You dont have javascript enabled! Please enable it!

ভোট অভিযান
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কে জয় লাভ করবেন? নির্বাচনী প্রচারণার এ পর্যায়ে যখন ভোটাররা মোটামুটি সিন্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন, এই প্রশ্ন অবান্তর। প্রার্থী মনোনয়ন চূড়ান্ত হবার সঙ্গে সঙ্গে সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে। বাকী তার বাস্তবায়ন।
নির্বাচনী কলা-কৌশলটাই এমন, পূর্বাহ্নে তার পূর্বাভাষ সম্ভব না। উন্নত দেশগুলোতে নির্বাচনী ফলাফলের পূর্বাভাষের প্রচুর ব্যবস্থা রয়েছে, কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গেছে তা সঠিক নয়। নির্বাচনী প্রচারণায় শক্তির সমাবেশ ঘটে, জনসভাগুলোতে সৃষ্টি হয় উত্তাল তরঙ্গ। কিন্তু তবু নিশ্চিতভাবে কেউ কিছু বলতে পারেন না। সেখানে আশাবাদী হওয়া ছাড়া গত্যন্তর থাকে না, উপায় থাকে না জনগণের খেয়ালী মনোভাবের উপর নির্ভর করা ভিন্ন।
জনগণের মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ ঘটলে ফলাফল অনুমান করা যায়—যেমনটি ঘটেছে এদেশে, ১৯৫৪ কিংবা ১৯৭০-এর নির্বাচনে। আবার প্রত্যেকটি নির্বাচনেই এক একটি ইস্যু মুখ্য হয়ে দাঁড়ায়—জয় পরাজয় নির্ধারণকারী হিসেবে। বাংলাদেশের নির্বাচন গুলোতে অতীতে কখনোই তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। সম্ভবতঃ এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না।
সাংগঠনিক এবং রাজনৈতিকভাবে বর্তমান নির্বাচনে মূল প্রার্থী দুজন। জাতীয়তাবাদী ফ্রন্টের জেনারেল জিয়া এবং ঐক্যজোটে জেনারেল (অবঃ) আতাউল গনি ওসমানী। অন্যান্য প্রার্থীদের মধ্যে একমাত্র অবুল বাশার ব্যতীত অন্য কেউ রাজনৈতিক পরিচয়ে অবতীর্ণ হননি। দুটি প্রধাণ স্রোতধারার বাইরে, তৃতীয় যে স্রোতধারার কথা বলা হচ্ছে, বাস্তবে তা হয়নি।
দীর্ঘদিন পর রাজনৈতিক কর্মকান্ড শুরু হয়েছে। এবং রাজনৈতিক কর্মকান্ডের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবার সঙ্গে সঙ্গে ভোটারদের মুখোমুখি হতে হয়েছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সঙ্গে।
সমগ্র বাংলাদেশ একটিমাত্র নির্বাচনী এলাকা। সে ভিত্তিতেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে নির্বাচন। তাই ক্ষমতাসীন এবং বিরোধী উভয়কেই পরিচয় দিতে হচ্ছে ব্যাপক সাংগঠনিক ক্ষমতার। ১৯৭৫ সালে একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েমের ফলে সাংগঠনিক ভাবে রাজনৈতিক দলগুলো বিপর্যস্ত হয়ে গেলও সচেতন রাজনৈতিক কর্মীর অভাব ঘটেনি(অস্পষ্ট)
কিন্তু গত দুবছরে এদেশের রাজনীতিতে ব্যাপক মেরুকরণ হয়েছে। দলের ভাঙা-গড়া এবং নতুন দলের বিকাশ সে প্রক্রিয়ার বহিঃপ্রকাশ। আবার এই মেরুকরণের প্রক্রিয়ায় নির্বাচনের পর পরই জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট পরিণত হবে একটিমাত্র রাজনৈতিক দলে। আপাতঃ দৃষ্টিতে এই ফ্রন্টগুলোতে ভিন্নমুখী শক্তির সম্মিলন ঘটলেও, গণতান্ত্রিক ঐক্য জোটের একটি দলে পরিণত হবার সম্ভাবনা নেই। বিগত দিনে অজিত রাজনৈতিক প্রভাব