শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
জাতিসংঘের ও অন্যান্য ব্যক্তিবর্গকে ঢাকা থেকে সরিয়ে নেবার জন্য স্বীয় প্রচেষ্টার উপর মহাসচিবের প্রতিবেদন | জাতিসংঘ ডকুমেন্টস | ডিসেম্বর ৭, ১৯৭১ |
জাতিসংঘের ও অন্যান্য ব্যক্তিবর্গকে ঢাকা থেকে সরিয়ে নেবার জন্য স্বীয় প্রচেষ্টার উপর মহাসচিবের প্রতিবেদন।
এস/১০৪৩৩, ডিসেম্বর ৭, ১৯৭১
জাতিসংঘ মহাসচিব ঢাকায় অবস্থানরত জাতিসংঘের পূর্ব পাকিস্তান রিলিফ অপারেশন (ইউএনইপিআরও) এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক ব্যক্তিবর্গের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত ছিলেন। এই রিপোর্টে উল্লিখিত ব্যক্তিবর্গকে পূর্ব পাকিস্তান হতে সরিয়ে আনতে মহাসচিবের তৎপরতা বর্ণিত হয়েছে। এই তৎপরতা ঢাকায় আটকে পড়া জাতিসংঘের ৪৬ কর্মকর্তাসহ সর্বমোট ২৪০ আন্তর্জাতিক ব্যক্তিবর্গকে সরিয়ে এনেছে।
২। ১৯৭১ সালের নভেম্বরের শেষদিকে পূর্ব পাকিস্তানের অবস্থার ক্রমাবনতি হওয়া সত্ত্বেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, ইউএনইপিআরও এর তৎপরতা যতটুকু সম্ভব চালিয়ে যাওয়া হবে। ইউএনইপিআরও এর কম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ব্যাংকক ও সিঙ্গাপুরে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। ব্যাংকক ও সিঙ্গাপুরকে অপারেশনের প্রধান কেন্দ্র এবং নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছিল। কিন্তু ৪৭ জন কর্মকর্তা তখনো পূর্ব পাকিস্তানে ছিলেন। তারা ঢাকায় জড়ো হয়েছিলেন।
৩। ডিসেম্বরের ৩ তারিখে পূর্ব পাকিস্তানের প্রধান শহরগুলোতে বিমান আক্রমণ শুরু হওয়ায় অবস্থার মারাত্মক অবনতি ঘটে। এটা সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে যে ইউএনইপিআরও তার কাজ চালিয়ে যাবার মত অবস্থায় আর নেই। তখন জাতিসংঘের ৪৬ কর্মকর্তাকে সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ৪৭ তম ব্যক্তি, যিনি আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা এর কর্মকর্তা ছিলেন, তিনি ছিলেন পূর্ব পাকিস্তানের নাগরিক। কর্মকর্তাদের সাময়িক অনুপস্থিতিতে ইউএনইপিআরও এবং ইউনিসেফের অফিস ও যন্ত্রপাতি হেফাজতের দায়িত্ব তাকে দেয়া হয়েছিল। (দেখুন- এ/পিভি-২০০১)
৪। জাতিসংঘ সদরদপ্তরে মহাসচিব উক্ত কর্মকর্তাগণের স্থানান্তর প্রক্রিয়ার তৎপরতা শুরু করেছিলেন। এতে ঢাকা, নয়াদিল্লী ও ব্যাংককের জাতিসংঘ প্রতিনিধিগণ সহযোগিতা করেছিলেন। ঐ সময় ঢাকার সাথে সকল সড়ক ও নৌ যোগাযোগ বন্ধ ছিল। তখন বেরিয়ে আসার একমাত্র পথ ছিল আকাশপথ। কিন্তু আকাশপথে বেরিয়ে আসাও অনেক কঠিন ছিল। কিছুদিন আগেই ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ভারতীয় বিমান বাহিনী কর্তৃক আক্রান্ত হয়। এই বিমান হামলায় ইউএনইপিআরও এর দুইটি বিমানও ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ঢাকা হতে এবং ঢাকাগামী সকল বাণিজ্যিক ফ্লাইট বাতিল হয়ে যায় এবং বিমান কোম্পানিগুলো চার্টার ফ্লাইট ব্যবস্থা করতেও অনিচ্ছুক ছিল।
