You dont have javascript enabled! Please enable it!
                  শিরোনাম                      সূত্র                  তারিখ
ভারতীয় প্রতিনিধি মি.সমর  সেনের বিবৃতি জাতিসংঘ ডকুমেন্টস ৬ ডিসেম্বর,  ১৯৭১

১.ভারতীয় প্রতিনিধি মি.সমর সেনের বিবৃতি
ডিসেম্বর, ১৯৭১

আমি কেবল দুই মিনিটের জন্য কথা বলতে চাচ্ছিলাম পাকিস্তানের প্রতিনিধি কর্তৃক আলোকপাতকৃত কিছু বাস্তবিক বিষয়ের উপর কোনো প্রভাব না ফেলার নিমিত্তে। এই প্রভাব তৈরি হয়েছে ভুল ধারণার ভিত্তিতে, এবং আমি ভেবেছি আমি এটি অতি দ্রুত সংশোধন করব। আমি বিশ্বাস করিনা যে এটি আমাদের আলোচনায় সহায়তা করতো অথবা পরিষদকে লাভবান করতো যদি আমি আবারো বিশদভাবে সেই বহুসংখ্যক অভিযোগের প্রত্যুত্তর দিতাম যেগুলো তিনি বিভিন্ন সময়ে উল্লেখ করেন, যেসব অভিযোগের বিশদ প্রত্যুত্তর আমি পূর্ববর্তী সময়গুলোতে দিয়েছি। এই সবগুলো অভিযোগই হল অবিবেচনাপূর্ণ, যেমনটা আমি এর আগে বলেছি, যার বিন্দুমাত্রও কোনো প্রমাণ নেই অথবা কণামাত্রও সত্যতা নেই। তা সত্ত্বেও, তিনি তিনটি বিষয়ের কথা উল্লেখ করেছেন যার সাথে জাতিসংঘ কোনো না কোনো ভাবে জড়িত এবং আমি মনে করি পরিষদকে সঠিক অবস্থানটি সম্পর্কে অবহিত করাটা আমার কর্তব্য।

প্রথমত, তিনি বাংলাদেশের এই দুঃখজনক বিষয়টি জাতিসংঘে উত্থাপিত হওয়ার ব্যাপারে কথা বলেছেন। নিঃসন্দেহে, নিরাপত্তা পরিষদ হল সেই বহুসংখ্যক ফোরামগুলোর একটি যেখানে এই বিষয়গুলো আলোচিত হতে পারে। তিনি ব্যাখ্যা করেননি কেন অন্য অঙ্গ-সংগঠন গুলোও এক্ষেত্রে বিবেচিত হতে পারেনি।
তারপরও, দুটি বাস্তবিক বিষয়। তিনি বলেছেন যে আমাদের স্মারকলিপি, যা এস/১০৪১০ দলিলের অন্তর্ভুক্ত, সেটি সঠিক নয় এবং সেটি একটি ভুল বিবৃতি ধারণ করছে। তিনি বলছেন পশ্চিম-পাকিস্তানি সূত্রগুলো বিবৃতি প্রদান করেছে যে ভারত পাকিস্তানের উপর আক্রমণ চালিয়েছে। আমি উল্লেখ করছি যে, এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। যদি এই ব্যাপারে কোনো সন্দেহ থাকে, অন্তত কিছুটা সত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সেই প্রতিবেদনটির দ্বারা যা এস/১০৪১২ দলিলের অন্তর্ভুক্ত, যার অনুচ্ছেদ ৪ (a) তে বলা হয়েছে:
“ ৩ ডিসেম্বর শ্রীনগর বিমানঘাঁটিতে ১৭৪৫ ঘণ্টায় বোমাবর্ষিত হয়েছে।”
এখন, শ্রীনগর আমাদের সীমান্তের ভেতর অবস্থিত, এবং তাই, এখানে শুধুমাত্র পাকিস্তানি বিমান কর্তৃকই বোমা নিক্ষিপ্ত হতে পারে। আমরা ধারণা করছি যে এই বোমাবর্ষণ সংঘটিত হয়েছিল ১৭৩০ ঘণ্টায় ; জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক বিবৃত করেছেন যে এখানে বোমাবর্ষিত হয়েছিল ১৭৪৫ ঘণ্টায়।

দ্বিতীয় বিষয়টি হল এই যে, তিনি বলেছিলেন ঢাকা থেকে রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধি সংক্রান্ত সৈন্যদল এবং জাতিসংঘের কর্মকর্তাবৃন্দের উদ্বাসনকে প্রতিরোধ করে আমরা জঘন্য অপরাধ করেছি। যদি সত্যিটার প্রতি কারো কোনো বিবেচনা থাকে এবং আমি মনে করি সেক্রেটারিয়েট আমাকে এ ব্যাপারে নিশ্চিত করতে পারবে, কিন্তু আমি তাদের এটা করতে বলব না কেননা এটি তাদের জন্য অত্যন্ত বিব্রতকর বিষয় হবে, কেননা সবকিছুর আয়োজন করা হয়েছিল, প্লেনটি এসেছিল ব্যাংকক থেকে এবং এটি ঢাকার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল। এখানে একটি টেলিগ্রাম আছে যা বিবৃত করছে যে আসলে কি ঘটেছিল:

“ আয়োজনমাফিক কানাডিয়ান C-13 বিমান আজ সকালে ব্যাংকক থেকে ঢাকা এসেছে। কিন্তু, ঢাকা বিমানবন্দরে পৌঁছানোর সময় ঢাকা কন্ট্রোল টাওয়ার বিমানটিকে গ্রহণ করেনি এবং এটিকে তারা ফিরে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। আমাদের কলকাতা বিমান কন্ট্রোল এই কথোপকথন পর্যবেক্ষণ করে এবং বিমানচালককে কলকাতা অভিমুখী হওয়ার আমন্ত্রন জানায়। বিমানচালক এই প্রস্তাবটি কৃতজ্ঞতাসহকারে গ্রহণ করেন, কিন্তু তিনি বলেন তিনি ব্যাংকক ফিরে যাচ্ছেন। বিমানবাহিনী কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেন যে ১০-৩০ থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত নিরাপদ সময়কালের যে প্রতিশ্রুতি আমরা দিয়েছিলাম তার প্রতি পূর্ণ সম্মান প্রদর্শিত হয়েছে। আমাদের বিমানবাহিনী এই সময়কালের অনেক আগেই ঢাকা বিমানঘাঁটিতে বৈমানিক কার্যক্রম বন্ধ করেছে।”
এটিই হল সত্য।
 

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!