You dont have javascript enabled! Please enable it! 1969.02.14 | শেখ মুজিবকে মুক্তি না দিয়া প্রেসিডেন্ট নেতাদের দেশপ্রেমে সন্দেহ প্রকাশ করিতেছেন : কাউন্সিল মুসলিম লীগ দলীয় পরিষদ সদস্য আবুল কাশেমের বিবৃতি | সংবাদ - সংগ্রামের নোটবুক

সংবাদ
১৪ই ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯
শেখ মুজিবকে মুক্তি না দিয়া প্রেসিডেন্ট নেতাদের দেশপ্রেমে সন্দেহ প্রকাশ করিতেছেন :
কাউন্সিল মুসলিম লীগ দলীয় পরিষদ সদস্য আবুল কাশেমের বিবৃতি

জাতীয় পরিষদ কাউন্সিল মুসলিম লীগ সদস্য জনাব আবুল কাশেম সংবাদপত্রে নিম্নোক্ত বিবৃতি দিয়াছেন:
সকল রাজনৈতিক প্রশ্ন তথা রাজনৈতিক সংকট নিরসনে রাজনৈতিক দলসমূহের সহিত বৈঠকের ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান যে সদিচ্ছা ও আগ্রহ প্রকাশ করিয়াছেন এবং দেশ হইতে জরুরী আইন প্রত্যাহার ও সকল রাজবন্দীকে মুক্তিদানের বিষয়ে তিনি যে ইচ্ছা প্রকাশ করিয়াছেন সেজন্য প্রেসিডেন্ট আইয়ুবের প্রশংসা করিতে গিয়া একটি বিষয়ে আমি মর্মাহত হইয়াছি যে, সামরিক বাহিনীর কিছুসংখ্যক ব্যক্তির সহিত শেখ মুজিবর রহমান জড়িত থাকার জন্য তাহাকে মুক্তি দানের প্রশ্নে প্রেসিডেন্ট অক্ষমতা জ্ঞাপন করিয়াছেন। বিবৃতিতে জনাব আবুল কাশেম বলেন, এখানে স্মরণ করা যাইতে পারে যে, গণতান্ত্রিক সংগ্রাম পরিষদের আট দফা দাবীতে শেখ মুজিবর রহমান সহ সকল রাজবন্দীর মুক্তির দাবী অন্তর্ভূক্ত রহিয়াছে। গণতান্ত্রিক সংগ্রাম পরিষদের এই কর্মসূচী অনুযায়ী গণতান্ত্রিক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক শেখ মুজিবের সহিত দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে আলোচনার জন্য তাঁহার (শেখ মুজিবের) সহিত সাক্ষাতের জন্য সরকারের নিকট অনুমতি চাহিয়াছেন।
তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক সংগ্রাম পরিষদের কনভেনারকে সাক্ষাতের অনুমতিদানের পূর্বে সরকার নিশ্চয়ই শেখ মুজিবুর রহমানের প্রশ্নাতীত দেশপ্রেম সম্পর্কে নিঃসন্দেহ হইয়াছেন। দেশের সব কয়টি বিরোধীদল কর্তৃক শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রেম ও নেতৃত্বের স্বীকৃতি সত্ত্বেও আলোচনার জন্য শেখ মুজিবুর রহমানকে মুক্তিদানে প্রেসিডেন্টের অস্বীকৃতির অর্থ দেশের জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী সকল রাজনৈতিক দলের দেশ প্রেমের প্রতি সন্দেহ প্রকাশ করা।
একথা আমাদের মনে রাখিতে হইবে যে, শেখ মুজিবর রহমানের দলের অন্যকোন নেতার মুখ দিয়া শেখ মুজিবুর রহমানের মতামত প্রকাশ অপেক্ষা আলোচনায় শেখ মুজিবুর রহমানের উপস্থিতি একান্ত প্রয়োজন এবং তাঁহার উপস্থিতি অনেক ফলপ্রসূ ও কার্যকরী হইবে।
জনাব আবুল কাশেম আরও বলেন যে, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ন্যায় নেতাকে উপেক্ষা করা প্রেসিডেন্টের উচিত হবে না। ডাক নেতৃবৃন্দের সহিত অথবা আলাদাভাবে আলোচনায় যাবার জন্য মওলানা ভাসানীর প্রতি প্রেসিডেন্ট আইয়ুবের আহ্বান জানানো উচিত।
আমি প্রেসিডেন্ট আইয়ুবকে ইহা বিশ্বাস করার জন্য আহ্বান জানাইতেছি যে, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ও শেখ মুজিবুর রহমান ছাড়া পূর্ব পাকিস্তানে রাজনৈতিক সমস্যাসমূহের কোন শান্তিপূর্ণ সমাধান আদৌ সম্ভব নহে।

সুত্র: সংবাদপত্রে বঙ্গবন্ধু: পঞ্চম খণ্ড ॥ ষাটের দশক ॥ চতুর্থ পর্ব ॥ ১৯৬৯