You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.06.16 | পূর্ব বাংলায় সাহায্যের জন্য জাতিসংঘ মহাসচিবের আবেদন | জাতিসংঘ ডকুমেন্টস - সংগ্রামের নোটবুক
শিরোনাম সূত্র তারিখ
পূর্ব বাংলায় সাহায্যের জন্য জাতিসংঘ মহাসচিবের আবেদন জাতিসংঘ ডকুমেন্টস ১৬ জুন, ১৯৭১

১৬ ই জুন ১৯৭১ প্রকাশিত জাতিসংঘের মহাসচিব উথান্ডের পূর্ব পাকিস্থানের সহায়তা চেয়ে আবেদন নিন্মরুপ –

স্মরন করা যেতে পারে ২২ এপ্রিল, আমি প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানকে পূর্ব পাকিস্থানের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্দেগ প্রকাশ এবং মানবিক দৃস্টিকোন থেকে পূর্ব পাকিস্থানের দুর্দশাগ্রস্থ জনগনের জন্য জরুরী ত্রান আনার জন্য তার সরকারকে জাতিসংঘ পরিবারের সকল সংগঠন থেকে সাম্ভাব্য সহায়তা প্রদানের প্রস্তাব দিয়ে একটি চিঠি লিখি। ৩ মে ১৯৭১ এ প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান একটি চিঠিতে বলেছেন পাকিস্থানের জন্য আমার উদ্দেগ সর্ম্পকে তিনি অবগত হয়েছেন এবং আরো বলেন তিনি থাকাকালীন বিদ্যমান অবস্থায় ঔষধ, খাদ্যসামগ্রি এবং নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সরবরাহ স্বাভাবিক ছিল এবং ভবিষ্যতে সাম্ভাব্য আন্তজার্তিক সহায়তার একটি মুল্যায়ন – যা প্রয়োজন হতে পারে তা প্রস্তুত করা হচ্ছে। ১৭ ই মে প্রেসিডেন্ট এর অর্থনৈতিক উপদেস্টা আমাকে ত্রাণ সামগ্রীর পরিমান ব্যাখ্যা করেন যা পাকিস্থানের স্থায়ী প্রতিনিধি থেকে প্রাপ্ত- পরবর্তী ২২ শে মে পাঠানো হবে।

একই সময়ে পূর্ব পাকিস্থান সংলগ্ন ভারতীয় প্রদেশে বড় অংকের অব্যাহত বিশেষ করে নারী ও শিশু শরণার্থির প্রবাহ সম্পর্কে বিশ্ব সম্প্রদায়ের উদ্দেগ পরিলক্ষিত হয়। আমি সরকার, আন্ত সরকার এবং বেসরকারী সেই সাথে ব্যাক্তিগত সুত্রকে এই দু:খ জনক পরিস্থিতি উপশম করার জন্য জরুরী মানবিক সহায়তা সরবরাহর আবেদন করি। এবং আমি এটাও সিদ্ধান্ত নেই যে, উদবাস্তুদের জন্য জাতিসংঘ হাইকমিশনার এর জাতিসংঘের সব সংগঠন ও কর্মসুচি সহায়তা সমন্বয়ের কেন্দ্র বিন্দু হিসেবে কাজ করা উচিত। আমি খুবই কৃতগ্ন যে খুবই ইতিবাচক এবং উদার প্রতিক্রিয়ায় আমার আবেদন গৃহীত হয়েছে এবং আন্তজার্তিক সম্প্রদায় থেকে যা সমস্ত সহায়তা দেয়া হয়েছে তা কার্যকর করতে যে পদক্ষেপ আয়োজন করা হয়েছে তাতে আমি সন্তুস্ট। খুব তারাতারি ২২ মে আমি পাকিস্থানের স্থায়ী প্রতিনিধি হতে চিঠি পেলাম। আমি আন্ত এজেন্সি বিষয়ক সহকারি সেক্রেটারি কে ত্রাণ সামগ্রী জাতিসংঘের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্থানে কার্যকর করার জন্য সরকারি কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনার জন্য পাকিস্থান ভ্রমন করতে বলি। তাঁকে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান অভ্যার্থনা জানান এবং উভয় সরকারের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের মধ্যে ইসলামাবাদ এবং ঢাকা উভয় স্থানে আলোচনা অনুস্ঠিত হয়। সেখানে ত্রান বিতরন পদ্ধতি কি হওয়া উচিত তা নিয়ে একটি পূর্ন চুক্তি ছিল এবং প্রেসিডেন্ট আমার উদ্দেগের অংশিদার হন যে জাতিসংঘকে একটা অবস্থানে থাকতে হবে যেন আন্তজার্তিক সম্প্রদায় এবং দাতা গোস্ঠিরা এই আশ্বাসটা পায় যে, ত্রাণ সামগ্রীর সবটাই তার উদ্দিস্ঠ গন্তব্য স্থল পূর্ব পাকিস্থানের মানুষের কাছে পৌছেছে। প্রেসিডেন্ট জাতিমংঘের সকল ব্যাবস্থাকে স্বাগত জানালেন এবং আমি একজন প্রতিনিধি নিযুক্ত করলাম