প্রতিপত্তির সুযোগে আওয়ামী লীগ, মোজাফফর আহমদের ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি এবং মণি সিংহের অধুনালুপ্ত কমিউনিষ্ট পার্টি বাকশালী গলাবাজি করলেও, নির্বাচন তাদের মুখ্য ইস্যু নয়। রাজনৈতিকভাবে তাদের যে পুনর্বাসন প্রয়োজন ছিল, তা তারা অর্জন করেছেন। তাই আশ্চর্য হওয়ার কিছু থাকবে না যদি শেষ মূহুর্তে তারা নির্বাচনী চমক সৃষ্টির জন্য নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। সেক্ষেত্রে যুক্তি হবে নির্বাচনী পরিবেশ নেই। এ ধরনের যুক্তি যে কোন সময় দেওয়া যায়।
জাতীয়তাবাদী ফ্রন্টের বর্তমান রাজনীতির মূল বক্তব্য ও জাতীয় স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব। বিগত দিনে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে এই রাজনীতির বিকাশ ঘটেছে, জনগণের কাছে জরুরী হয়ে দেখা দিয়েছে স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বের প্রশ্নটি।
বাংলাদেশের ঐতিহ্য এবং মানুষের সংগ্রামী অতীত প্রমাণ করেছে বাংলাদেশকে পদানত করা সম্ভব নয়। তাই স্বাধীনতা বিরোধী কোন ষড়যন্ত্রই দীর্ঘস্থায়ী হয়নি, অথবা পারেনি রাষ্ট্রক্ষমতায় মৌলিক পরিবর্তন আনতে।
কিন্তু রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় প্রতিপক্ষকে মোকাবিলা করার ক্ষেএে যে ব্যর্থতা রয়েছে, তা জাতীয়তাবাদী ফ্রন্টকে মেনে নিতে হবে। কেননা এক্ষেত্রে নিশ্চিত নির্বাচনী বিজয় বড় কথা নয়, বড় কথা রাজনৈতিক বিজয়।
এই অভিজ্ঞতার আলোকেই গজের নেতৃবৃন্দ কতগুলো ইস্যুকে বাঁচিয়ে রেখে ভবিষ্যতের পুঁজি করতে চাইছেন। পালমেন্টারী নির্বাচনে তারা তার ভিত্তিতে মাঠে নামবেন।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের এই বাস্তবতার আলোকেই বর্তমান প্রচ্ছদ কাহিনী ভোট অভিযান। দুই ফ্রন্টে চারজন কর্মকর্তা নির্ধারিত কিছু প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন, যেগুলোর মধ্যে অসংগতি রয়েছে। উত্তরদাতাদের মধ্যে রয়েছেন জাগোদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শামসুল হুদা চৌধুরী এবং ব্যারিষ্টার মওদুদ আহমেদ। অন্য দিকে রয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রথম সারির নেতা মিজানুর রহমান চৌধুরী এবং জাতীয় জনতা পার্টির ফেরদৌস কোরেশী।
ফ্রন্টগুলোর পক্ষ থেকে সমন্বিত বক্তব্য আশা করা অর্থহীন। তাই মাঠে মাঠে সবাই ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য উপস্থাপন করছেন। রাজনীতিতে সোফিসটিকেশন এসেছে বক্তব্যের দিক থেকে, কিন্তু জনগণকে তা ব্যাপকভাবে প্রভাবান্বিত করতে পারেনি। তাই ফ্রন্টের কারণে ব্যক্তব্য প্রকাশে অনেকেই চ্যাম্পিয়ন হচ্ছেন। কিন্তু তা প্রার্থীদের গতি জোগাচ্ছে না। প্রার্থীরা আপন শক্তিতে তাদের বক্তব্য রাখছেন। কখনো কখনো ফ্রন্টের বিভিন্ন বক্তব্য তাদের স্ব স্ব প্রতিনিধিকে পেছনে নিয়ে যাচ্ছে। বিগত দিনের রাজনৈতিক বন্ধ্যাত্বই এর কারণ।

 

বাকশালীদের কারণে শেখ মুজিবের মৃত্যু হয়েছে, এবার তার দ্বিতীয় মৃত্যু হবে – শামসুল হুদা চৌধুরী

প্রশ্নঃ আপনারা এই নির্বাচন করছেন কেন?
