অবরুদ্ধ যশাের ক্যান্টনমেন্ট
বাংলাদেশ সরকারের জনৈক মুখপাত্র বলেছেন যে, যশাের ক্যান্টনমেন্ট দখল করা আর খুব বেশী। শ্রমসাধ্য ব্যাপার নয়। মুক্তিবাহিনী সূত্রে জানা গেছে যে, সাতক্ষীরা মহকুমাকে মুক্ত করার পর মুক্তিফৌজ এখন যশাের ক্যান্টনমেন্ট চতুদিক হতে অবরুদ্ধ করে ফেলেন। গত তিনদিন যাবৎ মুক্তিফৌজের অসমসাহসী যােদ্ধারা যশাের ক্যান্টমেন্টের উপর অবিরাম গােলা বর্ষণ করে চলেছেন। তাঁদের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে চাঁচড়া ও ঝিনাইদহের সামরিক উপকেন্দ্র দুটি। পাকদস্যুদের রসদ বন্ধ। কুষ্টিয়া খুলনা ও উত্তরবঙ্গের সাথে খুলনার সকল যােগাযােগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। মুক্তিবাহিনী যশাের বিমান বন্দরের রানওয়ে ও অবজারভেশন টাওয়ার গােলার আঘাতে এমনভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করে দিয়েছেন যে, পি, আই, এর কোন বেসামরিক বিমান ওখানে আর নামতে পারছে না। আজ মুক্তিবাহিনী ঝিকরগাছার মত গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলটি দখল করে নিয়ে যশাের শহরের মাত্র ৪ মাইল দূরে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করে পাকিস্তানীদের উপর আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছেন। খবর পাওয়া গেছে, যশাের ক্যান্টনমেন্ট ও শহর হতে সেনাবাহিনীর লােকদের এবং দালালদের। টাকা-পয়সা সােনাদানা পাচার শুরু হয়েছে। মুক্তিফৌজের দুর্বার আক্রমণের মুখে যে কোন মুহুর্তে যশোর ক্যান্টমেন্টের পতন হতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
অভিযান।১: ২
২৫ নভেম্বর ১৯৭১
সূত্র: গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ -খন্ড ০৯