You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.10.05 | জেনেভায় অনুষ্ঠিত ‘ইউ-এন-এইচ-সি-আর’ এর একজিকিউটিভ কমিটির ২২তম অধিবেশনে ভারত সরকারের পুনর্বাসন সচিব শ্রী জি এস কাহলন এর বিবৃতি | জাতিসংঘ ডকুমেন্টস - সংগ্রামের নোটবুক
শিরোনাম সূত্র তারিখ
জেনেভায় অনুষ্ঠিত ‘ইউ-এন-এইচ-সি-আর’ এর একজিকিউটিভ কমিটির ২২তম অধিবেশনে ভারত সরকারের পুনর্বাসন সচিব শ্রী জি এস কাহলন এর বিবৃতি জাতিসংঘ ডকুমেন্টস ৫ অক্টোবর, ১৯৭১

জেনেভায় অনুষ্ঠিত ইউএনএইচসিআর এর নির্বাহী কমিটির ২২ তম অধিবেশনে
ইন্ডিয়া সরকারের পুনর্বাসন সচিব শ্রী জি এস কাহলন এর বিবৃতি
অক্টোবর ৫, ১৯৭১
জনাব সভাপতি, আমি আপনাকে এবং আপনার কমিটির সদস্যদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করতে চাই আপনাকে সম্বোধনের এই সুযোগ আমাকে প্রদান করার জন্য। আমি কি জনাব আমার প্রতিনিধিদল এবং আমার নিজের পক্ষ থেকে আপনার এই কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় আপনাকে উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়ে শুরু করতে পারি? আপনি, জনাব, এবং আপনার দেশ শরনার্থী সমস্যা উপর গভীর আগ্রহ নিয়েছেন এবং সেখানে জড়িত সকল মানবিক বিষয়ের উপর আপনাদের গভীর জ্ঞান আছে। আমি আপনাকে এবং আপনার সহকর্মীবৃন্দ, সহসভাপতি এবং দূতসকল এর সাফল্য কামনা করি এবং আপনার আগত কঠিন দায়িত্বসমুহ পালনে আমাদের পুর্ন সহযোগিতার হাত বাড়াই।
আমি কি অন্যান্য প্রতিনিধিবৃন্দের সাথে যোগদান করে হাই কমিশনার, প্রিন্স সদরুদ্দিন আগা খানকে অভিনন্দন জানানোর সুযোগ নিতে পারি তার বহুল চিত্তাকর্ষক এবং তথ্যবহুল বিবৃতির জন্য। তিনি এবং তার কর্মীদলের সদস্যবৃন্দের পুরো বিশ্বে অনেক সংকটময় এবং চাহিদাপুর্ন কাজ সম্পন্ন করার আছে এবং ইন্ডিয়াতে আমরা, আমাদের বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের প্রতি আমাদের প্রশংসা জ্ঞাপন করতে চাই যে দ্রুত এবং কার্যকর সহায়তার জন্য যা তারা আমাদের অকুণ্ঠচিত্তে সদয়ভাবে দিয়েছেন।
আপনাদের বর্তমান সভার ঐতিহাসিক গুরুত্ব আছে, কারন এটি ইউএনএইচসিআর এর ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সাথে সম্পর্কযুক্ত। যাইহোক, এটি দুর্ভাগ্যজনক যে আজকে বিশ্বকে মুখোমুখি হওয়া উচিত ভয়ানক দুঃখজনক মানবিক পরিস্থিতির সাথে যেখানে ৯ কোটির বেশী মানুষ জড়িত যাদের নিজেদের ভিটামাটি ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয়েছে এবং অন্য দেশে আশ্রয় নিতে হয়েছে, এবং যাদের দুর্দশা আমরা উপশমের চেষ্টা করছি। যেহেতু বিশিষ্ট হাইকমিশনার নিজেই তার বিবৃতিতে গতকাল নির্দেশ করেছিলেন। “সাধারণ উদ্দেশ্য- জাতিসংঘের ভিতরে ও বাইরে হওয়া উচিত শরনার্থী সমস্যার কারণ অনুসন্ধান করে সেটি দূরীকরণের উপায় বের করা এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক সমস্যার সমাধান করা যেটি জনসংখ্যার বিরাট গতিবিধিকে চালিত করে”। এটি শুধুমাত্র কারণগুলোর মূলোৎপাটন যেটির মাধ্যমে এই জটিল সমস্যার সমাধান সম্ভব; শুধুমাত্র তখনই শরনার্থীদের স্বতস্ফুর্ত প্রত্যাবাসন আনা যেতে পারে পারে তাদের মত যারা লাখে লখে ইন্ডিয়ায় পাড়ি দিয়েছে।
