You dont have javascript enabled! Please enable it! 1972.03.09 | ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের বৈঠকে খাদ্যসংকট নিরসন ও চোরাচালান বন্ধের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান | দৈনিক আজাদ - সংগ্রামের নোটবুক

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের বৈঠকে খাদ্যসংকট নিরসন ও চোরাচালান বন্ধের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান

বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সংসদের তিন দিনব্যাপী অধিবেশন অত্যন্ত সাফল্যজনকভাবে গত মঙ্গলবার শেষ হয়েছে। শেষ দিনের বৈঠকে গৃহীত এক প্রস্তাবে সকল আমলাতন্ত্র সুবিধাবাদ ও পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম অব্যাহত রাখার দৃঢ় সংকল্প গ্রহণ করা হয়। বৈঠকে গৃহীত এক বিশেষ প্রস্তাবে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, সীমান্ত এলাকায় চোরাচালান বন্ধ, ও অবিলম্বে খাদ্যসংকট নিরসনের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। বৈঠকের প্রায় প্রতিটি অধিবেশনই সংগঠনের সভাপতি সংগ্রামী ছাত্রনেতা জনাব নূরে আমল সিদ্দিকী সভাপতিত্ব করেন। বিভিন্ন জেলা ও মহকুমা থেকে আগত প্রতিনিধিরাও এই বৈঠকে যোগদান করেন। দীর্ঘ এক বৎসর পর স্বাধীনতাত্তোর কালের ছাত্রলীগের এই প্রথম বৈঠক দেশের রাজনীতিগত দিক থেকে নানাভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, বিগত ২৫ মার্চের কালোরাত্রিতে এই বৈঠক বসার কথা ছিল। সভায় গৃহীত অপর এক প্রস্তাবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ঘোষণাপত্র ও গঠনতন্ত্রের পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও সংযোজনের জন্য এবং পরবর্তীকালে তার চূড়ান্ত অনুমোদনের উদ্দেশ্যে আগামি কাউন্সিল অধিবেশনে পেশ করার জন্য ৭ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। জনাব নূরে আলম সিদ্দিকী, শাহজাহান সিরাজ, আ.স.ম আব্দুর রব, আবদুল কুদ্দুস খান মাখন, মনিরুল ইসলাম, শরিফ নুরুল আম্বিয়া ও শেখ শহীদুল ইসলাম এই কমিটির অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন। বৈঠকে সামাজিক জীবনে সশস্ত্র দুষ্কৃতকারীদের চাদা আদায়, বাড়ি গাড়ি দখল, লুটতরাজ প্রভৃতি সমাজবিরোধী কাজের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্যে ছাত্রলীগ কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান হয়। সভায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরকার কর্তৃক বেতন বৃদ্ধিকে অযৌক্তিক বলে অভিহিত করে অবিলম্বে বেতন কমানোর জন্য সরকারের নিকট দাবি জানানো হয়। সভায় আসছে ১৯-২০ ও ২১ শে মার্চ তারিখে অনুষ্ঠিতব্য ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সংসদের বর্ধিত সভায় আলোচনা ও সিদ্ধান্তের জন্য নিম্নলিখিত আলোচ্য বিষয়গুলো ঠিক করা হয়। (১) অতীতের আলোকে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ (২) কৃষক শ্রমিকের রাজত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক কর্মসূচি নির্ধারণ (৩) আলোচনান্তে গৃহীত প্রস্তাবাবলী বাস্তবায়নের জন্য আন্দোলনের গতিধারা নীতিকৌশল ও সংগঠনকে নির্ধারিত কর্মসূচি বাস্তবায়নের স্বপক্ষে শক্তিশালী রূপে সংগঠিত করা (৪) শিক্ষা নীতি নির্ধারণ।

রেফারেন্স: ৯ মার্চ ১৯৭২, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