You dont have javascript enabled! Please enable it!

৪৮ ঘণ্টাব্যাপী প্রচণ্ড যুদ্ধে ৫৭ জন জানােয়ার হত্যা

(রণাঙ্গন প্রতিনিধি) বাংলাদেশের মৃত্যুঞ্জয়ী মুক্তি যােদ্ধারা ৯ই এবং ১০ই নবেম্বর নােয়াখালী জেলার পরশুরাম থানায় পাকিস্তানী বাহিনীর ওপর প্রচণ্ড আক্রমণ চালিয়ে সম্পূর্ণ থানাকে দখলমুক্ত করেছে। এই প্রচণ্ড যুদ্ধ ৪৮ ঘণ্টা স্থায়ী হয়। মুক্তি বাহিনীর প্রচণ্ড আক্রমণে রণাঙ্গনেই ৫৭ জন হানাদার সৈন্য খতম হয়। মুক্তি যােদ্ধাদের বলিষ্ঠ কবজীর মারে ভীত সন্ত্রস্ত ৮৪ জন পলায়ন পর পাকিস্তানী সৈন্যকে মুক্তি যােদ্ধারা পাকড়াও করে এবং দিশেহারা ২১ জন খান সেনা এবং ২০ জন রাজাকার আত্মসমর্পণ করে। হায়েনা খান সেনাদের এই বধ্যভূমি থেকে আমাদের অপরাজেয় মুক্তি বাহিনী ২২৫টি স্বয়ংক্রিয় চীনা রাইফেল, ১৯ বাক্স চীনা রাইফেল (৩০৩), ১৮টি হাল্কা মেশিনগান, ৩৬টি ৩ ইঞ্চি মর্টার, ২৬টি ২ ইঞ্চি মর্টার এবং ১১ বেল্ট হাল্কা মেশিনগানের গুলি পেয়েছে। 

পরশুরাম থানা দখলের পর যখন মুক্তিবাহিনী এলাকায় নিজেদের অধিকার সুপ্রতিষ্ঠিত করার কাজে ব্যস্ত ছিল তখন চারটি হানাদার জঙ্গী বিমান আমাদের অবস্থানের ওপর আক্রমণ চালায় আমাদের অসম সাহসী মুক্তিযােদ্ধারা বীরের মতাে হানাদারদের বিমান আক্রমণ প্রতিহত করে। জনাব সিরাজ নামক এক দুঃসাহসী মুক্তি যােদ্ধা নিজের জীবন বিপন্ন করে মেশিনগানের সাহায্যে একটি বিমানকে ঘায়েল করে ভূপাতিত করার পর অন্য বিমানগুলি পালিয়ে যায়। এই অসম সাহসী মুক্তিযােদ্ধা বিমানটি ভূপাতিত করতে গিয়ে বীরের মৃত্যু বরণ করেন। তাঁকে পুরাে সামরিক মর্যাদার সঙ্গে সমাহিত করা হয়েছে মুক্ত জন্মভূমির পবিত্র মাটীতে।

জয়বাংলা (১) ১: ২৯

২৬ নভেম্বর ১৯৭১

সূত্র:  গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ -খন্ড  ০৯

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!