You dont have javascript enabled! Please enable it!

মওলানা মওদুদী বলেন-

(স্টাফ রিপাের্টার)
পাকিস্তান জামাতে ইসলামীর সভাপতি মওলানা আবুল আলা মওদুদী গতকল্য (বুধবার) ঢাকায় বলেন যে, দেশের অখন্ডতা রক্ষার নিশ্চয়তা বিধান করিয়া প্রদেশসমূহকে যতখানি স্বায়ত্তশাসন দেওয়া সম্ভব, তিনি ততখানি স্বায়ত্তশাসনই প্রদেশসমূহকে দেওয়ার পক্ষপাতী।
গতকল্য করাচী হইতে ঢাকা আসিয়া মওলানা মওদুদী বিমান বন্দরে সাংবাদিকদের বলেন যে, শেখ মুজিবর রহমান প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসনের জন্য যে ৬-দফা সুপারিশ করিয়াছেন, তাহা হইতে আর একপদ’ আগাইলেই দেশের অখণ্ডত্ব নষ্ট হইবে এবং এই জন্যই তিনি শেখ মুজিবরের ৬-দফার ঘাের বিরােধী। এই পর্যায়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন যে, তিনি যে ধরনের প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসনে বিশ্বাস করেন, তাহাতে কি কি বিষয় কেন্দ্রের হাতে , আর কি কি প্রদেশের হাতে থাকিবে, সেই সম্পর্কে তিনি এই মুহূর্তে চূড়ান্ত পর্যায়ে কিছু বলিতে পারেন না। তবে তিনি বলেন যে, ১৯৫৬ সালের শাসনতন্ত্র ‘ভালই কাজ করিতেছিল এবং প্রয়ােজনবােধে সেই শাসনতন্ত্রের সংস্কার সাধনও সম্ভব।
মওলানা মওদুদী বিরােধী দলীয় শিবিরে ঐক্যসাধনের উপর বিশেষ গুরুত্ব আরােপ বরেন। এই ঐক্যসাধনের শর্ত হিসাবে তিনি বলেন যে, বিরােধী দলীয় শিবিরকে ঐক্যবদ্ধভাবে তাসখেন্দ ঘােষণাপত্রের বিরােধিতা করিতে হইবে এবং এই সুসংহত বিরােধিতার মধ্যদিয়াই বিরােধী দলীয় শিবিরে ঐক্য সাধন সম্ভব। বিরােধী শিবিরে তপাট প্রভাবশালী মহল তাসখেন্দ ঘােষণাপত্রের বিরােধীতা করিতে প্রস্তুত না থাকা সত্ত্বেও কিভাবে বিরােধী দলীয় শিবিরে ঐক্য সাধন সম্ভব, জানিতে চাহিলে মওলানা মওদুদী বলেন যে, উক্ত মহলটি তাসখেন্দ ঘােষণার আসল গােমর’ ধরিতে পারে নাই বলিয়াই তাসখেন্দ ঘােষণার বিরােধিতা করিতে তাহারা প্রস্তুত নয়।
তিনি বলেন যে, এই মহলকে তাসখন্দ ঘােষণার ‘আসল গােমর’ সমঝাইবার জন্য তিনি কোশেশ করিবেন।

পাক-ভারতের যুদ্ধ সম্পর্কে মওলানা মওদুদী বলেন যে, তিনি মনে করেন, এ যুদ্ধ আমাদের উপর চাপাইয়া দেওয়া হইয়াছে এবং বিরােধীদলীয় যেসব নেতা এই মতে বিশ্বাসী নন, তিনি তাঁহাদের মতামতের সঙ্গে একমত নন। তিনি সাংবাদিকদের জানান যে, তাসখেন্দ ঘােষণার বিরুদ্ধে জনমত গঠনের জন্য শীঘ্রই চৌধুরী মােহাম্মদ আলী , খাজা রফিক প্রমুখ পশ্চিম পাকিস্তানী নেতা পূর্ব পাকিস্তান সফরে আসিবেন।
মওলানা মওদুদী আগামী ২৭শে ফেব্রুয়ারি ঢাকায় এক জনসভায় বক্তৃতা করিবেন। তিনি পূর্ব পাকিস্তানে ১২ দিন অবস্থান করিবেন। এই অবস্থানকালে তিনি ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা এবং দিনাজপুরে তাহার দলীয় সম্মেলনে বক্তৃতা করিবেন। ঐসব স্থানে তিনি জনসভায়ও বক্তৃতা করিবেন।

দৈনিক ইত্তেফাক, ১৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৬

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!