কুমিল্লা জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চল মুক্তিবাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন
(নিজস্ব সংবাদদাতা)। কুমিল্লা ২২শে নভেম্বর-কুমিল্লার গ্রামাঞ্চলে ৪০ বর্গ কিলােমিটার জায়গা গত এক সপ্তাহ যাবৎ মুক্তিবাহিনীর দখলে আছে। সে জায়গায় এখন তাঁরা আভ্যন্তরীণ যােগাযােগ ব্যবস্থা গড়ে তােলবার চেষ্টা করছেন। আখাউড়া ও কুমিল্লার মধ্যবর্তী এই অঞ্চলটিতে ৩০ খানা গ্রাম রয়েছে। কসবা, মন্দভাগ সালদা এবং নারায়ণপুর নামক ৪টি রেলওয়ে স্টেশনও এই এলাকার অন্তর্ভুক্ত। এই গুরুত্বপূর্ণ রেলওয়ে স্টেশন কয়টি মুক্তিবাহিনীর দখলে চলে যাওয়ায় পাকসেনারা খুবই বেকায়দায় পড়েছে। কারণ বাংলাদেশের উত্তর সীমান্তের সঙ্গে দক্ষিণ সীমান্তের যােগাযােগ রক্ষার জন্য এই স্টেশন কয়টি একান্তই অপরিহার্য। কসবা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সংযােগ রক্ষাকারী ভিটাকুট বাের্ডের রাস্তাটিরও বেশ কিছুটা অংশ মুক্তিবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সালদা নদীর উপরের সেতুটিও গেরিলারা উড়িয়ে দিয়েছিলেন। গত ১২ই নভেম্বর খুব ভােরবেলা সালদা নদী সাতড়িয়ে পার হয়ে গেরিলারা খানসেনাদের অবস্থান ঘাটির উপর এক অতর্কিত প্রচণ্ড আক্রমণ চালাল। পনেরাে ঘণ্টা ধরে ভয়ঙ্কর যুদ্ধ চলে। এই সংঘর্ষে ১০০ জন খানসেনা নিহত হয় এবং ৫০ জন বন্দী হয়। পরদিন ১৩ই নভেম্বর সকালবেলা সম্পূর্ণ সালদা এলাকা মুক্তিবাহিনীর দখলে এসে যায় । এই যুদ্ধে ৩ জন মুক্তিফৌজ মারা যান এবং কয়েকজন আহত হয়।
সাপ্তাহিক বাংলা ১: ৬
২৫ নভেম্বর ১৯৭১
সূত্র: গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ -খন্ড ০৯