সিলেট শহরে ভাগ্যরজনীতে খানসেনাদের চরম দুর্ভোগ
(স্টাফ রিপাের্টার) সিলেট, ১৫ই অক্টোবর মজুমদারী তল্লাটে শব-ই-বরাতের রাতে সাতজন দুঃসাহসী মুক্তিযােদ্ধার একটি দল অতর্কিতে খান সেনাদের একটি অস্ত্ৰৰ্ঘাটিতে গ্রেনেড আক্রমণ চালিয়ে সম্পূর্ণরূপে উড়িয়ে দেয়। এই দুঃসাহসিক অভিযান চালাতে গিয়ে জনৈক মুক্তিযােদ্ধা পাক সেনাদের হাতে ধরা পড়েন। অন্যরা নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে সক্ষম হন। পাক সামরিক কর্তৃপক্ষ এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সিলেট শহরে একটানা চব্বিশ ঘণ্টা মেয়াদী সান্ধ্য আইন জারি করে। কেহ কারাে কম নয়। সিলেট জেলার উত্তর পশ্চিম সীমান্তবর্তী জন্তিরয়া এলাকার উত্তর গাছে গত মাসের শেষ সপ্তাহে তিন জন পাক সেনা চড়াও হলে আবাদী (ভিন্ন জেলা থেকে আগত চাষাবাদকারীদেরকে স্থানীয় ভাষায় আবাদী বলা হয়) হাতের লম্বা দায়ের সাহায্যে কেটে টুকরাে টুকরাে করে মাটিতে পুঁতে রাখে। | এই ঘটনার চারদিন পরে বিপুল সংখ্যক পাক সেনা এই গ্রামের উপর চড়াও হয়ে হত্যা, লুণ্ঠন, অগ্নি সংযােগ ও যথেচ্ছ নারী নির্যাতন চালায় বলে খবর পাওয়া গেছে। টাউট সৈয়দুল্লা খতম। বালাগঞ্জ থানার ইলামপুর গ্রামের কুখ্যাত মুসলিম লীগ টাউট সৈয়দুল্লাকে চলতি মাসের তিন তারিখে। মুক্তিযােদ্ধারা তার বসত বাটীতে হত্যা করেছেন। সৈয়দুল্লার হত্যা সংবাদ শােনার পর স্থানীয় জনগণের মনে আনন্দের বান ডেকে যায়। সতের জন রাজাকাররের সশস্ত্র আত্মসমর্পণ চলতি মাসের ৭ তারিখে ১৭ জন রাজাকার সিলেট শহর থেকে সশস্ত্র অবস্থায় মুক্তাঞ্চলে পালিয়ে এসে মুক্তিযােদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণ করে।
সাপ্তাহিক বাংলা ১: ৪
১১ নভেম্বর ১৯৭১
সূত্র: গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ -খন্ড ০৯