উত্তরঃ নির্বাচন করা হচ্ছে একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেয়ার জন্যে। কেননা ১৯৭৫ সালের পর দেশে যে রাজনৈতিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল, সেটা নিশ্চয়ই গণতন্ত্রকে হত্যা করে হয়েছিল। বর্তমানে যেভাবে দেশ চলছে সেটা কারো ইচ্ছাকৃত নয়, পরিস্থিতি নির্ভর। আমাদের বর্তমান প্রেসিডেন্ট অভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট হননি, তৎকালীন রাজনৈতিক সমস্যার কারণে প্রেসিডেন্ট হয়েছেন। এই সমস্যা দীর্ঘদিন চলতে পারে না। এটা শান্ত পরিস্থিতি নয়। কিন্তু দেশকে শাসন করতে হবে, দেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করতে হবে, এই কারণে বর্তমান প্রেক্ষিতে যতটুকু করা যায়, সামরিক আইন রেখে, সেভাবেই চালিয়ে নেয়া হচ্ছে। এটাকে একটি দেশের সঠিক অবস্থা বলা যেতে পারে না। সঠিক অবস্থায় ফেরার জন্য আমাদের আস্তে আস্তে গণতন্ত্রের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। এই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সাফল্য মন্ডিত করার জন্যই জনগণের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন ছিল। সেজন্যেই বর্তমান নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রশ্নঃ নির্বাচনের জন্যে আপনারা জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট গঠন করলেন কেন?
উত্তরঃ নির্বাচনে জয়লাভের তাগিদ থেকে আমরা এই ফ্রন্ট গঠন করিনি। যারা বিশ্বাস করে এটা স্বাধীন সার্বভৌম দেশ এবং কোন দেশের হস্তক্ষেপ ছাড়াই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে তারাই আমাদের সঙ্গে রয়েছেন। একথা অস্বীকার করার কিছু নেই যে, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় থেকেই এদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপের চেষ্টা হয়েছে তার থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে। দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতায় যারা বিশ্বাস করেন এবং বিশৃঙ্খলায় বিশ্বাস করেন না, যারা উৎপাদন এবং সম্পদের সুষম বন্টনে বিশ্বাস করেন তাদের নিয়েই আমরা এগিয়ে যেতে চাই। প্রেসিডেন্ট জিয়ার ১৯-দফা যারা মেনে নিয়েছেন তারা আমাদের সঙ্গে এসেছেন। সুতরাং নির্বাচনের তাগিদে ফ্রন্ট হয়নি, সমমতাবলম্বীরা একত্রিত হয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করছেন।
প্রশ্নঃ আপনি কি মনে করেন ভিন্নমুখী শক্তির সমন্বয়ে গঠিত জোটের মাধ্যমে আপনারা সে লক্ষ্য অর্জন করতে পারবেন?
উত্তরঃ যারা আমাদের নীতিতে, প্রেসিডেন্ট জিয়ার নীতিতে বিশ্বাস করেন না তারা এই ফ্রন্টে নেই। কিন্তু ভবিষ্যতে যদি তাদের পদস্খলন ঘটে, যদি তারা ফ্রন্টকে এগিয়ে নেয়ার জন্য বিরোধিতা করেন, তাহলে আমরা তাদের সঙ্গে থাকব না।
প্রশ্নঃ নির্বাচিত হলে, প্রেসিডেন্ট জিয়া কার প্রতিনিধি হবেন, ফ্রন্টের না জাতীয়তাবাদী দলের ?
উত্তরঃ ফ্রন্ট কয়েকটি রাজনৈতিক দল নিয়ে গঠিত। ফ্রন্টের নির্বাচন হবে একটা শ্লোগানের ভিত্তিতে। তিনি জাতীয়তাবাদী দলের নিজস্ব ব্যক্তি এবং ফ্রন্টের প্রতিনিধি। জয়লাভ হবে শ্লােগানের, দলের নয়। এখানে ব্যক্তি বা দলের প্রশ্ন ওঠে না। এটা একাধারে নির্বাচন ও গণভোট। আমরা দেখব জনগণ প্রেসিডেন্ট পদ্ধতি ও প্রেসিডেন্ট জিয়ার ১৯-দফার পক্ষে ভোট দিচ্ছেন, কিনা।
প্রশ্নঃ পার্লামেন্টারী নির্বাচনের সময় কি ফ্রন্টের অস্তিত্ব বজায় থাকবে ?
