দৈনিক সংগ্রাম
১৭ জুলাই
এই পত্রিকাটি মহান ‘৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থানকে ‘জ্বালাও পােড়াও’ আন্দোলন হিসেবে চিহ্নিত করে এবং ইয়াহিয়া খানের সামরিক শাসনকে যৌক্তিক দাবি করে বলে, “১৯৬৯ সালে চরমপন্থী নেতারা যদি জ্বালাও পােড়াও ঘেরাও আন্দোলন শুরু না করত তবে আবার দ্বিতীয়বার সামরিক শাসনের প্রয়ােজন হত না। দেশে এমন চরম বিশৃঙ্খলা শুরু হলাে যে, শেষ পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া সামরিক শাসন প্রবর্তন করে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেন। এতে আরাে বলা হয় যে,
“কিন্তু আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ ১৯০৫ সালের ‘জয়বাংলা শ্লোগান তুলে আবার হিন্দু বাংলায় পূর্ণ সমর্থন আদায় করে সমস্ত হিন্দু ভােট পাওয়ার ব্যবস্থা করে নিল। এরা বুঝে না বুঝে আবার মীর জাফর, আবদুল রসুল, গাফফার খান ও শেখ আবদুল্লাহর মত ভুল করে বসল। এরা হিন্দুর চক্রান্ত না বুঝে প্রচার করতে লাগল যে, বাংলাদেশ বাঙালির। এ সরাসরি বিশ্বাস ঘাতকতা ও বেঈমানী, কারণ এতে লাভ হবে বাঙালি হিন্দুর আর সর্বনাশ হবে বাঙালি মুসলমানের তথা গােটা পাকিস্তানের। | মওলানা ভাসানী সম্পর্কে মন্তব্য করা হল যে, “নির্বাচনের পূর্বে ১২ নভেম্বরের সর্বনাশা ঝড়ের সুযােগে মওলানা ভাসানী সরাসরি বিচ্ছিন্নতার দাবি তুললেন। কেন যে সে আওয়াজ বন্ধ করা হল না তা অনেকের বুঝের বাইরে। সেই ভুলের জন্য আজ পূর্ব পাকিস্তান মুক্তি বাহিনীর নামে একদল দেশদ্রোহী ও ভারতের দালাল কর্তৃক স্বাধীনতা হরনে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।”
পত্রিকাটি আরাে মন্তব্য করে যে, “আজকাল ভারতের হাওয়াই বাণী যেভাবে বাংলাদেশের জন্য চিৎকার করছে তাতে মুসলমানের বুঝা উচিত যে, এ বাংলাদেশ তারা চায় বাঙালি হিন্দুদের জন্য বাঙালি মুসলমানদের জন্য তারা বঙ্গোপসাগরের অথই জলই নির্দিষ্ট করে রেখেছে।
রেফারেন্স: ১৯৭১ ঘাতক-দালালদের বক্তৃতা ও বিবৃতি- সাইদুজ্জামান রওশন