শেখ মুজিবরের ৬ দফা প্রস্তাব সমর্থন
দুপুরে কাগজ এলে মনিং নিউজে দেখলাম করাচী আওয়ামী লীগ সভাপতি বিবৃতি দিয়েছেন। তাতে লিখেছেন, জেল থেকে পাকিস্তান আওয়ামী লীগ সভাপতি নবাবজাদা নসরুল্লাহ খান, মালিক গােলাম জিলানী, খাজা মহম্মদ রফিক, জনাব সিদ্দিকুল হাসান তাকে জানাইয়াছে যে, তারা শেখ মুজিবরের ৬ দফা প্রস্তাব সমর্থন করেন এবং পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ ও পশ্চিম পাকিস্তান আওয়ামী লীগের মধ্যে কোনাে মতানৈক্য নাই।’ আমি জানি সত্যের জয় একদিন হবেই। পশ্চিম পাকিস্তানের ভাইরাও এইদিন এই ৬ দফা সমর্থন করে পাকিস্তানকে মজবুত করবেন। সারা পাস্তিানের আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীদের উপর জুলুম চলছে। সেখানে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তান নাই। আজ পূর্ব-পশ্চিম পাকিস্তানের আওয়ামী লীগ নেতারা কারাগারে বন্দি। আওয়ামী লীগ আজ জেলখানায়। ‘মানুষকে জেলে নিতে পারে কিন্তু নীতিকে জেলে নিতে পারে না।’
কনভেনশন মুসলিম লীগের জেনারেল সেক্রেটারি জনাব আসলাম খান। বােধ হয় পূর্বে কেহ এই ভদ্রলােকের নাম শােনেন নাই, নতুন আমদানি। জনাব বলেছেন, সারা বাংলা ঘুরে ৬ দফার সমর্থক পেলেন না। বন্ধু একটু ধীরে চলুন, বাংলাদেশকে চিনতে এখনও আপনার বহুদিন লাগবে! বেশি দালালি করে লাভ নাই। ভুট্টো সাহেবের অবস্থা দেখেও শিখলেন না! আপনার পূর্বে আরও কয়েকজন সেক্রেটারি বড় বড় বক্তৃতা করেছেন, তারা কোথায়? বােধ হয় এখন আর খোজ খবর নাই।
[৬ দফা : মির্জা নুরুল হুদা]
ড. মির্জা নূরুল হুদা সাহেব ৬ দফার উপর কটাক্ষ করে বলেছেন, পাকিস্তান দুর্বল হয়ে যাবে। যাহা হউক, পাকিস্তান দুই টুকরা হয়ে যাবে এ কথাতাে তারা বলেন নাই। ড. হুদা সাহেবকে আমার জানা আছে। মন্ত্রীত্ব পাওয়ার পূর্বে কি বলেছেন, আর মন্ত্রীত্ব পাওয়ার পরে কি বলছেন! হায়রে মন্ত্রীত্ব, তােমার কি জাদু! যাকেই হার দিয়েছ তাকেই বশ করে ফেলেছ।’
কারাগারের রােজনামচা, ২৪ জুন ১৯৬৬