উত্তরঃ আমরা ভেঙ্গে যাওয়ার কথা ভাবছি না। ভাবছি ফ্রন্টে আরো দল যোগ দেবে।
প্রশ্নঃ গণতান্ত্রিক ঐক্যজোটের ৭-দফার প্রেক্ষিতে আপনি কি মনে করেন, প্রেসিডেন্ট জিয়া ভিন্ন অন্য কোন প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়া সম্ভব ছিল ?
উত্তরঃ সাত-দফায় গজ পার্লামেন্টারী গণতন্ত্রের কথা বলেছে। তারাই পার্লামেন্টারী গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছেন। সুতরাং তাদের এ ব্যাপারে কোন বক্তব্য থাকা উচিত বলে আমি মনে করি না। তারাই গণতন্ত্র হত্যা করে একনায়কত্ব চালু করেছেন, বাকশালী আইন, স্পেশাল অডিন্যান্স জারী করেছেন। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারের বিরুদ্ধে যতগুলো ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব তার সবগুলোই তারা নিয়েছেন। তারাই আবার দাবী তুলেছেন গণতন্ত্রের। তাই প্রথম কথা হচ্ছে, তাদের এসব দাবী উত্থাপনের অধিকার আছে কিনা? দ্বিতীয় কথা হচ্ছে এই জোটের প্রধান দল আওয়ামী লীগ এবং তাদের প্রতীক আওয়ামী লীগেরই প্রতীক। সুতরাং বলতে গেলে এটা আওয়ামী লীগের নির্বাচন। তার জোটের নামে যাকে মনোনীত করেছে, তিনি বাকশালী প্রার্থী। সুতরাং তাদের পালামেন্টারী গণতন্ত্রের কথা বলার অধিকার নেই। নির্বাচিত হলে তারা পূর্বের অবস্থানেই ফিরে যাবে। আজ পর্যন্ত তারা মুক্তকণ্ঠে বলেনি, শেখ মুজিবের নেতৃত্বে ৭৫ সালে যা করেছিলাম, ভুল করেছিলাম। তারা শুধু ক্ষমতায় আসতে চায়।
প্রশ্নঃ আপনাদের সঙ্গে বেশ কিছু প্রাক্তন বাকশালী রয়েছেন। এ সম্পর্কে আপনার বক্তব্য কি?
উত্তরঃ শেখ মুজিবের আমলে এমন অবস্থা হয়েছিল যে, অনেকে প্রত্যক্ষভাবে বিরোধিতা করার সাহস পাননি। এমনকি, আমরা দেখেছি ইত্তেফাকের সম্পাদক বিরোধিতা সত্ত্বেও, কাগজের মালিকানা রাখতে পারেননি। শেখ মুজিবের বিভিন্ন বাহিনী যেভাবে উন্মত্ত হয়ে উঠেছিল তাতে বিরোধিতা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। কিন্তু এদের সবাই যে তাতে সারা জীবন বিশ্বাস করবে এমন নয়। কিন্তু যারা মার্চ মাসে কাউন্সিল করে দ্বিতীয় বিপ্লব সমর্থন করেছে, তাদের চরিত্র বদলায়নি। তারা ১৯৭৫ সালের পরিস্থিতির পর্যালোচনা করেনি।
আমরা দুটো কারণে আওয়ামী লীগের প্রেসিডেন্ট পদ্ধতি সমর্থন করি না। প্রথমটি হচ্ছে, এতে একদলীয় শাসনব্যবস্থার কথা বলা ইয়েছে, যার ফলে বাংলাদেশে অন্য কোন রাজনৈতিক দল থাকবে না। দ্বিতীয় কথা হচ্ছে, বিভিন্ন অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে মানুষের সমস্ত মৌলিক অধিকার খর্ব করা হয়েছে। সব ধরনের নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ব্যক্তি একনায়কত্ব কায়েম করা হয়েছিল।
আমাদের ব্যবস্থায় পার্লামেন্টারী সার্বভৌম হবে এবং একদলীয় সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে না। বর্তমান পরিস্থিতিতে এটা আরাম্ভ মাত্র, শেষ নয়। এটা গণতন্ত্রে উত্তরণের প্রক্রিয়া। আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে দ্রুত জনগণের হতে ক্ষমতা ছেড়ে দেয়া ।
প্রশ্নঃ অভিযোগ করা হয় গত দু-বছরে দেশে দুর্নীতি বেড়েছে প্রেসিডেন্ট জিয়া নির্বাচিত হলে আপনারা কিভাবে তার মোকাবিলা করবেন ?
