You dont have javascript enabled! Please enable it! 1969.02.24 | ঢাকার বুকে সর্বকালের বৃহত্তম গণসংবর্ধনা সভায় মুজিবের ঘােষণা | ইত্তেফাক - সংগ্রামের নোটবুক

ঢাকার বুকে সর্বকালের বৃহত্তম গণসংবর্ধনা সভায় মুজিবের ঘােষণা

রমনা রেসকোর্স, ঢাকা, ২৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯
সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের উদ্যেগে আয়ােজিত ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে ঢাকার বুকের সর্বকালের বৃহত্তম গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে গতকাল (রবিবার) আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ মুজিবর রহমান দৃপ্তকণ্ঠে ঘােষণা করেন যে, তিনি সরকার পক্ষের সহিত প্রস্তাবিত রাজনৈতিক আলােচনায় অংশগ্রহণ করিয়া দেশের উভয় অংশের পক্ষ হইতে দেশবাসীর অধিকারের দাবি উত্থাপন করিবেন এবং যদি উত্থাপিত দাবি গ্রাহ্য করা না হয় তবে সে বৈঠক হইতে ফিরিয়া আসিয়া দাবি আদায়ের জন্য তিনি দুর্বারতর গণ-আন্দোলন গড়িয়া তুলিবেন। রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের জয়মাল্য কণ্ঠে ধারণ করিয়া বজ্রনির্ঘোষে তিনি ঘােষণা করেন যে, সংগ্রাম করিয়া আমি আবার কারাগারে যাইব, কিন্তু মানুষের প্রেম-ভালােবাসার ডালি মাথায় নিয়া দেশবাসীর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করিতে পারিব না। মুহুর্মুহু করতালি ও গগনভেদী জিন্দাবাদ ধ্বনির মধ্যে তিনি ঘােষণা করেন যে, বঞ্চিত বাঙালি, সিন্ধি, পাঞ্জাবী, পাঠান আর বেলুচের মধ্যে কোন তফাৎ নাই-কায়েমী স্বার্থবাদীদের শােষণ হইতে দেশের উভয় অংশের জনগণের মুক্তির একমাত্র পথ হইল আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন ও অর্থনৈতিক আজাদী।
গণ-সংবর্ধনায় সংগ্রামী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ এগার-দফা দাবি আদায়ের সংগ্রামের সার্বিক দায়িত্ব শেখ মুজিবের স্কন্ধে অৰ্পণ করিয়া তাহার নেতৃত্বের প্রতি ছাত্র-জনতার পক্ষ হইতে অকৃত্রিম আস্থা প্রকাশ করে।
অভূতপূর্ব গণমহাসাগরের সামনে দাঁড়াইয়া শেখ মুজিবর রহমান সাম্প্রতিককালের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে যাহারা আত্মাহুতি দিয়াছেন তাঁহাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করিয়া বাষ্পরুদ্ধ কণ্ঠে বলেন, জেলের তালা ভাঙিয়া আমাদেরকে যে মুক্ত করিয়া আনা হইয়াছে তা ছাত্র-জনতার সংগ্রামের এক মহাস্মরণীয় বিজয়। এই বিজয়ের দিনে তিনি ছাত্রদের এগারাে-দফার প্রতি পূর্ণ সমর্থন জ্ঞাপন করিয়া এগারাে-দফার সগ্রামে তিনি সক্রিয়ভাবে শরিক থাকিবেন বলিয়াও সবাইকে আশ্বস দান করেন।

ইত্তেফাক, ২৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