You dont have javascript enabled! Please enable it!

মতিউর রহমান নিজামী
১৪ নভেম্বর

আলবদর সর্বাধিনায়ক দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকায় “বদর দিবস পাকিস্তান ও আলবদর” শীর্ষক একটি উপসম্পাদকীয়তে লেখেন—“বিগত দু’বছর থেকে পাকিস্তানের একটি তরুণ কাফেলার ইসলামী পুনর্জাগরণ আন্দোলনের ছাত্র প্রতিষ্ঠান পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংঘ এই ঐতিহাসিক বদর দিবস পালনের সূচনা করেছে। যারা পাকিস্তানে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার সাথে এই দিবস উদ্যাপিত হওয়ার পেছনে এই তরুণ কাফেলার অবদান সবচেয়ে বেশি।… হিন্দু বাহিনীর সংখ্যা শক্তি আমাদের তুলনায় পাঁচ গুণ বেশি। তাছাড়া আধুনিক সমরাস্ত্রেও তারা পাকিস্তানের চেয়ে অধিক সুসজ্জিত। দুর্ভাগ্যবশত পাকিস্তানের কিছু মুনাফিক তাদের পক্ষ অবলম্বন করে ভেতর থেকে আমাদেরকে দুর্বল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। তাদের মােকাবিলা করে তাদের সকল ষড়যন্ত্র বানচাল করেই পাকিস্তানের আদর্শ ও অস্তিত্ব রক্ষা করতে হবে শুধু পাকিস্তান রক্ষার আত্মরক্ষামূলক প্রচেষ্টা। চালিয়েই এ পাকিস্তানকে রক্ষা করা যাবে না।
….. বদরের যুদ্ধ থেকে অনেক কিছুই আমাদের শিখবার আছে। এই যুদ্ধের সৈনিকরা কেউ পেশাদার বা বেতনভুক সৈনিক ছিলেন না। মুসলমানরা সবাই ছিলেন সৈনিক। তারা সবাই ছিলেন স্বতঃস্ফুর্ত প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ, ঈমানের তাগিদেই তারা লড়তে প্রস্তুত হয়েছিলেন বিরাট শক্তির মােকাবিলায়। বৈষয়িক কোন স্বার্থই ছিল না তাদের সামনে। মরলে শহীদ বাচলে গাজী—এই ছিল তাদের বিশ্বাসের অঙ্গ। ঈমানের পরীক্ষায় তারা ছিলেন উত্তীর্ণ। সংখ্যার চেয়ে গুণের প্রাধান্য ছিল সেখানে লক্ষণীয়। পারস্পরিক দ্বন্দ্ব কলহের লেশমাত্র ছিল না তাদের মধ্যে। এক রসুলের নেতৃত্বে তারা সবাই ছিলেন সীসা ঢালা প্রাচীরের ন্যায় ঐক্যবদ্ধ। একমাত্র আল্লাহর সাহায্য ছিল তাদের সম্বল। আর আল্লাহর সন্তোষ ছিল তাদের কাম্য। আজকের কাফেরদের পর্যদস্ত করতে হলে আমাদেরও অনুরূপ গুণাবলীর সমাবেশ অবশ্যই ঘটাতে হবে। | আমাদের পরম সৌভাগ্যই বলতে হবে, পাকসেনার সহযােগিতায় এদেশের ইসলাম প্রিয় তরুণ ছাত্র সমাজ বদর যুদ্ধের স্মৃতিকে সামনে রেখে আল বদর বাহিনী গঠন করেছে। বদরযুদ্ধে মুসলিম যােদ্ধাদের সংখ্যা ছিল তিনশত তের জন। এই স্মৃতি অবলম্বন করে তারাও তিনশত তের জন যুবকের সমন্বয়ে এক একটি ইউনিট গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বদর যযাদ্ধাদের সেই সব গুণাবলীর কথা আমরা আলােচনা করেছি, আল বদরের তরুণ মর্দে মুজাহিদদের মধ্যে ইনশাআল্লাহ সেই সব গুণাবলী আমরা দেখতে পাব।
……. পাকিস্তানের আদর্শ ও অস্তিত্ব রক্ষার দৃঢ় সংকল্প নিয়ে গঠিত আলবদরের যুবকেরা এবারের বদর দিবসে নতুন করে শপথ নিয়েছে, যাতে তেজোদ্দীপ্ত কর্মীদের তৎপরতার ফলেই বদর দিবসের কর্মসূচি দেশবাসী তথা দুনিয়ার মুসলমানদের সামনে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে। ইনশাআল্লাহ বদর যুদ্ধের বাস্তব স্মৃতিও তারা তুলে ধরতে সক্ষম হবে। আমাদের বিশ্বাস সেদিন যুবকেরা আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর পাশাপাশি দাড়িয়ে হিন্দু বাহিনীকে পর্যুদস্ত করে হিন্দুস্তানকে খতম করে সারা বিশ্বে ইসলামের বিজয় পতাকা উড্ডীন করবে।”

রেফারেন্স: ১৯৭১  ঘাতক-দালালদের বক্তৃতা ও বিবৃতি-  সাইদুজ্জামান রওশন

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!