যেহেতু আপনারা জানেন, জনাব, ইন্ডিয়া অত্যাবশ্যকভাবে এবং ব্যাপকভাবে পুর্ব পাকিস্তান থেকে শরনার্থীদের অন্তঃপ্রবাহের বর্তমান সমস্যা নিয়ে উদ্বিগ্ন যে আমি মনে করি এটি প্রয়োজনীয় এই কমিটিকে এই সমস্যার কিছু অপরিহার্য অংশ সম্পর্কে অবগত করা যা ইন্ডিয়া করেছিল এবং এখনও করছে, এই পরিস্থিতিতে এবং পন্থায় যেভাবে সে এটির মোকাবিলা করছে, অবশ্যই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা নিয়ে।
দুর্ভাগ্যজনক এবং অতুলনীয় পরিস্থিতি যা মানুষকে ব্যাপক দুঃখদর্দশার দিকে ধাবিত করেছে যেটি মার্চের শেষ দিক থেকে পুর্ব পাকিস্তান থেকে ব্যাপক মাত্রায় এই প্রস্থানের কারণ ছিল, বাকিটা ইতোমধ্যে সকলেরই জানা। এই পীড়াদায়ক পরিস্থিতে ইন্ডিয়াকে সম্পুর্নরুপে মানবতার ভিত্তিতে আশ্রয় এবং ত্রাণ সাহায্য কোটি মানুষকে বাড়িয়ে দিতে হয়েছিল যারা পশ্চিম বাংলা, আসাম, মেঘালয় এবং ত্রিপুরা প্রদেশের সীমান্ত পাড়ি দিয়ে পুর্ব পাকিস্তান থেকে আসছিল। এই অন্তঃপ্রবাহ এত অপ্রত্যাশিত এবং এবং এত দ্রুত ছিল যে শুরু থেকেই ইন্ডিয়ার অর্থনৈতিক এবং প্রশাসনিক সম্পদের উপর একটি বিশাল পরিমাণ চাপ পড়েছিল।এভাবে মার্চের শেষভাগের শুরু থেকে, কয়েক মাসের মধ্যে ইন্ডিয়াতে শরনার্থীদের সর্বমোট অন্তঃপ্রবাহ প্রায় চল্লিশ লাখ ঘরে চলে গিয়েছিল, এবং আজকে এটি ইতোমধ্যে ৯০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে, পুর্ব পকিস্তানে ফেরার কোনরুপ নিশানা ছাড়াই। প্রতিদিন গড় প্রবাহ এখনও ৩০,০০০ থেকে ৫০,০০০ পর্যন্ত চলছে, এবং যদি এই হার এই মাত্রায় চলতে থাকে, আমাদের হাতে বছর শেষে ১২০ লাখের উপর শরনার্থী থাকতে পারে।
অধিক সংখ্যক শরনার্থীর ত্রাণ সরবরাহের জন্য বিশাল কর্মযজ্ঞ আয়োজনের জন্য, ইন্ডিয়া সরকারকে কলকাতায় একজন খুব অভিজ্ঞ একজন কর্মকর্তার অধীনে বিশেষ শাখা সচিবালয় স্থাপন করতে হয়েছিল। এই সচিবালয়ের মূল উদ্দেশ্য ছিল কেন্দ্রীয় পুনর্বাসন বিভাগের নির্বাহী চৌকি এবং তাদের প্রয়োজনীয় অর্থনৈতিক এবং অন্যান্য দরকারি ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছিল তাৎক্ষনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নের জন্য যেমন ত্রাণ বিষয়ক ব্যবস্থাসমুহ, খাদ্য এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সরবরাহের যেমন চিকিৎসা সরবরাহ জন্য ক্যাম্প স্থাপন করা এবং অন্যান্য প্রাদেশিক সরকার এবং অন্যান্য সম্পর্কিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাথে সমন্বয় স্থাপন। এছাড়াও, দিল্লিতে একটি কেন্দ্রীয় বিভাগ স্থাপন করা হয়েছে একটি কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির সাথে যার কাজ হল সরকারি নীতিমালার বাস্তবায়ন এবং এই নিমিত্তে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রচেষ্টার জন্য সংযোগ, পরামর্শ এবং সহায়তা প্রদান।
