দেশের উত্তরাঞ্চলে বঙ্গবন্ধুর চার দিন ব্যাপী সফর
দেশের উত্তর অঞ্চলীয় জেলাগুলোতে সফরের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৮ মে সোমবার ঢাকা ত্যাগ করবেন। এ সফরকালে প্রধানমন্ত্রীর সাথে থাকবেন তার রাজনৈতিক সচিব জনাব তোফায়েল আহমেদ। বাসস জানাচ্ছে, ঘোষিত সময় সূচী অনুসারে প্রধানমন্ত্রী ৮ মে সকালে হেলিকপ্টার যোগে বগুড়া পৌছবেন। ঐ দিন অপরাহ্নে তিনি বগুড়ায় এক জনসভায় ভাষণ দেবেন। বগুড়ায় রাতে
অবস্থানের পর বঙ্গবন্ধু ৯ মে সকালে রাজশাহী যাত্রা করবেন। রাজশাহী পেীছার পরপরই প্রধানমন্ত্রী সারদা পুলিশ একাডেমী পরিদর্শন করবেন। অপরাহ্নে তিনি সেখানে এক জনসভায় ভাষণ দেবেন। সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ছাত্রদের সাথে মিলিত হবেন। রাতে তিনি রাজশাহীতে অবস্থান করবেন। পরের দিন ১০ মে সকালে হেলিকপ্টারে বঙ্গবন্ধু পাবনা যাবেন। বিকেলে তিনি পাবনায় এক জনসভায় বক্তৃতা করবেন। রাতে পাবনায় অবস্থানের পর ১১ মে সকালে তিনি রংপুরে গিয়ে পৌছবেন। অপরাহ্নে সেখানে তিনি এক জনসভায় ভাষণ দেবেন। তিনি রংপুরে রাতে অবস্থান করবেন। ১২ মে শুক্রবার বঙ্গবন্ধু ঢাকা ফিরে আসবেন। গ্রাম ও নগরের পার্থক্য দূর করতে সরকার বদ্ধপরিকর ভূমি প্রশাসন, ভূমি সরকার ও ভূমি রাজস্বমী জনাব আব্দুর রব সেরনিয়াৰত বুধবার বলেছেন, যুগ যুগের সামন্তবাদী ও উপনিবেশবাদী শাসনের অভিশাপে গ্রাম ও শহর জীবনের মাঝে রচিত পর্বত প্রমাণ বৈষম্য দূরীকরণে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার সংকল্পবদ্ধ। রাজধানী ঢাকা থেকে প্রায় ২১ মাইল দূরে অবস্থিত ভাওয়াল বদরে আলম কলেজে আয়োজিত এক ছাত্র-শিক্ষক গণসমাবেশে মন্ত্রী জনাব আব্দুর রব সেরনিয়াবত এ কথা বলেন। স্থানীয় স্বায়ত্ত্বশাসন ও সমবায় মন্ত্রী জনাব শামসুল হকও এতে বক্তৃতা দেন। কলেজের অধ্যক্ষ জনাব আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে এর আগে মন্ত্রীমহোদয়কে স্বাগতঃ জানিয়ে বক্তৃতা দেন গণপরিষদ সদস্য জনাব আব্দুল হাকিম মাস্টার, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা জনাব মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ, অবিভাবকদের পক্ষে জনাব হযরত আলী ও কলেজ ছাত্র সংসদের সহ সভাপতি জনাব আসকার আলী। সমাবেশে রাজস্বমন্ত্রী জনাব আব্দুর রব সেরনিয়াবত বলেন, শহর ও পল্লী জীবনের মধ্যে এই ব্যবধান সৃষ্টি হওয়ায় গ্রামের মানুষ আজ নিজেদেরকে দূর্ভাগ্য বলে মনে করে। অথচ এই গ্রামকে উপেক্ষা করে আকাঙ্খিত সমাজতান্ত্রিক বাংলাদেশ কায়েম কোনো দিন সম্ভব হবে না। ভূমি প্রশাসন মন্ত্রী আরো বলেন, সরকার ভূমি অপব্যবহার হতে দেবে না। ভূমির পরিমিত ব্যবহারের ওপরই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তোলা নির্ভর করছে। ভূমি সংস্কার মন্ত্রী সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার অভিশপ্ত ইজারাদারী প্রথা বাতিলের যে বৈপ্লবিক সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে, তাকে কার্যকরী করার জন্য জনগণের সক্রিয় সহযোগীতা কামনা করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণই এখন সরকার। সরকার ও জনগণের মধ্যে আর কোনো ব্যবধান রচনা করতে দেয়া হবে না। সাম্রাজ্যবাদী দালালদের প্ররোচনায় জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে দমিয়ে দেয়া চলবে না। সরকারের কার্যপরিচালনায় গঠনমূলক সমালোচনা বাঞ্ছনীয়। কিন্তু গণতান্ত্রিক অধিকারের অপব্যবহার করে গণমূখী কর্মসূচি বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টিকারীদের মোকাবেলা করা হবে। মন্ত্রী একই আদর্শে অনুপ্রাণিত সকল দলকে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ পুনর্গঠনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
রেফারেন্স: ৩ মে ১৯৭২, দৈনিক বাংলা
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