You dont have javascript enabled! Please enable it! মুক্তিবাহিনী কর্তৃক যশােরে কেন্টনমেন্ট আক্রমণ ও শহর ঘেরাও - সংগ্রামের নোটবুক

মুক্তিবাহিনী কর্তৃক যশােরে কেন্টনমেন্ট আক্রমণ ও শহর ঘেরাও

যশাের ২৪শে নভেম্বর মুক্তিবাহিনী গত ২৪ শে নভেম্বর পাক পশুদের শক্তঘাঁটি। যশাের জেলার উপর প্রচণ্ড আক্রমণ চালিয়ে খান সেনাদের বিষ দাঁত উপড়ে ফেলতে শুরু করলো।

দিশেহারা পাক সৈন্যরা বিমান ও ট্যাংক নিয়ে পাল্টা আক্রমণ চালায়। এই আক্রমণে পাক বাহিনী ভারতীয় সীমান্তের কাছাকাছি পাক চৌকি থেকে আকাশ ও স্থল পথে হঠাৎ করে ভারত ভূখণ্ডে আক্রমণ চালায়।

সঙ্গে সঙ্গে ভারতীয় বাহিনী পাক আক্রমণ প্রতিহত করে এবং তিনটি পাক স্যার জেট বিমান ভূপাতিত ও এক স্কোয়ার্ডন ট্যাঙ্ক ধ্বংস করে। ভূপাতিত বিমানের পাইলটদ্বয়কেও ভারতভূখণ্ডে গ্রেফতার করা হয়।

এইদিন মুক্তিবাহিনী পাকবাহিনীর কয়েকটি ট্যাঙ্ক ধ্বংস এবং পাঁচটি ট্যাঙ্ক দখল করেন। এখনকার সংঘর্ষ পাকবাহিনীর প্রায় ২৫০ জন সৈন্য নিহত ও বহু আহত হয়। মুক্তিবাহিনী এখানে বহু অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করেন।

মুক্তিবাহিনীর সাঁড়াশী আক্রমণের মুখে পাক পশুরা যশাের শহর ও কেন্টনম্যান্টে আশ্রয় নেয়। মুক্তিবাহিনী এখন যশাের শহরের চারিদিকে ঘিরে ফেলে কেন্টনম্যান্টের উপর আক্রমণ চালাচ্ছেন।

যশাের বিমান বন্দর সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। পলায়ন পর পাক বাহিনী প্রয়ােজনীয় জিনিষপত্র ও টাকা পয়সা সরিয়ে ফেল্‌ছে বলে জানা গেছে। মুক্তিবাহিনী গােলাবর্ষণ করে ঈশ্বরদী বিমানঘাঁটির রাডার যন্ত্রটিও ধ্বংস করে দিয়েছেন।

আমার দেশ ১: ১৩৪

২৫ নভেম্বর ১৯৭১

সূত্র:  গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ -খন্ড  ০৯

মুক্তিবাহিনীতে ফ্রীডম ফাইটার সাম্প্রদায়িক পাকিস্তানপন্থী মুজিববাহিনী শীর্ষ নেতাদের মাঝে রাজনৈতিক কলহ

 

পাক জঙ্গীশাহীর উচিত শিক্ষা

ইয়াহিয়ার

তিনখানি স্যাবার জেট ও তেরখানি ট্যাঙ্ক ধ্বংস নরপশু ইয়াহিয়ার জল্লাদ বাহিনী বাংলার বীর মুক্তিযােদ্ধাদের ব্যাপক আক্রমণে সন্ত্রস্ত ও দিশেহারা হয়ে পড়েছে।

যে ভাবে দিনের পর দিন পাক হানাদার বাহিনী কোণঠাসা হয়ে পড়েছে তাতে বাংলাদেশের পূর্ণ স্বাধীনতা আসতে আর বেশি বিলম্ব নেই। ইয়াহিয়া অনন্যোপায় হয়ে ভারতের সাথে যুদ্ধ বাধাবার জন্য দিনের পর দিন প্ররােচনা দিয়ে আসতেছিল।

ভারত সহিষ্ণুতার সহিত কোন প্ররােচনারই কর্ণপাত করে নাই। গত ২২শে নভেম্বর চারটে পাকিস্তানী স্যার জেট বিমান কলকাতার উত্তর পূর্বে বয়ড়া নামক ভারতীয় সীমানা এলাকার অভ্যন্তরে প্রায় পাঁচ কিলােমিটার অনুপ্রবেশ করে।

ভারতের নিজস্ব তৈরী চারখানা ন্যাট বিমান নিয়ে ভারতীয় বৈমানিকরা পাক বিমান গুলিকে বাধা দান করে। তিন খানা অনুপ্রবেশকারী পাক বিমানকে ভুপাতিত করা হয় ।

এবং অপর একখানা কোনক্রমে পালিয়ে যায় এছাড়া তিন জন পাইলটকে বন্দী করা হয়। ঐ একই দিনে দিশেহারা পাক আক্রমণকারীরা পশ্চিমবাংলার যশাের সীমান্তের বয়ড়ার কাছে ট্যাঙ্ক ও কামান নিয়ে বিপদের সূচনা করে ভারত সীমান্তে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে।

পাকিস্তানের এই হীন অভিযান প্রতিহত করার জন্য ভারতীয় বাহিনীকে ট্যাঙ্ক ব্যবহার করতে বাধ্য করা হয়। ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী বীরত্বের সাথে এই আক্রমণ প্রতিরােধ করেন। এই সংঘর্ষে ১৩টি পাক শাফী ট্যাঙ্ক ধ্বংস হয়েছে।

ভারতের আত্মরক্ষার ব্যবহৃত ট্যাঙ্ক ও বিমানের কোনরূপ ক্ষতি হয়নি। পাক জল্লাদ বাহিনীকে ভারত সমুচিত শিক্ষা দিয়েছেন বলে আমরা ভারতীয় সেনাবাহিনীকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।

বিপ্লবী বাংলাদেশ ১; ১৫

২৮ নভেম্বর ১৯৭১

সূত্র:  গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ -খন্ড  ০৯