রণাঙ্গনে
টাঙ্গাইলের বিস্তীর্ণ এলাকা শত্রুমুক্ত বীর মুক্তিযােদ্ধাদের প্রচন্ড মারের চোটে খান সেনাদের ইতস্ততঃ পলায়ন। মুক্তিবাহিনীর দুঃসাহসিক বীর গেরিলা যােদ্ধারা প্রচন্ড আক্রমণ চালিয়ে পাকিস্তানী হানাদার সৈন্যদেরকে সমগ্র টাঙ্গাইল জেলা থেকে বিতাড়িত করতে সক্ষম হয়েছেন। দুর্বার দুর্ধর্ষ গেরিলা যােদ্ধাদের বেপরােয়া মারের চোটে তুলধােন হয়ে হানাদার সৈন্যরা প্রাণ বাঁচানাের জন্য টাঙ্গাইল ছেড়ে এলােপাথারী ছুটতে থাকে। সঙ্গে সঙ্গে মুক্তিবাহিনী ক্ষিপ্রগতিতে মুক্ত এলাকায় প্রতিরক্ষামূলক অবস্থান নেন। মুক্তিবাহিনীর সদর দফতর এই সংবাদ পরিবেশন করে আরাে জানাচ্ছেন যে, বর্তমানে টাঙ্গাইলের মুক্ত অঞ্চল উত্তরে পাবনা জেলার রায়গঞ্জ থানা ও দক্ষিণে ঢাকা জেলার মানিকগঞ্জ পর্যন্ত বিস্তৃত। ঢাকায় ৩টি বিদ্যুৎ জেনারেটর ধ্বংস। ঢাকায় গেরিলাযােদ্ধারা শহরের প্রধান বিদ্যুৎ ষ্টেশনের চারটির মধ্যে তিনটি জেনারেটর ধ্বংস করে দিয়েছেন। ফলে ঢাকা শহরের অধিকাংশ এলাকা গভীর অন্ধকারের মধ্যে তলিয়ে গিয়ে শক্ত চলাচলকে সম্পূর্ণভাবে স্তব্ধ করে দিয়েছে। এছাড়া শহরে পানি সরবরাহ বন্ধ এবং সমগ্র শিল্পকারখানা অচল হয়ে গেছে। এক্ষণে একমাত্র শত্রু দখলীকৃত ক্যান্টনমেন্ট ছাড়া সমগ্র ঢাকা শহর ধরতে গেলে মুক্তিবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। দক্ষিণাঞ্চলে ব্যাপক তৎপরতা বাংলাদেশের দক্ষিণ-অঞ্চলে মুক্তিবাহিনীর গেরিলাযােদ্ধারা সর্বত্র তৎপর রয়েছেন। বীর … টেলি। যােগাযােগ ব্যবস্থা আক্রমণ চালিয়ে বিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছেন। ফলে বাংলার দক্ষিণ ও উত্তর অঞ্চলের জেলাগুলাের মধ্যে ট্রেন চলাচল সম্পূর্ণরূপে অচল হয়ে পড়েছে। | মুক্তিবাহিনীর যােদ্ধারা এখন দর্শনা ও আলীগঞ্জ এবং আলীগঞ্জ ও যশাের ষ্টেশনের মধ্যবর্তী রেল লাইনের ওপর প্রচণ্ড আক্রমণ চালাচ্ছেন। ময়মনিসংহে আক্রমণ অব্যাহত গত ৫ই নভেম্বর ময়মনসিংহ জেলার বারহাট্টা ও তানতার অঞ্চলে মুক্তিবাহিনী ও খান সেনাদের মধ্যে। প্রচণ্ড সংঘর্ষ হয়। মুক্তিযােদ্ধাদের প্রচণ্ড চাপ সহ্য করতে না পেরে হানাদার সৈন্যরা পিছু হটতে থাকে এবং পরে উক্ত ২টি থানা এলাকা ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়।
জয়বাংলা (১): ১: ২৮
১৯ নভেম্বর ১৯৭১
সূত্র: গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ -খন্ড ০৯