আলীআহসান মুহম্মদ মুজাহিদ
৭ নভেম্বর
৭ নভেম্বর ঢাকায় বদর দিবস পালিত হয়। এ উপলক্ষে বিকেলে বায়তুল মােকারম প্রাঙ্গনে ঢাকা শহর ইসলামী ছাত্র সংঘের উদ্যোগে এক গণ জমায়েত অনুষ্ঠিত হয়। এই গণজমায়েতে পূর্ব পাকিস্তান ইসলামী ছাত্র সংঘের সভাপতি আলী আহসান মােহাম্মদ মুজাহিদ বদর দিবস উপলক্ষে সংঘের পক্ষ থেকে ৪ দফা ঘােষণা করেন।
(১) “দুনিয়ার বুকে হিন্দুস্তানের কোন মানচিত্রে আমরা বিশ্বাস করি না। যতদনি পর্যন্ত দুনিয়ার বুক থেকে হিন্দুস্তানের নাম মুছে দেয়া না যাবে ততদিন পর্যন্ত আমরা বিশ্রাম নেব না।”
(২) “আগামীকাল থেকে হিন্দু লেখকদের কোন বই অথবা হিন্দুদের দালালী করে লেখা কোন পুস্তকাদি লাইব্রেরিতে স্থান দিতে পারবেন না বা বিক্রি বা প্রচার করতে পারবেন না। যদি কেউ করেন তবে পাকিস্তানের অস্তিত্বে বিশ্বাসী স্বেচ্ছাসেবকেরা জ্বালিয়ে ভস্ম করে দেবে।”
(৩) “পাকিস্তানের অস্তিত্বে বিশ্বাসী স্বেচ্ছাসেবকদের সম্পর্কে বিরূপ প্রচার করা হচ্ছে। যারা এই প্রচার করছে তাদের সম্পর্কে ইশিয়ার থাকুন। |
(৪) বায়তুল মােকাদ্দেসকে উদ্ধারের সংগ্রাম চলবে। মুজাহিদ এই ঘােষণা বাস্তবায়িত করার জন্য ছাত্র, শিক্ষক, কৃষক শ্রমিক জনতার প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন—“এই ঘােষণা বাস্তবায়িত করার জন্য শির উঁচু করে, বুকে কোরান নিয়ে মর্দে মােজাহিদের মত এগিয়ে চলুন। প্রয়ােজন হলে নয়াদিল্লী পর্যন্ত এগিয়ে গিয়ে আমরা বৃহত্তর পাকিস্তানের পতাকা উত্তোলন করব।” |
পূর্ব পাকিস্তান ইসলামী ছাত্র সংঘের সাধারণ সম্পাদক মীর কাশেম আলী তার বক্তৃতায় বলেন, আজকের বদর দিবসের শপথ হল-
(১) ভারতের আক্রমণ রুখে দাঁড়াবাে।
(২) দুস্কৃতিকারীদের খতম করবাে।
(৩) ইসলামী সমাজ কায়েম করবাে।
উক্ত গণমায়েতের পর একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি নবাবপুর থেকে বাহাদুরশাহ পার্কে পৌছে শেষ হয়। মিছিলের কয়েকটি শ্লোগান ছিল নিম্নরূপ :
(ক) আমাদের রক্তে পাকিস্তান টিকবে। (খ) বীর মুজাহিদ অস্ত্র ধর, ভারতকে খতম কর। (গ) মুজাহিদ এগিয়ে চলকলিকাতা দখল কর। (ঘ) বদর দিবস সফল হােক। (ঙ) ভারতের চরদের খতম কর ইত্যাদি।
রেফারেন্স: ১৯৭১ ঘাতক-দালালদের বক্তৃতা ও বিবৃতি- সাইদুজ্জামান রওশন