৫। ডিসেম্বরের ৪ তারিখে জাতিসংঘের ব্যক্তিদের সরিয়ে নেবার জন্য কানাডীয় সরকার একটি সি-১৩০ বিমান দিতে রাজি হয়। বিমানটি ঢাকা থেকে আড়াই ঘন্টা দূরত্বে ব্যাংককে অবস্থান করছিল। ডিসেম্বরের ৫ তারিখে স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। যুদ্ধাবস্থার কারণে পাকিস্তান কর্তৃপক্ষের নিকট হতে বিশেষ ছাড়পত্র নেবার প্রয়োজন হয়। পাকিস্তান ও ভারতীর সরকারের মধ্যে সাময়িক যুদ্ধবিরতি হয়। ঢাকা বিমানবন্দরের ভিতর, চারপাশ এবং ঢাকা-ব্যাংকক আকাশপথ যুদ্ধবিরতির অর্ন্তভূক্ত করা হয়। বিমানের অবতরণ, লোডিং ও উড্ডয়নের লক্ষ্যে জাতিসংঘ মহাসচিব ডিসেম্বরের ৫ তারিখ ১০.৩০ থেকে ১৮.৩০ (ইপিটি সময়) পর্যন্ত যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেন।
৬। ৪ ডিসেম্বর বিকেলে পাকিস্তান সরকার জাতিসংঘ মহাসচিবের অনুরোধে রাজি হয়। কিন্তু ভারতীয় সরকার সময়মত সকল আয়োজন করতে ব্যর্থ হয়। এর ফলে স্থানান্তর প্রক্রিয়া ২৪ ঘন্টার জন্য স্থগিত করতে হয়।
৭। ঢাকায় আটকে পড়া ব্যক্তিদের মধ্যে ইউএনইপিআরও এর সহকারী মহাসচিবও ছিলেন। ইতোমধ্যে বিভিন্ন দূতাবাস তার নিকট অনুরোধ করছিল তাদের কর্মকর্তা ও নাগরিকদের সরিয়ে নিতে সহায়তা করতে। নাগরিকদের মাঝে অনেক মহিলা ও শিশু ছিল। মহাসচিবের অনুমতিক্রমে সহকারী মহাসচিব তাদের অনুরোধ মেনে নিতে সম্মত হন। এর ফলে ডিসেম্বরের ৫ তারিখে ৪৬ জাতিসংঘ কর্মকর্তা, রেডক্রসের ৪ কর্মকর্তা, বিভিন্ন দূতাবাসের ৮৭ ব্যক্তি এবং ৮০ জন নারী ও শিশুকে স্থানান্তর করার পরিকল্পনা করা হয়। পরবর্তীতে সর্বমোট ২৪০ ব্যক্তিকে সরিয়ে আনার পরিকল্পনা হয়। এই বৃহৎ দলে অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, কানাডা, জার্মানি, ফ্রান্স, হাঙ্গেরি, ইন্দোনেশিয়া, ইতালি, জাপান, নেপাল, রোমানিয়া, সিঙ্গাপুর, সোভিয়েত ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য, তাঞ্জানিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও যুগোশ্লাভিয়ার নাগরিক ছিল। অতিরিক্ত যাত্রীদের বহন করার জন্য জাতিসংঘ প্যান-আমেরিকান এয়ারওয়েজের একটি বোয়িং-৭০৭ ভাড়া করে। ৭ ডিসেম্বর, এই দ্বিতীয় বিমানটির ঢাকায় পৌছার সময় নির্ধারণ করা হয়।
৮। ৫ ডিসেম্বর বিকেলে মহাসচিবের অনুরোধে ভারতীর কর্তৃপক্ষ যুদ্ধবিরতি মেনে নিতে সম্মতি প্রদান করে। কিন্তু এটি খুব অল্প সময়ের জন্য। ৬ ডিসেম্বর ১০.৩০ থেকে ১২.৩০ (ইপিটি) ঘন্টা পর্যন্ত। এই ঘোষণার সাথে সাথেই কানাডীয় সি-১৩০ বিমানকে ভারতীর কর্তৃপক্ষের বেধে দেয়া সময়ের মধ্যে স্থানান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নির্দেশ দেয়া হয়।
৯। ৬ ডিসেম্বর ইউএনইপিআরও ঢাকা থেকে মহাসচিবের নিকট প্রতিবেদন প্রেরণ করে যে, কানাডীয় সি-১৩০ বিমানটি ঢাকা বিমানবন্দর থেকে ১৭০ মাইল (আকাশপথে ১০ মিনিট) দূরত্বে থাকা অবস্থায় বিমানবন্দর ভারতীয় বিমান আক্রমণের স্বীকার হয়। বিমানবন্দরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থেকে ব্যাপক বিমান-বিধ্বংসী গোলাবর্ষণ করা হয়। ঐ সময় স্থানান্তরের অপেক্ষায় থাকা যাত্রীরা বাসে করে বিমানঘাটির দিকে যাচ্ছিলেন। সামনের বাসটির অধিকাংশ যাত্রীই ছিল নারী ও শিশু। তাদের পরিখাতে আশ্রয় নিতে হয়। তাদের ২৫ মিটার দূরে বোমা বিষ্ফোরিত হয় কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। নিয়ন্ত্রণ কক্ষ হতে কানাডীয় বিমানটিকে ফেরত আসার নির্দেশ দেয়া হয় এবং বিমানটি ব্যাংকক ফেরত আসে।
