You dont have javascript enabled! Please enable it!

স্বাধীনতা নসাৎ করতে পারবে না-বঙ্গবন্ধু

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষণা করেন যে, বিদেশি এজেন্ট ও কথাকথিত চরমপন্থী প্রগতিশীল ব্যক্তিদের যড়যন্ত্রে ও বাংলাদেশের কষ্টার্জিত স্বাধীনতাকে ধ্বংষ করতে সমর্থ হবে না। কোলকাতা আনন্দবাজার সুবর্ণ যুবলি উৎসব পালন উপলক্ষে ঢাকায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির । ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেন, ত্রিশ লাখ জীবনের বিনিময়ে বাঙালিরা যে স্বাধীনতা অর্জন করেছে তা রক্ষার ক্ষমতাও তাদের রয়েছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, বিদেশি এজেন্ট এবং তথাকথিত চরমপন্থী প্রগতিশীল ব্যক্তিদের যড়যন্ত্র আমাদের স্বাধীনতাকে ধ্বংস করতে সমর্থ হবে না। প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, স্বাধীনতা অর্জন করতে বাঙালিদের সীমাহিন মূল্য দিতে হয়েছে। দখলদার পাকিস্তানের বর্বর সেনাবাহিনী সবকিছুই বিধ্বস্ত করেছে। উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়েই তারা এই ষড়যন্ত্র চালিয়েছিল। স্বাধীনতা লাভের পর বাংলাদেশের জনগণ এক কঠোর অগ্নিপরীক্ষার সম্মুখীন হয়েছে। বাঙালিদের সাংস্কৃতিক ও ঐতিহ্যের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আশা করেন যে, স্বাধীনতা লাভের পর বাঙালি সংস্কৃতির আরো উন্নতি ঘটবে। স্রোতাদের স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন বিগত ২৩ বছরে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বাঙালি সংস্কৃতিকে ধ্বংস করার জন্য একের পর এক ষড়যন্ত্র চালাচ্ছিল কিন্তু বাংলাদেশের কৃষক, শ্রমিক ও বুদ্ধিজীবীমহল শাসকগোষ্ঠীর সকল ষড়যন্ত্রই ব্যর্থ করে দিয়েছে। তিনি আরো বলেন যে, জনসাধারণের একটি ক্ষুদ্র অংশ পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর ষড়যন্ত্রের বানচাল করার আন্দোলনে অংশ গ্রহণ করেনি। কিছু সংখ্যক তথাকথিত চরমপন্থী ও প্রতিক্রিয়াশীল শাসকগোষ্ঠীর পক্ষে ছিল- কিন্তু কোনো দিনই তারা কৃতকার্য হয়নি। তিনি বলেন, সর্বত্রই অনুরূপ ব্যক্তিদের অস্তিত্ব রয়েছে। এমনকি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনকালেও কিছু লোক সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বংশধররূপে কাজ করেন। প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রাম বহু পূর্বে শুরু করা হয়েছিল। বাঙালি জাতিকে তথাকথিত চরমপন্থী প্রগতিবাদী ও তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকদের চর প্রতিক্রিয়াশীলদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়েছে। তিনি বলেন, কত লোক জীবন দিয়েছে আর কত নির্যাতিত হয়েছে স্বাধীনতা অর্জনে তাদের অবদান ইতিহাসে লিপিবদ্ধ থাকবে। এতে পরিতাপ জনক যে, স্বাধীনতার জন্য যারা আত্মাহুতি দিলেন ইতিহাস তাদের অগ্যাত। কেবলমাত্র ভবিষ্যত বংশধররাই তা জানতে পারবে। বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামে অকৃত্রিম সাহায্য ও সহযোগিতার জন্য তিনি ভারতীয় জনগণ ও সরকারের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বর্বর পাকিস্তানবাহিনীর কবল থেকে জীবন রক্ষার জন্য সহায়-সম্বলহীন এক কোটি বাঙালি পশ্চিম বঙ্গ, ত্রিপুরা ও মেঘালয়ে আশ্রয় গ্রহণ করেছিলেন।

রেফারেন্স: ২৪ মার্চ ১৯৭২, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!