ঢাকায় আবার গণহত্যা
গত ১৭ই নভেম্বর অধিকৃত ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ শহরে পাকিস্তানের জঙ্গীচক্র পুনরায় কার্ফিউ জারী করে। মুক্তিসংগ্রামীদের আক্রমণে নাজেহাল হয়ে জঙ্গীশাহী দুটো শহরেই ২৫শে মার্চের কায়দায় জনসাধারণের উপর ঝাপিয়ে পড়ে। কোনাে একটি দালালী সূত্রে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে মুক্তিসংগ্রামীদের নামের একটি তালিকা প্রস্তুত করে তারা বাড়ী বাড়ী তল্লাশী চালায়। প্রকাশ, তাদের পেয়ে পাকসৈন্যরা বহুসংখ্যক নিরীহ লােককে হত্যা করে, অনেকের উপর অকথ্য অত্যাচার চালায়। এবং বেশ কিছু সংখ্যক নির্বিবােধ নাগরিক ও স্কুল কলেজের ছাত্রকেও ধরে নিয়ে যায়। ফলে কাফিউ তুলে দেবার পর পরই জনসাধারণ নিরাপদ আশ্রয়ের উদ্দেশ্যে ঢাকা শহর ছেড়ে চলে যেতে শুরু করেন। এবারকার অভিযানে শত্রুসেনা প্রবল প্রতিরােধের সম্মুখীন হয়। সরাসরি সংঘর্ষে দুপক্ষেই প্রচুর হতাহত হয় বলে জানা যায়।
প্রসঙ্গত উল্লেখযােগ্য যে মুক্তিসংগ্রামীরা বহু এলাকাকেই শকবলমুক্ত করেছেন। নােয়াখালীতে একটি এফ-৮৬ পাকিস্তানী জেট প্লেনও মুক্তিবাহিনীর আক্রমণে ধ্বংস হয়েছে। পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন যে, জঙ্গীশাহী বিশ্বজনমতকে ধাপ্পা দেবার জন্যে ২৭শে ডিসেম্বর ইসলামাবাদে জাতীয় পরিষদের যে গোঁজামিল অধিবেশন বসানাের প্রচেষ্টা চালিয়েছে সেটা পুরােপুরি বানচাল করে দিয়ে তার আগেই বাঙলাদেশের সর্বত্র গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রশাসন চালু করার জন্যে মুক্তিবাহিনী যে দুর্বার অভিযান চালিয়েছেন ঢাকার এই সরাসরি সংঘর্ষ তারই একটি অংশ।
অভিযান ॥ ১:১
১৮ নভেম্বর ১৯৭১
সূত্র: গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ -খন্ড ০৯