You dont have javascript enabled! Please enable it!
শিরোনাম সূত্র তারিখ
প্যারিসে অনুষ্ঠিত উনষাটতম আন্তঃ পার্লামেন্টারী সম্মেলনের কার্যবিবরণী আন্তঃ পার্লামেন্টারী সম্মেলনের কার্যবিবরণী ৩-১০ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১

প্যারিসে অনুষ্ঠিত ঊনষাটতম আন্তঃ সংসদীয় সম্মেলনের কার্যবিবরণী
২ নম্বর সারাংশ হতে উদ্ধৃত
উদ্বোধনী অধিবেশন
প্যারিস, ৩-১০ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১
সেপ্টেম্বর ৩, শুক্রবার সকাল
সম্পূরক আইটেম গ্রহণে বিবেচনার জন্য ভোট গ্রহণ
সম্মেলনের সভাপতি বলেছেন, ভারতীয় দল বাংলাদেশের বিষয়ে একটি সম্পূরক জিনিস গ্রহণের জন্য অনুরোধ করেছেন। তিনি উল্লেখ করেন, এই অনুরোধ সম্মেলন দ্বারা গৃহীত হওয়ার জন্য দুই- তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রয়োজন। জনাব জি এস ঢিল্লন(ভারত), সম্পূরক জিনিসের প্রস্তাবে ব্যাখ্যা করেছেন যে, পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তান ১,১০০ মাইলের বেশি দুরত্ব দ্বারা বিভক্ত ছিল এবং দুই অংশের মধ্যে সংস্কৃতি, বর্ণ ও ভাষার পার্থক্য ছিল। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর থেকে সেখানে অনেক বিষয়ে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের মধ্যে মত পার্থক্য দেখা দেয়। প্রকৃতপক্ষে, কিছু বছর পূর্বে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ পশ্চিম পাকিস্তানের ভাষা গ্রহণ না করার জন্য সংগ্রাম করেছে। দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৫৬ শতাংশ পূর্ব পাকিস্তানে বসবাস করতেন।
সামরিক শাসনের কয়েক বছর পরে জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পূর্ব পাকিস্তানে আওয়ামীলীগ জাতীয় পরিষদে ১৬৯ এর মধ্যে ১৬৭ টি আসনে এবং প্রাদেশিক পরিষদে ৩০০ আসনের মধ্যে ২৮৮ টি আসনে জয়লাভ করে। মার্চ মাসে সংসদ তলব করার আগে, পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট পূর্ব পাকিস্তানে সেনা মোতায়েন এবং সংসদ অধিবেশন স্থগিত করেন।
সামরিক অভিযানের ফলে প্রায় ৫ লাখ মানুষ নিহত হয় ও প্রচন্ড ভীতি নিয়ে উদ্বাস্তুরা ভারত-বাংলাদেশের সীমান্তে প্রতি সপ্তাহে ৫০,০০০ জন করে আশ্রয় নিচ্ছে এবং প্রায় সাড়ে ৮ কোটি মানুষ বর্তমানে ভারতের শরণার্থী শিবিরে বসবাস করছে। কিছু কিছু প্রদেশে, উদ্বাস্তুর সংখ্যা স্থানীয় জনসংখ্যাকে ছাড়িয়ে গেছে।
প্রথমত, এটি একটি মানবিক সমস্যা এবং অনুমান করা হয় যে, এই পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নিতে ভারতের ছয় মাসের জন্য কমপক্ষে ৬০ কোটি ডলারের প্রয়োজন হবে। ভারত এ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক সংগঠন এবং অন্যান্য উৎস থেকে শুধুমাত্র ১৫ কোটি ডলার পেতে সক্ষম হয়েছে। তিনি প্রতিনিধিদের এটিকে একটি বৈশ্বিক সমস্যা হিসেবে গ্রহণ করতে আহবান জানান এবং বলেন যে, এটি ভারতের একার পক্ষে সমাধান করা সম্ভব নয়। কোন দেশ তার অর্থনীতির মারাত্মক ক্ষতি সাধন ব্যতিত এই ভারী বোঝা বহন করতে পারবে না। একমাত্র স্থায়ী সমাধান ছিল শরণার্থীদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়া। এটি অর্জন করার জন্য, তাদের প্রত্যাবর্তন সম্ভব করার জন্য পাকিস্তান সরকারের উচিত অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা । তাই, শরণার্থীরা তাদের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার আগেই বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছাপূরণের বন্দোবস্ত করতে হবে।

তিউনিশিয়ার M. Ahmed Chtourou সম্পূরক আইটেমের আলোচনার বিরোধিতা এই মর্মে করেন যে, এটি পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল হবে। তিনি শরণার্থীদের প্রতি তার মহান সহানুভূতি জ্ঞাপন করেন এবং একই সাথে উল্লেখ করেন যে, অনুরূপ ঘটনা বিশ্বের অন্যান্য অংশেও ঘটে যাচ্ছে এবং সেগুলোও যদি আলোচনা করা হয় তাহলে অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা করার সময় থাকবে না। অনেক সংস্থা উদ্বাস্তুদের সমস্যা নিরসনের চেষ্টা করছে এবং পাকিস্তানের পুনরায় একসাথে আসার যে প্রচেষ্টা সেটি ইন্টার-পার্লামেন্টারি কনফারেন্সে আলোচনার ফলস্বরূপ তাদের এই প্রচেষ্টা বাধাগ্রস্থ করা উচিত হবে না।
রোল কল দ্বারা ভোট গ্রহণের সারাংশ নিম্নে দেয়া হলঃ
ভোট সংখ্যা ৫৭২
দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা ৩৮০
হ্যাঁ ভোট ৪৯৮
না ভোট ৭৪
ভোটদানে বিরত ১৯৫

