৬ দফা দাবির সাথে কোনাে আপােষ হবে না
পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ প্রায় সকলেই কারাগারে বন্দি অবস্থায় দিন কাটাতে বাধ্য হতেছে। নরসিংদী আওয়ামী লীগের দুইজন কর্মীকে গ্রেপ্তার। করে আনা হয়েছে। কাহাকেও আর বাইরে রাখবে না। তবুও দেখে আনন্দই হলাে যে, ২৩ তারিখে ওয়ার্কিং কমিটির সভা আহ্বান করেছে। কাজ করে যেতে হবে। ৬ দফা দাবির সাথে কোনাে আপােষ হবে না। আমাদেরও রাজনীতির এই শেষ। কোনাে কিছুই আওয়ামী লীগ কর্মীরা চায় না; তারা শুধু চায় জনগণ তাদের অধিকার আদায় করুক।
নূরুল আমীন সাহেব সকল দলকে ডাকবেন একটা যুক্তফ্রন্ট করার জন্য। ৬ দফা মেনে নিলে কারও সাথে মিলতে আওয়ামী লীগের আপত্তি নাই। মানুষকে আমি ধোঁকা দিতে চাই না। আদর্শে মিল না থাকলে ভবিষ্যতে আবার নিজেদের মধ্যে আত্মকলহ দেখা দিতে বাধ্য। সেদিকটা গভীরভাবে ভাবতে হবে। আইয়ুব সরকারের হাত থেকে জনগণের হাতে ক্ষমতা আনতে হলে আদর্শের সাথে যাদের মিল নাই তাদের সাথে এক হয়ে গোঁজামিল দিয়ে থাকা সম্ভবপর হতে পারে না। এতে আইয়ুব সাহেবের ক্ষতি কিছু করা গেলেও জনগণের দাবি আদায় হবে না। এত অত্যাচারের মধ্যেও ছয়-দফার দাবি এগিয়ে চলেছে। শত অত্যাচার করেও আন্দোলন দমাতে পারে নাই এবং পারবেও না। এখন যারা আবারও যুক্তফ্রন্ট করতে গিয়ে আসছেন তারা জনগণকে ভাওতা দিতে চান। যারা আন্দোলনের সময় এগিয়ে আসে নাই তাদের সাথে আওয়ামী লীগ এক হয়ে কাজ করতে পারে না। কারণ, এতে উপকার থেকে অপকার হবে বেশি। কোনাে নিম্নতম কর্মসূচির কথা উঠতেই পারে না। নিম্নতম কর্মসূচি হলাে ছয়-দফা। শাসনতান্ত্রিক কাঠামাে ঠিক না হলে কোনাে দাবিই আদায় হতে পারে না। পাকিস্তানের শাসনতান্ত্রিক কাঠামাে পূর্বে ঠিক হওয়া দরকার।
কারাগারের রােজনামচা, ১৮ জুলাই ১৯৬৬