রাশিয়া বাংলাদেশকে নিজ পায়ে দাড়াতে সাহায্য করবে
পাঁচদিনব্যাপী সফরের মাধ্যমে সোভিয়েত নেতৃবৃন্দের সাথে পরিপূর্ণ সমঝোতা সৃষ্টির পর বঙ্গবন্ধু ঢাকা ফিরে এসেছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে রাশিয়া যেভাবে সাহায্য করেছে এক্ষণে বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে দাড় করে দেয়ার ব্যাপারেও একইভাবে সাহায্য সহযোগিতা করে যাওয়ার জন্য সোভিয়েত নেতৃবৃন্দ বঙ্গবন্ধুকে আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানা গেছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী রাশিয়ায় যে ধরনের সম্বর্ধনা পেয়েছেন এবং সোভিয়েত নেতৃবৃন্দের সাথে বঙ্গবন্ধুর যে আলোচনা হয়েছে তার। থেকেও এই ধারণাই বদ্ধমূল হয়। আলোচনার সাথে ঘনিষ্ট মহল থেকে বলা হয়েছে, উভয় পক্ষই সতর্কভাবে অগ্রসর হন। কিন্তু শিগগীরই উষ্ণ অন্তরঙ্গতা ফিরে আসে আর পরিপূর্ণ ঐকান্তিকতা ও খোলাখুলি পরিবেশে আলোচনা চলতে থাকে। ক্রেমলিনের ভোজ সভায় কোসিগিনের বক্তব্য ও এর সত্যতা প্রমাণ করে। কোসিগিন বলেন যে, আলোচনার ফলে উভয় দেশের মধ্যে পূর্ণ সহযোগিতা সোপান তৈরি করবে বলে তিনি নিঃসন্দেহ। সোভিয়েত নেতৃবৃন্দ ও বঙ্গবন্ধুর মধ্যে যে, পূর্ণ পারস্পরিক আস্থা ও হৃদ্যতা সৃষ্টি হয় তা ব্রেজনেভের সাথে তাঁর আলোচনাতেও দেখা যায়। এই আলোচনা তিন ঘণ্টা স্থায়ী হয়। কোসিগিন তার ব্যস্ততাপূর্ণ দৈনন্দিন কর্মসূচি থেকে সময় করে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর সাথে লেনিনগ্রাদ পর্যন্ত গমন করেন এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানাবার জন্য তার কৃষিমন্ত্রীকে তাসখন্দ প্রেরণ করেন। কূটনৈতিক মহল এটাকে অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য ঘটনা বলে অভিহিত করেছেন। লেনিনগ্রাদে কোসিগিন বঙ্গবন্ধুর বিদায়ের পূর্বে আবার তার সাথে ২০ মিনিট কাল আলোচনা করেন। এছাড়া সোভিয়েত নেতৃবৃন্দ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ কর্তৃক গৃহীত ৪টি মূলনীতিরও উচ্চ প্রশংসা করেছেন।
রেফারেন্স: ৬ মার্চ ১৯৭২, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