লক্ষ লক্ষ টাকার ধাতব দ্রব্য পাচার হয়ে যাচ্ছে
সিরাজগঞ্জ। চোরাকারবারীদের সক্রিয় দুস্কার্যের ফলে প্রতিদিন বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ সোনা, রূপা, তামা কাসাসহ বহুবিধ মূল্যবান ধাতব জিনিসপত্র বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া সীমান্তবর্তী জেলাসমূহ থেকেও প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণ খাদ্যশস্য, মাছ, ডিম, ঘি এবং বিদেশ থেকে আমদানিকৃত প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী অবৈধ পথে অন্য দেশে চলে যাচ্ছে। খবরে জানা গেছে যে, বর্তমানে সীমান্ত অঞ্চলে কালো বাজারে বাংলাদেশের টাকার মান শতকরা দশ থেকে পনের টাকা কমে গেছে। এতে বাংলাদেশের চোরাকারবারীরা নগদ টাকা দিয়ে অন্যদেশের জিনিসপত্র কিনে নিয়ে এসে লাভবান হচ্ছে না। তাই তারা আমাদের দেশে দাম কম অথচ দেশে দাম বেশি এমন সব জিনিসের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে যে, অন্য দেশে তামা কাসার দাম বিশ টাকা সের হলেও আমাদের দেশে তার দাম বারো তেরো টাকার বেশি নয়। বাংলাদেশের উৎকৃষ্ট মানের খাদ্যশস্য, মাছ, ডিম ও ঘিয়ের বেলায়ও একই কথা খাটে। ফলে এসব ভাগ্যবান চোরাকারবারীরা একঢিলে দুই পাখি মেরে দ্বিগুন টাকা রোজগার করছে। অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময়ে বাংলাদেশের জন্য যেসব জিনিস ও কাপড়চোপড় কিনে আনা হয়েছিল কাগুজে টাকার বিনিময়ে তাও চলে যাচ্ছে অন্যত্র। একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি অন্য একটি দেশ ঘুরে এসে আজাদ প্রতিনিধির কাছে বলেন যে, বিদেশি বাজারে বাংলাদেশের এসব দ্রব্য প্রচুর বিক্রি হচ্ছে। তার মতে অবিলম্বে চোরাচালান বন্ধ করতে না পারলে আমাদের অর্থনীতি দারুণভাবে বিপর্যস্ত হবে। তিনি আরো জানিয়েছেন যে, বিদেশ থেকে চোরাকারবারীরা প্রধানত প্রসাধনী দ্রব্য, কিছু বিড়িপাতা, নিম্নমানের কাপড়চোপড় প্রভৃতি নিয়ে আসছে। যার মধ্যে একমাত্র বিড়িপাতা ছাড়া আর কিছুই আমাদের অর্থনৈতিক প্রগতির সহায়ক হচ্ছে না। বরং আমাদের উৎপাদনকে ব্যাহত করছে।
রেফারেন্স: ৭ মার্চ ১৯৭২, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