১০। উক্ত অংশটি উল্লেখিত ঘটনা নিয়ে ইউএনইপিআরও এর বিমান উপদেষ্টা কর্তৃক দাখিলকৃত প্রতিবেদনের অংশ।
“(ক) ৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১, আমি ঢাকা বেসামরিক বিমানবন্দরে কানাডীয় সি-১৩০ ৩০৫, ফ্লাইট নং ৫০১ এর আগমনের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। বিমানটি ব্যাংকক হতে ঢাকা আসছিল। উক্ত ফ্লাইটের উদ্দেশ্য ছিল নারী, শিশু, জাতিসংঘ কর্মকর্তা এবং অন্যান্য মিশনের সর্বোচ্চ সংখ্যক ব্যক্তিবর্গকে সরিয়ে নেয়া।
(খ) ঢাকার স্থানীয় সময় ১০.৩০ এ ভারতীয় ও পাকিস্তানী কর্তৃপক্ষ স্থানান্তরের অনুমতি দেয়।
(গ) বিমানটি ঢাকা পৌছার ৪৫ মিনিট পূর্বে নিয়ন্ত্রণকক্ষের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করছিল। ক্যাপ্টেন স্থানীয় সময় ১০.৫০ এ পৌছার সময় ঠিক করেছিলেন। ০৯.৩০ এ ভারতীয় বিমান বাহিনী কর্তৃক বিমানবন্দরের উপর আক্রমণ শুরু হয়, যা ০৯.৪২ পর্যন্ত স্থায়ী ছিল। দ্বিতীয় আক্রমণ ছিল ৭ মিনিট ব্যাপী। রানওয়েতে বোমাবর্ষণ করা হয় এবং তিনটি স্থান ক্ষতিগ্রস্থ হয়। স্থানীয় সময় ১০.৪১ এ অন্য একটি আক্রমণ পরিচালিত হয়। ঐ সময় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের আঞ্চলিক কন্ট্রোলার জানান যে, বিমানবন্দরের আক্রমনটি একটি পূর্ণ শক্তির আক্রমণ এবং বিমানবন্দরে বোমা বর্ষিত হচ্ছে। তিনি বিমানটিকে ব্যাংকক ফিরে যেতে বলেন।
(ঘ) প্রথম আক্রমণে বোমার আঘাতে শুধু রানওয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। বোমার আঘাতে গর্ত তৈরি হয়। সম্ভবত গভীর গর্ত সৃষ্টিকারী এবং দেরিতে বিষ্ফোরিত হয় এমন সব বোমা ব্যবহৃত হয়। আমি বোমার পতন ও বিমান চলে যাওয়ার পরও বিষ্ফোরণের শব্দ শুনতে পেয়েছিলাম।
(ঙ) স্থানীয় সময় ১৩.১০ এ পুনরায় বোমাবর্ষণ করা হয় এবং এতে রানওয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়।”
১১। তৎক্ষণাৎ মহাসচিবের প্রতিনিধিগণ জাতিসংঘে ভারতীর স্থায়ী মিশনের কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করেন। জাতিসংঘ মহাসচিব আটকে পড়া ব্যক্তিদের সরিয়ে আনার জন্য নতুন পরিকল্পনা করেন। ৭ ডিসেম্বর কানাডীয় সি-১৩০ ও প্যান আমেরিকান বোয়িং ৭০৭ ব্যবহার করে তাদের সরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ঢাকা ও এর পাশবর্তী এলাকায় ০৮.৩০ থেকে ১২.৩০ (ইপিটি সময়) পর্যন্ত অস্ত্রবিরতির এবং ঢাকা-ব্যাংকক আকাশপথের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার জন্য ভারত ও পাকিস্তান সরকারকে অনুরোধ করা হয়। উভয় সরকারই অনুরোধ মেনে নিতে সম্মত হয়।
১২। ৭ ডিসেম্বর ঢাকা হতে ইউএনইপিআরও কর্তৃক জানানো হয় যে, ০৯.৩০ (ইপিটি সময়) এর মধ্যে ঢাকা বিমানবন্দরের রানওয়ে উভয় বিমানের অবতরণ উপযোগী করা সম্ভব। জাতিসংঘ সদরদপ্তর থেকে নতুন স্থানান্তর পরিকল্পনা অনুসরণ করার জন্য নির্দেশনা জারী করা হয়। সি-১৩০ বিমানটি প্রথমে ঢাকা রওয়ানা হবে এবং বোয়িং ৭০৭ পৌছার পূর্বে রানওয়ের অবস্থা পরখ করবে।
