You dont have javascript enabled! Please enable it!

সরকার কর্তৃক গৃহীত শিল্পে ঋণ দানের সিদ্ধান্ত

ঢাকা। সরকার যেসব শিল্প প্রতিষ্ঠানের পরিচালনভার গ্রহণ করেছেন সেগুলোকে কমার্শিয়াল ব্যাংকের মাধ্যমে ঋণ দেয়া হবে বলে বাংলাদেশ সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। উৎপাদিত মূল্যের ভিত্তিতে এই ঋণ দেয়া হবে। সকালে শিল্প, বাণিজ্য ও অর্থ দফতরের যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট এই বৈঠকে অনুষ্ঠিত হয়। শিল্পমন্ত্রী সৈয়দ নজরুল ইসলাম বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন এবং বাণিজ্যমন্ত্রী জনাব এম আর সিদ্দিকী, শিল্প দফতরের সেক্রেটারি, বাণিজ্য দফতরের সেক্রেটারি ও পরিকল্পনা কমিশনের সেক্রেটারি এতে যোগদান করেন। বি, আই, ডি সির চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ট্রেডিং কর্পোরেশনের ম্যানেজিং ডিরেক্টরও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে সৈয়দ নজরুল ইসলাম বাসসের প্রতিনিধির সাথে এক সাক্ষাৎকারে বলেন যে, শিল্পের কাঁচামাল, রাসায়নিক ও খুচরা অংশ আমদানীর সুবিধার জন্যই এই ঋণ দানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। বিভিন্ন শিল্পের আশু আর্থিক প্রয়োজনীয়তা পূরণের জন্যেই এই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বিদেশ হতে অত্যাবশ্যকীয় দ্রব্য আমদানির জন্যও সরকার অন্যান্য ব্যবস্থা অবলম্বন করছে। সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন যে, কতকগুলো শিল্পে যে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে সে সমস্যাদূরীকরণেও এই ঋণ সহায়ক হবে। তিনি বলেন যে, এই ঋণদানের ফলে সমস্ত শিল্পেই উৎপাদনের কাজ ত্বরান্বিত হবে। শিল্পমন্ত্রী আরও বলেন যে, এই ঋণ ছাড়াও কতিপয় শিল্প কারখানায় যাতেনঅবিলম্বে উৎপাদন শুরু হতে পারে তজ্জন্য এগুলোকে জরুরি ভিত্তিতে আরও অধিক পরিমাণে ঋণ দেয়ার সম্ভাবনা আছে। শিল্প ঋণ ক্ষেত্রে অর্থ সাহায্য নীতি, আমদানি ও রপ্তানি যোগাযোগ-ব্যবস্থার সমস্যা এবং সংশ্লিষ্ট উপরোক্ত তিনটি দফতরের অন্যান্য সমস্যাবলি সম্পর্কেও এই বৈঠকে আলোচনা হয়। সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি স্ট্যান্ডিং কমিটি গঠনের সিদ্ধান্তও বৈঠকে গৃহীত হয়। এই কমিটি দেশের শিল্প পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য বিভিন্ন সময়ে বৈঠকে মিলিত হবে। শিল্প প্রতিষ্ঠান গুলো দ্রুত ও সুষ্ঠু ভাবে চালানোর পথে বিভিন্ন প্রকারের বাধা দূরীকরণের ব্যবস্থা অবলম্বনের জন্য কমিটি দায়ী থাকবে। বর্তমান বৈঠকের আলোচনার ধারা মতো আরও আলোচনার জন্য সম্ভবতঃ শীঘ্রই আরেকটি সেক্রেটারি পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ইত্যবসরে শিল্প দফতর যোগাযোগ দফতরের সহিত সহযোগিতায় সারা দেশে যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনঃ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালাচ্ছে। কারণ শিল্পের কাঁচামাল ও উৎপাদিত পণ্যের দ্রুত চলাচলের জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থা আশু পুনঃপ্রতিষ্ঠা প্রয়োজন।

রেফারেন্স: ১১ মার্চ ১৯৭২, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!