নন-কমিশন অফিসার সহ হানাদারদের চার জন সিপাইকেও খতম করা হয় উদ্ধারকৃত জীপ থেকে একটি অটোম্যাটিক গান পাওয়া যায় জীপটি এখন মুক্তাঞ্চলে আছে। চা-বাগানে সংঘর্ষ। গত ১২ই নভেম্বর শ্রীপুর থানা হতে পাক দস্যুদের একটি দল ফুলবাড়িয়ার দিকে আসতে থাকলে। জয়দেবপুর থানার চা-বাগানে মুক্তিযােদ্ধারা হাবিলদার হাকিম সাহেবের নেতৃত্বে প্রতিরােধ দেয় । এখানে এক দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ সংঘঠিত হয়। শেষে টিকতে না পেরে পাক দস্যুরা পিছু হঠতে বাধ্য হয়। ধামশুরে ৫ জন হানাদার নিহত ১৪ই নভেম্বর। ভালুকা থানা হতে ৩০০ জন রেজাকার ও পাক সেনাদের একটি দল ধামশুর এলাকায় লুটতরাজ ও অগ্নিসংযােগ করতে এলে অধিনায়ক আফছার তাঁর সুদক্ষ মুক্তিযােদ্ধাদের নিয়ে সম্মুখ যুদ্ধে লিপ্ত হন। সংঘর্ষে ৫ জন হানাদার সেনা খতম হয়। আমাদের পক্ষে জহিরউদ্দীন নামক একজন দুঃসাহসী যােদ্ধা শাহাদত বরণ করেন।

জাগ্রত বাংলা ১: ৭

২৮ নভেম্বর ১৯৭১

সূত্র:  গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ -খন্ড  ০৯

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!