পশ্চিম পাকিস্থানে জাতিসংঘের সকল এজেন্সি এবং কর্মসুচির সুস্থ সমন্বয়ের লক্ষ্য কেন্দ্র বিন্দু হিসেবে কাজ করার জন্য। পাকিস্থানের প্রেসিডেন্ট আমাকে আসস্ত করেছে যে জাতিসংঘ যে সমস্ত ব্যাক্তি দ্বারা এই ত্রাণ কর্মসুচির পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়ন করবেন তাদের তার সরকার পূর্ন সহযোগীতা করবেন। পাকিস্থানের স্থায়ী প্রতিনিধির একটি চিঠিতে সহায়তার প্রয়োজনিয়তার মুল্যায়ন এবং বর্তমানে এই ধরনের সহায়তার আরও মুল্যায়ন পাকিস্থান সরকার করছে এবং জাতিসংঘের সংস্থা গুলো খাদ্য এ ত্রাণ সামগ্রি পরিবহনে দ্রুততা বিষয়ে উদ্দিগ্ন তা জানান। যদিও উদবাস্তু দের জন্য হাইকমিশনার কেন্দ্রবিন্দু তে থেকে একটি আলাদা কার্যক্রম পুর্ব পাকিস্থান থেকে ভারতে আসা উদ্বাস্তুদের জন্য পরিচালনা করছে, দুটি কার্যক্রমই অবশ্যই সম্পর্ক যুক্ত যেন পুর্ব পাকিস্থানের অবস্থার উন্নতি হয় যাতে শরনার্থির প্রবাহ বন্ধ ও ফেরতের সম্ভাবনা থাকে। আমি নিশ্চিত যে সরকারী, আন্ত সরকারী এবং বেসরকারী সংগঠন এবং বেসরকারি প্রতিস্ঠান পুর্ব পাকিস্থানের দুদর্শা গ্রস্থ জনগনের উপশমে প্রয়োজনিয়তার সর্ম্পকে সচেতন আছে এবং আমি তাদের কাছে এই সকল অবদান নগদে দিতে বলি এবং এই মানবিক প্রচেস্টার প্রতি সচেস্ট হতে বলি। আমি আশা করি যে, জাতিসংঘের বৃহত্তম প্রয়োগ পদ্ধতির ব্যাপ্তি বিষয়ে দাতারা উপকৃত হতে পারেন বিশেষত ঐ সব খাদ্য কর্মসুচি এবং ইউনিসেফ, যে সমিতি গুলি ত্রান বিষয়ক পরিকল্পনা ও সংগঠন করছে যা পাকিস্থান সরকার স্বাগত জানিয়েছে। আমি বিশ্বাস করি যে বিশ্বসম্প্রদায় মানব সংহতি এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার উপলক্ষে আবারও জেগে উঠবেন যা তারা সনদে অংগীকার করেছেন।