ইন্ডিয়া সরকার ডিসেম্বর ১৯৭১ এর শেষ পর্যন্ত এই সমস্ত ত্রাণ কার্যক্রমের জন্য ২৬০ কোটির (ইউএস ডলার ৩৬০ মিলিয়ন) বরাদ্দ রেখেছে। এর মধ্যে রয়েছে প্রত্যাশিত ৫০ কোটির ( ইউএস ডলার ৬৯ মিলিয়ন) বৈদেশিক সাহায্য। যাইহোক, এখন শিবিরে অবস্থানরত ৮০ লক্ষ শরনার্থীর জন্য ( যেটি, এখন বিবেচনা করা হচ্ছে, কিছুক্ষনের মধ্যেই বর্ধমান অন্তঃপ্রবাহের কারণে এই সংখ্যায় পরিণত হবে এবং যারা বন্ধু এবং স্বজনদের কাছে এসেছিল তাদের চাহিদাও এখন সরকার পূরণ করবে) এটি অনুমান করা হচ্ছে যে ছয় মাস সময়ের মধ্যে আমাদের দরকার পড়বে ৪১৯ কোটি বা ইউএস ডলার ৫৫৮ মিলিয়ন। সর্বমোট ৪,১৮৭.৮৯ মিলিয়ন অথবা বলা যায় ৪,১৮৮ মিলিয়ন। এটি ৫৫৮ মিলিয়ন ইউএস ডলারের সমতুল্য।
এই হিসাবের সকল খুঁটিনাটি বিষয়বস্তু ইন্ডিয়াতে সতর্কতার সাথে করা হয়েছে এবং দিল্লিতে কেন্দ্রীয় সরকারকে যথাযথভাবে জানানো হয়েছে।
বিভিন্ন এলাকায় চাপ কমানো জরুরি হয়ে পড়েছে যেখানে এটি অসহনীয় হয়ে পড়েছে, এবং তাই ইন্ডিয়া সরকারকে ত্রিশ লক্ষ শরনার্থীকে কেন্দ্রিয় শিবিরের অভ্যন্তরে স্থানান্তর করতে হয়েছিল যেখানে কেন্দ্রের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে সঠিকভাবে আয়োজিত ব্যবস্থা করা হচ্ছিল।
ইন্ডিয়াতে ব্যাপকহারে অন্তঃপ্রবাহ সত্ত্বেও, আমরা আমদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি শরনার্থীদের কিছুটা হলেও আশ্রয় প্রদানের, আমাদের সম্ভাব্য সকল প্রকার উপায়ে। এটিতে আমরা জাতিসংঘের কেন্দ্রবিন্দু থেকে খুবই উল্লেখযোগ্য পরিমাণ সহায়তা পেয়েছি প্রয়োজনীয় আশ্রয় উপকরণ ক্রয় করতে।ফলাফলস্বরুপ ৫০ শতাংশ পরিবারকে উন্নত ঘরে স্থানান্তর করা হবে, এবং বাকিরা তাবু, পলিথিন শিট, ত্রিপল ইত্যাদির সুবিধা পাবে।

পর্যাপ্ত চিকিৎসা এবং জনস্বাস্থ্যের সুবিধাসমুহেরও শুরু থেকেই ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সেকারণেই আমরা গ্রীষ্মের মাসগুলোতে কলেরার প্রাদুর্ভাবকে মোকাবেলা করতে সমর্থ হয়েছিলাম যখন শরনার্থীরা তাদের সাথে ব্যাপকহারে বিস্তৃত সংক্রমণ নিয়ে এসেছিল এবং এটির আশেপাশের সকল পল্লি এলাকায় ছড়িয়ে দেয়ার হুমকিও বহন করছিল। সেপ্টেম্বর ২০, ১৯৭১ পর্যন্ত কলেরার ৪৬,৭৫২টি ঘটনা নথিভুক্ত করা হয়েছে এবং এদের মধ্যে ৫,৮৩৪ জন মানুষ হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং শিবিরে মৃত্যুবরণ করেছে। এই প্রচেষ্টায়ও আমরা সকল আন্তর্জাতিক সংস্থার সাহায্যের অতিশয় তারিফ করি যারা অতীব জরুরিভাবে সকল সম্ভাব্য সহায়তা প্রদান করেছেন।