১৩। স্থানীয় সময় ০৬.৪৫ (গ্রীনিচ সময় ২৩.৪৫) এ সি-১৩০ বিমানটি ব্যাংকক ত্যাগ করে। কিন্তু এটি ঢাকা পৌছার পূর্বেই আবার ফিরে আসে। বিমান কমান্ডারের প্রতিবেদনের সারাংশ নিম্নে উল্লেখ করা হলঃ
(ক) বিমানটি গ্রীনিচ সময় ২৩.৪৫ এ ব্যাংকক বিমানবন্দর ত্যাগ করে এবং জাতিসংঘের পরিকল্পনা অনুসারে অগ্রসর হতে থাকে। রেঙ্গুনে থাকা অবস্থার ঢাকা বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে জানানো হয় যে, রানওয়ে ব্যবহারযোগ্য না থাকায় অবতরণের অনুমতি দেওয়া হবেনা। রেঙ্গুনের আকাশে এক ঘন্টা ছাব্বিশ মিনিট ধরে চক্কর দেওয়ার পর অবশেষে বিমানটিকে ঢাকা বিমানবন্দরের উপর উড়ে চাক্ষুষ পরিদর্শনের অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু রানওয়েতে অবতরণের অনুমতি দেওয়া হয়নি।
(খ) বিমানটি পূর্বে সম্মত হওয়া পথ অনুসরণ করতে থাকে। বিমানটি গ্রীনিচ সময় ০৩.৪৫ এ ২১.০৫ডিগ্রি উত্তর ও ৯১.১৫ডিগ্রি পূর্বে ২০,০০০ ফিট উচ্চতায় ছিল। বিমানের কমান্ডার দেখতে পান যে, দুইটি এসকর্টসহ একটি এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে। তিনি দেখতে পান যে, একটি যুদ্ধবিমান ক্যারিয়ারের পাশে উড়ছে। তিনি ধারণা করেন যুদ্ধবিমানটি কানাডীয় বিমানটিকে এসকর্ট করার জন্য এসেছে। তিনি লক্ষ্য করেন যে, দ্বিতীয় আরেকটি বিমান ক্যারিয়ারের দিকে অগ্রসর হচ্ছে এবং ঐ সময় ক্যারিয়ার থেকে ধোয়া বের হওয়া শুরু হয়। দ্বিতীয় বিমানটি ক্যারিয়ার পার হয়ে যাওয়ার পর কালো ধোয়ার মেঘ দৃষ্টিগোচর হয়।
(গ) তারপর বিমানের কমান্ডার লক্ষ্য করেন যে, নিচে বাম পাশ থেকে তার বিমান লক্ষ্য করে বিমান-বিধ্বংসী গোলা ছোড়া হয়েছে। তিনি বাইরে বিষ্ফোরণের শব্দ শোনেন এবং ধারণা করেন বোমাটি বিমানের দিকেই আসছে। অতঃপর তিনি ‘মে ডে’ এবং ‘বিপদ সংকেত’ প্রেরণ করেন এবং বিমানের দিক ব্যাংককের দিকে ঘুরিয়ে দেন।
(ঘ) ঐ সময়েই ব্যাংকক রেডিও হতে এয়ার ট্রান্সপোর্ট কমান্ড অপারেশনের একটি বার্তা তিনি গ্রহণ করেন। ঐ বার্তায় বিমানটিকে তৎক্ষণাৎ ব্যাংকক ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। কোন উল্লেখযোগ্য ঘটনা ছাড়াই গ্রীনিচ সময় ০৬.৪৫ এ বিমানটি ব্যাংকক পৌছে। তাৎক্ষণিক পরীক্ষায় দেখা যায় যে, বিমানের কোন ক্ষতি হয়নি।
১৪। এটি উল্লেখ করা সঙ্গত যে, উল্লেখিত ঘটনার সময় সি-১৩০ বিমানটি ঢাকা-ব্যাংকক আকাশপথে সম্মত হওয়া পথে নিরাপদে ছিল। বিমানটিকে ফিরিয়ে আনার সাথে সাথে বোয়িং ৭০৭ এর ফ্লাইটটিও বাতিল করা হয়।
১৫। বিমানে স্থানান্তর প্রক্রিয়ার অন্যান্য সম্ভাবনাসমূহ এখন খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মহাসচিব রেডক্রসের আন্তর্জাতিক কমিটির সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন। তিনি ঢাকা প্রতিনিধিকে আন্তর্জাতিক কমিটির সাথে পূর্ণ সহযোগিতার আদেশ দেন এবং জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক ব্যক্তিবর্গের নিরাপত্তার জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেন।