বাংলাদেশ-সোভিয়েত যুক্ত ঘোষণায় অর্থনৈতিক বাণিজ্যিক ও কৃষি ক্ষেত্রে সহযোগিতা
তাসখন্দ। মস্কোয় স্বাক্ষরিত যুক্ত ঘোষণায় বলা হয়েছে যে, উভয় সরকার দুদেশের পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট সকল বিষয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে নিয়মিত আলাপ আলোচনা চালাতে সম্মত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে সোভিয়েত নেতাদের আলাপ-আলোচনার পর এই যুক্ত ঘোষণা স্বাক্ষর করা হয়। যুক্ত ঘোষণায় বলা হয়ঃ দুইটি পৃথক সমাজ ব্যবস্থার দেশ হলেও দুদেশের স্বার্থেই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কোন্নয়ন ও বিভিন্নক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধি সম্ভব। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ইতোমধ্যেই সেসকল ব্যবস্থা গৃহীত হয়েছে তাতে যুক্ত ঘোষণায় সন্তোষ প্রকাশ করা হয়। এতে ঘোড়াশাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, চট্টগ্রামের জেনারেল ইলেকট্রিক্যাল ম্যানুফ্যাকচারিং কারখানা, উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বেতার ট্রান্সমিটার এবং তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের ন্যায় প্রকল্পগুলোতে সোভিয়েত অর্থনৈতিক সাহায্যের ব্যাপারে ঐকমত্যের বিষয় উল্লেখ করা হয়। অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা সম্প্রসারণের জন্য দু’দেশের বিশেষজ্ঞগণ অদূর ভবিষ্যতে বৈঠকে বসবেন এবং এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব গ্রহণ করবেন বলে ঘোষণায় বলা হয়েছে। বাংলাদেশের বন্দর উন্নয়ন, মৎস্য শিকার সম্প্রসারণ ও রেল যোগাযোগ পুনরুদ্ধারের জন্য সোভিয়েত ইউনিয়ন সাহায্য দান করবে। দু’দেশের নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশ ও সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে বাণিজ্য সম্প্রসারণে একমত হয়েছেন। বাংলাদেশ ও সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে বন্ধুত্ব সম্প্রসারণের জন্য দুদেশ প্রতিনিধিদল বিনিময় করবে এবং এ ব্যাপারে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বিষয়গুলোও বিবেচনা করবে। বঙ্গবন্ধু ঢাকা প্রত্যাবর্তনের পর মূল দলিল বাংলায় প্রকাশিত হবে। সোভিয়েত ইউনিয়ন বাংলাদেশের কৃষি উন্নয়নেও সাহায্য করবে এবং চাষি প্রতিনিধি দল বিনিময়ে উৎসাহিত করবে। আন্তর্জাতিক প্রসঙ্গে: আন্তর্জাতিক প্রশ্নে বলা হয়, বাংলাদেশ ও সোভিয়েত ইউনিয়ন উপমহাদেশের সমস্যার প্রকৃত রাজনৈতিক সমাধান চায় এবং কেবল কোনো রকম বাইরের হস্তক্ষেপ ছাড়া সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলির নিজেদের মধ্যে বাস্তবভিত্তিক আলোচনার মাধ্যমে তা হতে পারে।
রেফারেন্স: ৪ মার্চ ১৯৭২, দৈনিক আজাদ
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭২, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