দ্রব্য মূল্য নিয়ন্ত্রণ বোর্ড গঠন করা উচিত
দেশ আজ বহুমুখী সমস্যায় জর্জরিত। এগুলোর মধ্যে খাদ্য সমস্যা প্রধান এবং জরুরি। বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আলতাফ হোসেন বুধবার দলীয় কার্যালয়ে একটি সাংবাদিক সম্মেলনে একথা বলেন। ন্যাপ সম্পাদক বলেন খাদ্য শস্যের অগ্নি মূল্য ছাড়াও কেরোসিন, সরিষার তেল, সাবান, ডাল, জ্বালানি এবং কাপড় চোপড়ের মূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। এ প্রসঙ্গে জনৈক সাংবাদিকের একটি প্রশ্নের জবাব দানকালে ন্যাপ সম্পাদক বলেন যে, তিনি ব্যক্তিগতভাবে মনে করেন অবিলম্বে ‘দ্রব্য মূল্য নিয়ন্ত্রণ বোর্ড গঠন করা উচিত। এ বোর্ডের মাধ্যমে খাদ্যশস্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মূল্য নিয়ন্ত্রণ করা হবে। অপর একটি প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন যে, প্রস্তাবিত দ্রব্য মূল্য নিয়ন্ত্রণ বোর্ডে স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলো প্রতিনিধি এবং বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠন করতে হবে। ন্যাপ নেতা বলেন যে, অবিলম্বে শহর ও পল্লী এলাকায় ন্যায্য মূল্যের দোকান খোলা উচিত। যার ফলে সাধারণ মানুষ ন্যায্য মূল্য নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয় করতে পারেন। সৈয়দ আলতাফ হোসেন বলেন যে, খাদ্যভাব এবং খাদ্য শস্যের অগ্নিমূল্যে জন-জীবন চরম দুর্দশায় নেমে এসেছে। তিনি বলেন যে, কয়েকটি জেলা বিশেষ করে কুষ্টিয়া, যশোর, ফরিদপুর, বরিশাল, রাজশাহী, দিনাজপুর এবং খুলনা জেলায় ৭০- ৮০ টাকান মন দরে চাল বিক্রি হচ্ছে। তিনি বলেন, অনাহারে দেশের বিভিন্ন স্থানে বহু মানুষ মারা যাচ্ছে বলে সংবাদ পাওয়া যাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে একটি প্রশ্নের জবাবে তিনি ফরিদপুর জেলার রাজবাড়ি মহকুমার এবং বরিশালের গলাচিপার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন যে, খাদ্য অভাবে মানুষ কচু ঘেচু খাচ্ছে। অনেক জায়গায় তাও পাওয়া যাচ্ছে না। ন্যাপ সম্পাদক বলেন যে, অসৎ ও দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ী এবং মজুতদাররা বর্তমান অবস্থার সুযোগ নিয়ে দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধি করে মোটা অর্থ উপার্জন করছে। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন যে, সরকারি প্রশাসন যন্ত্র এখন পর্যন্ত জনগণ এবং দেবে। শক্রদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দান করেননি। তিনি অবিলম্বে মুনাফাখোর, কালোবাজারী এক মুনাফাখোরদের কঠোর হস্তে দমনের জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান।
রেফারেন্স: ২২ মার্চ ১৯৭২, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