You dont have javascript enabled! Please enable it!

পার্টি বিরোধী কার্যকলাপের দায়ে আওয়ামী লীগ হতে ১৬ জন এমসিএ বহিষ্কৃত

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দলীয় শৃঙ্খলা, স্বার্থ এবং নির্দেশাবলীর পরিপন্থী কার্যকলাপের দায়ে গতকাল (বৃহস্পতিবার) ১৬ জন গণ পরিষদ সদস্যকে দল হতে বহিষ্কার করেছেন। বহিষ্কৃত এমসিএ-গণ হচ্ছেন : ১/ মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান (বগুড়া); ২ লে. কমান্ডার এ, কে, এম মাহাবুবুল ইসলাম (পাবনা); ৩/ সৈয়দ হোসেন মনসুর (পাবনা); ৪/ মোহাম্মদ আবদুল গাফফার (খুলনা); ৫/ মোহাম্মদ সাইদ (খুলনা); ৬/ আবুল কালাম ফয়জুল হক (বরিশাল); ৭/ মোশারফ হোসেন শাহাজাহান (বরিশাল); ৮/ এ, বি এম নুরুল ইসলাম (ফরিদপুর); ৯/ আমজাদ হোসেন খান (ফরিদপুর); ১০/ মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম (ঢাকা); ১১ জহিরুদ্দীন (ঢাকা); ১২/ মোহাম্মদ ওবায়দুল্লাহ মজুমদার (নোয়াখালী); ১৩/ শামসুল হক (চট্টগ্রাম); ১৪/ আখতারুজ্জামান (ময়মনসিংহ); ১৫ সৈয়দ বদরুজ্জামান (এসবি জামান) (ময়মনসিংহ); ১৬/ ড. আবুল হাশিম (সিলেট); দলীয় সভাপতির এই নির্দেশ অবিলম্বে কার্যকরী হবে। আজ আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ কাউন্সিল অধিবেশন শুরু
জাতির জনক আওয়ামী লীগ প্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজ ৩ টায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্বাধীনতা উত্তরকালের প্রথম কাউন্সিল অধিবেশনে ভাষণ দান করবেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কর্তৃক সমাজতান্ত্রিক নীতি ঘোষণা ও নতুন দৃষ্টিভঙ্গীর ভিত্তিতে পার্টিকে পূণর্গঠণের তাগিদেই এ কাউন্সিল অধিবেশন আহ্বান করা হয়েছে। কাউন্সিল অধিবেশনের প্রস্তুতি কার্য ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। সার্কিট হাউজ রোডস্থ আওয়ামী লীগের নতুন অফিস প্রাঙ্গণে একটি প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে। ১৪ শত কাউন্সিলর এই সম্মেলনে যোগদান করবেন বলে আশা করছেন। ইতোমধ্যেই কাউন্সিলরগণ ঢাকা এসে পৌঁছেছেন। আজ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দলীয় প্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভাষণ দান করবেন। ১৯৭০ সালের জুন মাসে সাধারণ নির্বাচনের পূর্বে আওয়ামী লীগের সর্বশেষ কাউন্সিল সভা অনুষ্ঠিত হয়। ৬ দফা দাবির ভিত্তিতে আওয়ামী লীগ তৎকালে এদেশব্যাপী গণ-আন্দোলন গড়ে তোলে এবং নির্বাচনে ঐতিহাসিক সাফল্য অর্জন করে। স্বাধীনতা লাভের পর সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির কর্মসূচি অনুযায়ী দেশ পুনর্গঠন করার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। সেই সঙ্গে আওয়ামী লীগের অতীত দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন ও নতুন দৃষ্টিকোণ হতে পার্টি পুনর্গঠিত করারও প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। এই উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগ পুনর্গঠন ও নতুন নেতা নির্বাচন করলে আওয়ামী লীগের শুভার্থীরা সনুষ্ট হবেন বলে ধারণা করা যাচ্ছে। দেশের প্রয়োজনের তাগিদে আওয়ামী লীগের গণতন্ত্র সংশোধন ও ঘোষণা পত্র নতুনভাবে প্রণয়ন করা আবশ্যক হয়ে পড়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি ও জাতীয়করণ সংক্রান্ত ঘোষণার মাধ্যমে যে বলিষ্ঠ নীতি ঘোষণা করেছেন, তাকে কার্যকরী করার জন্য উক্ত নীতির ভিত্তিতে দলকে শক্তিশালী করে তোলা প্রয়োজন। দলের শক্তি ও নতুন জাতি গঠনের প্রেরণার উৎস হিসেবে অনেকেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে দলীয় প্রধান হিসেবে রাখার একান্ত প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছেন। আওয়ামী লীগের এই ধরনের চিন্তাশীল ব্যক্তিগণ পার্টির গঠণতন্ত্র সংশোধন করে শেখ মুজিবুর রহমানকে দলীয় প্রধান থাকার জন্য দলীয় কর্মী ও কাউন্সিলারদের চাপে শেষ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হয়ত তার দলীয় প্রধানের পদত্যাগ করার পরিকল্পনা ত্যাগ করতে বাধ্য হবেন। সেই ক্ষেত্রে সম্ভবতঃ সাহায্য ও পুনর্বাসন মন্ত্রী জনাব কামারুজ্জামানকে মন্ত্রীত্ব ত্যাগ করে দলীয় সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে। দলের অন্যান্য পদে নতুন ও পুরাতন নেতার সমন্বয় ঘটবে বলে শোনা যাচ্ছে।

রেফারেন্স: ৬ এপ্রিল ১৯৭২, ইত্তেফাক
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!