উত্তরঃ আমি মনে করি না দুর্নীতি বেড়েছে। কারণ দুর্নীতি বেড়েছে এটা আপেক্ষভাবে বলা হয়। স্বাধীনতার পর যে দুর্নীতি বেড়ে ছিল তা নিশ্চয়ই এখন আর নেই। আমাদের অবস্থাটা সে সময়ের সঙ্গে তুলনা করতে হবে। জিয়াউর রহমানের সঙ্গে যারা রয়েছেন তারা কেউ দুর্নীতি করেন না। এর বাইরে যা রয়েছে, তা প্রত্যেক দেশই রয়েছ। রাতারাত একে উচ্ছেদ করা সম্ভব নয়। আমি পরিষ্কারভাবে বলতে পারি জিয়াউর রহমানের সরকারের বা জাগোদলে যারা রয়েছেন তাদের কেউ দুর্নীতিবাজ নন।
প্রশ্নঃ আপনারা নির্বাচনী ঘোষণাপত্রে বৈদেশিক সাহায্য সম্পর্কে নীরব রয়েছেন কেন ?
উত্তরঃ এর মধ্যে নীরবতার কোন হেতু ছিল না। সবাক হলেও তা হতো নির্বাচনী চমক। কেননা উন্নয়নশীল দেশে কোন রাজনৈতিক দল বলতে পারে না, আমরা বৈদেশিক সাহায্য নেব না এমনকি চীনও ১২ বছর রুশ সাহায্য নিয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে (অস্পষ্ট) কিভাবে তা ব্যবহার করব। কতদিন নেব, এবং শর্ত কি হবে। আমরা সাহায্য গ্রহণ করব, সাহায্য গ্রহণ কমানোর দৃষ্টিভঙ্গী থেকে বেশীরভাগ ক্ষেত্রে আমরা বৈদেশক সাহায্য গ্রহণ করছি উন্নয়নের জন্য। আমরা দেশকে স্বনির্ভর দেখতে বাধ্য। স্বনির্ভর অর্থই বৈদেশিক সাহায্যের উপর নির্ভরশীলতা কমানো, কিন্তু রাতারাতি তা সম্ভব নয়।
প্রশ্নঃ শেখ মুজিব সম্পর্কে আপনারা কি অভিমত পোষণ করেন ?
উত্তরঃ আমরা বিশ্বাস করি, যে লোকটি মরে গেছে, তার বিরুদ্ধে দেশের অধিনায়কের বক্তব্য যেমনি শোভা নাও পেতে পারে, তেমনি তাকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করাও অশোভনীয়। শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে আমাদের বিষোদগার না করার কারণ, তিনি মৃত। এটা আমদের ভদ্রতায় লাগে। বাকশালীদের ভদ্রতা থাকলে তারা এটা করত না। বাকশালীদের কারণে একবার শেখ মুজিবের মৃত্যু হয়েছে, এবার তার দ্বিতীয় মত্যু হবে।
প্রশ্নঃ আপনারা কি নির্বাচনে জয়লাভ করবেন ?
উত্তরঃ এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। আমি মনে করি আমরা ব্যাপকভাবে জয়লাভ করব। এর কারণ, জিয়া জিয়াই।
প্রশ্নঃ নির্বাচনে কোন কারচুপির সম্ভাবনা আছে বলে কি আপনারা মনে করেন ?
উওরঃ না।

[pdf-embedder url=”https://songramernotebook.com/wp-content/uploads/securepdfs/2021/04/1978.05.26-baksal.pdf” title=”1978.05.26 baksal”]

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!