ইন্ডিয়া সরকার শিবিরগুলোতে ছোট ছোট বাচ্চাদের মাঝে অপুষ্টির ঘটনা নিয়েও বিশেষভাবে চিন্তিত। সুতরাং উচ্চ পর্যায়ের চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের একটি দল, অল ইন্ডিয়া মেডিকেল সাইন্সের প্রধানের অধীনে স্থাপন করা হয়েছে এই সমস্যা জরিপ করার জন্য এবং দক্ষতার সাথে এই সমস্যা মোকাবেলা করার জন্য কর্মসুচি সুপারিশ করার জন্য। ইউনিসেফ সংস্থাগুলোর কাছেও অনুরোধ করা হয়েছিল সম্পুরক প্রতিপালনের কর্মসুচি সুপারিশ করার জন্য। এই প্রসঙ্গে সকল প্রস্তাবনা ইন্ডিয়া সরকার দ্বারা অবশেষে চূড়ান্ত করা হয়েছে এবং “অপারেশন লাইফলাইন” শুরু করা হয়েছে। এই কর্মসুচি বিশ লক্ষের বেশী বাচ্চার দেখাশোনা করবে এবং এতে খরচ হবে প্রায় তিন কোটি টাকা (ইউএস ডলার ৪.১ মিলিয়ন)। সকল কর্মসুচি প্রনয়নের সময় পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রতিষেধক এবং চিকিৎসা সরঞ্জামাদি উভয়ের প্রতি পুর্ন মনোযোগ দেয়া হয়েছে। সকল চিকিৎসা এবং এর পরিপূরক প্রয়োজনীয়তায়, এই দেশেই, ইন্ডিয়ার সকল জায়গা থেকে কারিগরি বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে আমরা সর্ব বিষয়ে ভাল সাড়া পেয়েছি। এই কারণে আমাদের বাহিরের সংস্থাগুলো থেকে প্রাপ্ত কিছু অত্যন্ত মহৎ প্রস্তাবকে সবিনয়ে প্রত্যাখান করতে হয়েছে, যদিও আমরা এই প্রস্তাবগুলোর পেছনের উদ্দিপনাকে তারিফ করি।
শরনার্থীদের খাদ্য প্রদানের জন্য, ইন্ডিয়া সরকার প্রাপ্তবয়স্ক এবং বাচ্চাদের জন্য পুষ্টি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুসারে খাদ্য বরাদ্দের অনুপাত নির্ধারন করেছে। এভাবে প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক প্রতিদিন মাথাপিছু ৩০০ গ্রাম চাল, ১০০ গ্রাম আটা, ১০০ গ্রাম ডাল, ২৫ গ্রাম ভোজ্যতেল, এবং ২৫ গ্রাম চিনি বরাদ্দ পাবে; এবং প্রতিটি ১-৮ বছর বয়স্ক শিশু প্রতিদিন মাথাপিছু ১৫০ গ্রাম চাল, ৫০ গ্রাম আটা, ৫০ গ্রাম ডাল, ১২ গ্রাম ভোজ্যতেল এবং ১৫ গ্রাম চিনি বরাদ্দ পাবে। এছাড়াও, প্রত্যেক শরনার্থীর জন্য শাকসবজি, মসলা, জ্বালানি, সাবান ইত্যাদি ক্রয় করার জন্য প্রতিদিন মাথাপিছু একটি ক্ষুদ্র অংকের নগদ টাকা প্রদান করা হবে। সমানভাবে, বস্ত্রের জন্য, শিবিরে উপযুক্ত ব্যক্তিদের সুতি অথবা উলের কাপড় দেয়া হবে। শীতের আগমনের সাথে এখন উলের কম্বলের জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজন যেটির জন্য আমরা বিশেষভাবে কেন্দ্রীয় সরকারকে অনুরোধ করেছি।
এই শিবিরগুলোতে বাচ্চাদের প্রাথমিক শিক্ষাপ্রদানের ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়েছে শরনার্থী শিক্ষকদের দ্বারা যাদের এই কাজের নিদর্শস্বরুপ দক্ষিনা প্রদান করা হবে।স্থায়ী শিবিরগুলোতে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য দৃশ্য-শ্রাব্য শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যাইহোক, কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়নি এই তথ্যের প্রেক্ষিতে যে শীঘ্রই এই শরনার্থীদের ( যারা বিদেশী হিসেবে নিবন্ধিত) দেশে ফিরতে হবে। শরনার্থীরা নিজেরাই শিবিরগুলোতে আত্ম-নির্ভরশীলতার ভিত্তিতে বিনোদন এবং কল্যাণমূলক কার্যক্রম চালিয়ে নেয়ার জন্য অনুপ্রাণিত হচ্ছে। অবিবাহিত মহিলা নিবাস এবং অনাথাশ্রমও এই শরনার্থী শিবিরগুলোর নিকটে স্থাপন করা হয়েছে এই মহিলা এবং বাচ্চাদের তাদের নিজস্ব পরিবেশে এবং আত্মীয়তা এবং সংস্কৃতির সূত্রে রাখার জন্য।
