You dont have javascript enabled! Please enable it!

জনসমর্থন ছয়-দফার আছে, শুধু নেতৃত্ব দিতে পারলেই হয়

বড় আশ্চর্য লাগছে। মােনায়েম খান সাহেব কিছুদিন জনাব একেবারেই চুপচাপ। একটাও হুমকি ছাড়েন নাই, পিন্ডি থেকে এসে। সর্বদলীয় সভা জনাব নূরুল আমীন সাহেবের বাড়িতে হয়েছে। নিম্নতম কর্মসূচির ভিত্তিতে আন্দোলনে আমার আপত্তি থাকার কোনাে কারণ নাই। কিন্তু আন্দোলন করার নেতা কেউই নন। ছয়দফা দাবির ভিত্তিতে পূর্ণ আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের দাবি এবং রাজবন্দিদের মুক্তি, জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার, ইত্তেফাক প্রেস বাজেয়াপ্ত করার আদেশ প্রত্যাহার, কৃষক শ্রমিকদের দাবি-দাওয়ার ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন হতে পারে। আমার মনে হয়, এনডিএফ নেতারা তাদের সেই গাধা নীতি ধরে বসে আছেন: ‘গণতন্ত্রের দাবি’। আর কোনাে দাবির প্রয়ােজন নাই, দলও থাকবে না, ‘এক কমান্ড’ বলে বেড়ান। এতে আন্দোলন হয় না, আর দাবি আদায়ও হয় না। ঘরে বসে গুজগুজ রাজনীতি চলে, আর কোনাে মতে একটা আপােস করা যায় কিনা সেই ফন্দি। ন্যাপ আলাদের অন্য পথ, সকলের সাথে মিশে কাজ করতে রাজি, তবে তাদের দাবিগুলি নিম্নতম কর্মসূচির মধ্যে গ্রহণ করতে হবে।
এদেশে এসব হবে না। আন্দোলন যে দল করবে, ত্যাগ যে দল করবে, তারাই জনগণের সমর্থন পাবে এবং শান্তিপূর্ণ গণআন্দোলনের মধ্য দিয়েই দাবি আদায় হবে। আওয়ামী লীগের যারা এখনও জেলের বাইরে আছে তারাই কাজ করে চলুক। দেখা যাক কি হয়। জনসমর্থন ছয়-দফার আছে, শুধু নেতৃত্ব দিতে পারলেই হয়। ৭ তারিখে নৃেতত্ব যে ভুল করেছে তা এখানে লেখলাম না।
ভেবেছিলাম এডভােকেট ও আমার স্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ মিলবে, কারণ মামলা আরম্ভ হবে জেলগেট বসবে। মাত্র ছয়দিন আছে, কখন কাগজপত্র নিবে, নকল নিতে সময় লাগবে কোর্ট থেকে। কোন কোন এডভােকেট থাকবে? এরা বিচারের নামে প্রহসন করতে চায়। মার্শাল ল’ যখন চলছিল তখনও বিচার পেয়েছিলাম, আজকাল জামিনের কথা উঠলেই টেলিফোন বেজে উঠে।

কারাগারের রােজনামচা, ১ আগস্ট ১৯৬৬

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!