বন্দীনেতাদের মুক্তি দাবী
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ মুজিবর রহমান, খােন্দকার মােশতাক আহমদ, জনাব তাজুদ্দিন আহমদ প্রমুখের গ্রেফতারের সংবাদ গতকাল সকালে শহরে দ্রুত ছড়াইয়া পড়ে এবং শহরবাসীর মনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। কালােব্যাজ পরিধান, বিক্ষোভ মিছিল, পথসভা এবং বিবৃতির মাধ্যমে সকল শ্রেণীর নাগরিক ও শ্রমিক তাহাদের ক্ষুব্ধমনােভাব ব্যক্ত করেন।
আদমজী মিলে শ্রমিক বিক্ষোভ
নেতৃবৃন্দের গ্রেফতারের সংবাদ পাইয়া আদমজী জুট মিলের শ্রমিকরা গতকাল কালােব্যাজ ধারণ করে এবং সকাল ১১টা, বিকাল ৪টা, রাত ৯টা এবং রাত ২টায় কাজে যাওয়ার এবং কাজ শেষে ফিরিয়া আসার পথে মিছিল করিয়া তুমুল বিক্ষোভ প্রদর্শন করে এবং শেখ মুজিবসহ বন্দী সকল নেতার মুক্তির দাবী জানাইয়া শ্লোগান দেয়। রাত্রে প্রাপ্ত সংবাদে জানা যায়, মিলের শ্রমিকরা নেতৃবৃন্দের মুক্তির দাবীতে মিল এলাকায় এক দীর্ঘ শােভাযাত্রা বাহির করিয়া বিক্ষোভ করিয়া ফিরিতে থাকে। নেতৃবৃন্দের মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত তাহারা এইভাবে বিক্ষোভ চালাইয়া। যাওয়ার এমনকি প্রয়ােজন হইলে অন্যবধি কর্মসূচী গ্রহণেরও সংকল্প ঘােষণা করেন।
তেজগাঁও ও ঢাকায় মিছিল
গতকাল বিকালে শেখ মুজিবর ও অন্যান্য আওয়ামী লীগ নেতার মুক্তির দাবীতে তেজগাঁও শিল্প এলাকার শ্রমিকরাও বিক্ষোভ প্রদর্শন ও মিছিল বাহির করে। তাহারা ধৃত নেতাদের আশু মুক্তির দাবী জানায়। বিকাল সাড়ে ৫টায় আওয়ামী লীগের উদ্যোগে শেখ মুজিব ও অন্যান্য নেতার গ্রেফতারের প্রতিবাদে শহরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়। বিক্ষোভকারী জনতা নেতৃবৃন্দের মুক্তি দাবী সম্বলিত প্লকার্ডসহ মিছিল করিয়া বায়তুল মােকাররম হইতে সদরঘাট ও চকবাজার হইয়া শহীদ সােহরাওয়ার্দীর মাজারে গিয়া ছত্রভঙ্গ হয়। পথিমধ্যে নবাবপুর, বাহাদুর শাহ পার্ক, সদরঘাট ও চকবাজারে পথসভা করিয়া বক্তৃতা করা হয়। বিক্ষোভকারীরা ২৪ ঘন্টার মধ্যে বন্দীনেতাদের মুক্তি চাই, ৬-দফা কায়েম কর, নায্যমূল্যে খাদ্য চাই প্রভৃতি ধ্বনি দেয়।
দৈনিক ইত্তেফাক, ১০ মে ১৯৬৬