সুতরাপুরে ৬-দফার দাবীতে জনসভা
সম্প্রতি বগুড়ার জামগ্রাম হাট প্রাঙ্গণে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ৬-দফার দাবীতে এক বিরাট জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন কাহালু থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি জনাব হজরত উল্লা। সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জনাব বি,এম, ইলিয়াস বলেন, আমাদের ন্যায়সঙ্গত সগ্রাম চলিতে থাকিবে। শেখ মুজিবর রহমানকে জেলে পুরিয়া পূর্ব পাকিস্তানের প্রাণের দাবী নস্যাৎ করা যাইবে না। অতঃপর তিনি ৬-দফা বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেন। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জনাব এ, কে, মুজিবর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ গদি চায় না—আওয়ামী লীগ আপামর মানুষের প্রাণের দাবীর বাস্তবায়ন চায়। ঢাকা হইতে সিলেট গমনের পথে বিভিন্ন রেলওয়ে ষ্টেশনে অপেক্ষমাণ জনতা আওয়ামী লীগ নেতাকে সাদর অভ্যর্থনা জ্ঞাপন করেন। রাত্র দুই ঘটিকার সময় ট্রেন আখাউড়ায় পৌছিলে শেখ মুজিবর রহমানকে ষ্টেশনে বিশেষভাবে নির্মিত মঞ্চের উপর দাঁড়াইয়া বক্তৃতা প্রদান করিতে হয়। এই বিরাট জনসমাবেশে তিনি ছয়-দফা প্রস্তাবের ব্যাখ্যাদান করেন। তিনি ছয়-দফা প্রস্তাব বাস্তবায়নের জন্য জনসাধারণকে ত্যাগ স্বীকারের জন্য প্রস্তত হইতে আহ্বান জানান।
তিনি জনসাধারণকে উদ্দেশ্য করিয়া বলেন, আমার প্রতি আপনাদের ভালবাসা ও ছয়-দফা প্রস্তাব বাস্তবায়নের জন্য আমাদের দেশের জনসাধারণের ত্যাগ স্বীকারের স্পৃহাই আমাকে সাহস যােগাইয়াছে এবং আপনাদের স্বার্থে যে কোন ত্যাগ স্বীকার করিতেই আমি কুণ্ঠিত হইব না। জনসাধারণ বৃষ্টিতে ভিজিয়া প্রায় আধঘণ্টা যাবৎ শেখ সাহেবের বক্তৃতা শ্রবণ করেন।
শেখ সাহেব তাঁহার বিরুদ্ধে আনীত মামলা সংক্রান্ত ব্যাপারে সিলেট সদর মহকুমা হাকিমের আদালতে হাজির হইলে তাহাকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয় এবং তাঁহার মামলা প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিষ্ট্রেট খাজা আবদুল হালিমের আদালতে স্থানান্তর করা হয়। পরবর্তী ১৩ই ও ১৪ই জুন এই মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত হয়।
শেখ মুজিব বলেন আওয়ামী লীগ জনসাধারণের মঙ্গল কামনা করে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ঘরে বসিয়া রাজনীতি করে না। তিনি-৬দফার বাণী ঘরে ঘরে পৌছাইয়া দেওয়ার জন্য কর্মীদের আহ্বান জানান।
দৈনিক ইত্তেফাক, ০৬ মে ১৯৬৬