আমরা ইন্ডিয়ায় শরনার্থীদের ত্রাণ সহায়তা প্রদানের জন্য বিভিন্ন সরকারের, যাদের মধ্যে জাতিসংঘের সংস্থাগুলো এবং অন্যান্য স্বেচ্ছসেবি সংগঠনগুলো ও আছে, এই পর্যন্ত কড়া প্রচেষ্টাগুলোর জন্য গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। এই মুহুর্তে, সর্বশেষ সংখ্যার হিসেবে সর্বমোট ব্যয় হয়েছে প্রায় ১৫৪ মিলিয়ন ইউএস ডলার।
এটি, যাইহোক, কমিটি নিজেই উপলব্ধি করবে, এবং বিশিষ্ট হাই কমিশনার তার বক্তব্যে গতকাল নির্দেশ করেছিলেন, এই অঙ্ক প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল যেটি আজকে দাঁড়িয়েছে ৫৫৮ মিলিয়ন ইউএস ডলার। এমনকি খরচ হওয়া ১৫৪ মিলিয়ন ডলার এর মধ্যে আমরা এইপর্যন্ত নগদ পেয়েছি মাত্র ২৫ কোটি (ইউএস ডলার ৩৪৭ মিলিয়ন)
জনাব, আমি সংক্ষেপে সকল ব্যবস্থা সম্পর্কে বর্ননা দিয়েছি যেটি ইন্ডিয়া সরকারকে গ্রহণ করতে হয়েছে এই ব্যাপক সমস্যার সাথে মোকাবেলা করার জন যেটি হঠাৎ এর উপর এসে পড়েছে। ইন্ডিয়াকে এই বিস্ময়কর কাজ সম্পুর্ন মানবিক খাতিরে নিতে হয়েছিল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উপর বিশ্বাস করে, শরনার্থীরা যাদের মূল দায়িত্ব ছিল। কিন্তু অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং প্রশাসনিক যে চাপ এই গুরুতর সঙ্কট ইন্ডিয়া এবং তার অর্থনীতি এবং সাধারণ উন্নয়নের উপর আরোপ করেছে, আমি নিশ্চিত যে, এই সমস্যার অসামান্য ব্যাপকতার উপর এটি বিবেচিত হবে। সুতরাং, আমরা বিশ্বাস করি, আপনাদের উত্তম যোগাযোগের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যথাযথভাবে এই সমস্যার ব্যাপকতা উপলব্ধি করবে। অবশ্যই সকল পরিস্থিতির চূড়ান্ত প্রকৃত সমাধান শুধুমাত্র শরনার্থীদের অস্থায়ী ত্রাণ সরবরাহের মধ্যে সীমিত নয়, লাখো শরনার্থীর জন্য, সেটি যত বৃহৎ অনুপাতেই হোক না কেন, এই লাখো শরনার্থীদের নিরাপত্তা, শান্তি ও রাজনৈতিক সন্তোষের পরিস্থিতির মাঝে তাদের বাড়িতে ফিরিয়ে নিতে সমর্থ করার জন্য স্থায়ী সমাধান খোঁজার মাঝে রয়েছে। এর জন্য, জনাব, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবিলম্বে তাদের বিবেককে জাগ্রত করতে হবে এবং সচেষ্ট প্রচেষ্টা গ্রহণ করতে হবে, পাছে এই বিস্ফোরক পরিস্থিতি আরও খারাপ হয় এবং অপরিবর্তনীয় দিকে মোড় নেয়।
তাহলে আপনার অনুমতি নিয়ে, জনাব সভাপতি, আমি কি এই শ্রদ্ধেয় দলের কাছে অনুরোধ করতে পারি বিশদভাবে বিশ্বের কাছে আবেদন করার জন্য যাতে তারা এই পরিস্থিতে প্রয়োজন মত ব্যাপক ত্রাণ সহায়তা দিয়ে এই ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবেলার দায়িত্ব হাতে নেয় এবং পাকিস্তান সরকারকে তাগিদ প্রদান করে একটি বিশ্বাসের বাতাবরণ সৃষ্টির জন্য যেটি এই লাখো দুর্ভাগ্যপীড়িত মানুষের স্বাধীন প্রত্যাবাসনে সাহস প্রদান করবে যাতে তারা শান্তি এবং নিরাপত্তার সাথে তাদের বাসভূমিতে ফিরতে পারে।