সম্মেলনের সভাপতি ঘোষণা করেন যে, প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা সাধিত হয়েছে এবং অতিরিক্ত আইটেমটি গৃহীত হয়েছে। সাধারণ বিতর্কে উক্ত বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনা হবে এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিটিতে আলোচনার মাধ্যমে আরও পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যালোচনা করা হবে। সংশোধনী ৮ সেপ্টেম্বরে, বুধবার সকাল ১০ টার মধ্যে পেশ করা যেতে পারে এবং চূড়ান্ত ভোট সম্মেলন দ্বারা ১০ সেপ্টেম্বর বিকেলের মধ্যে গৃহীত হবে।
সম্মেলনের সভাপতি বলেন যে, পূর্ব পাকিস্তানের বিষয়ে এজেন্ডায় একটি অতিরিক্ত আইটেম যোগ করার ব্যাপারে ভারতীয় দলের অনুরোধক্রমে রোল কল ভোটের ফলাফল ঘোষণায় একটি ভুল হয়েছে। ফলাফল ছিলঃ
ভোট সংখ্যা ৭৬৭
দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা ৫১০
হ্যাঁ ভোট ৪৯৮
না ভোট ৭৫
ভোটদানে বিরত ১৯৫

ফলস্বরূপ, দুই- তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে ব্যর্থ হওয়ায় সম্মেলন অতিরিক্ত আইটেমটি গ্রহণ করে নি।
চতুর্থ পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন
শনিবার, সেপ্টেম্বর ৪, সকাল
কনফারেন্সের সভাপতি আকিলে পেরেতি’র আসনে উপবিষ্ট থাকা অবস্থায় সভা শুরু হয়।
সম্পূরক আইটেমটি গ্রহণে বিবেচনার জন্য ভোট গ্রহণ
সম্মেলনের সভাপতি গত সকালে ভারতীয় প্রতিনিধিদলের দ্বারা পূর্ব পাকিস্তানের উদ্বাস্তুদের পক্ষে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার বিষয়ে উপস্থাপিত দৃঢ় সংকল্পের উপর গৃহীত রোল কল ভোটের ফলাফলের প্রতি ইঙ্গিত করেন। তিনি বলেন যে, দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার মাধ্যমে সম্পূরক আইটেমটি এজেন্ডায় অন্তর্ভুক্ত হয়, কিন্তু পরে এটি আবিষ্কৃত হয় যে, সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজনীয় ভোট গণনা হিসেব করতে ভুল হয়েছে এবং ভোটদানে বিরতদের এই উদ্দেশ্যে বিবেচনা করা হয়েছে, সেই ভিত্তিতে এই প্রস্তাব গ্রহণ করা হয় নি। পরবর্তীতে জনাব ঢিল্লন(ভারত) প্রতিবাদ করেন এবং বলেন যে, প্রথম সিধান্ত বজায় রাখা উচিত ছিল।
এটি প্রতীয়মান যে, নির্দিষ্ট প্রতিনিধিদের তাঁরা যেভাবে ভোট প্রদান করেছেন এর সম্ভাব্য ফলাফল সম্পর্কে পর্যাপ্ত নির্দেশনা দেয়া হয় নি। অতএব তিনি প্রকৃত রোল কল ভোট অকার্যকর বিবেচনার প্রেক্ষিতে একটি সহজ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটের জন্য সম্মেলনের কাছে প্রস্তাব পেশ করেন। এটি যদি কনফারেন্স দ্বারা অকার্যকর বলে গণ্য করা হয় তাহলে ভারতের অনুরোধে একটি নতুন ভোট অনুষ্ঠিত হবে। তিনি যোগ করেন যে, যা ঘটেছিল এর জন্য ইউনিয়নের নতুন নিয়মের দায়িত্ব নিতে হবে।

রোল কল দ্বারা ভোট গ্রহণের সারাংশ নিম্নে দেয়া হলঃ
ভোট সংখ্যা ৭৫৮
নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা ৩৮০
হ্যাঁ ভোট ৬৪০
না ভোট ৮৩
ভোটদানে বিরত ৩৫
সম্মেলনের সভাপতি ঘোষণা করেন যে, প্রয়োজনীয় নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেছে। অতএব, পূর্ববর্তী দিনে গৃহীত ভোট অকার্যকর ঘোষণা করা হল। তাই কনফারেন্সকে ভারতীয় প্রতিনিধিদলের প্রস্তাবিত আইটেমটি এজেন্ডায় অন্তর্ভুক্তির ব্যাপারে আবার ভোট প্রদানের জন্য বলা হবে। এই ভোটে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন এবং ভোট গণনায় ভোটদানে বিরতদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
সম্মেলনের সভাপতি ঘোষণা করেন যে, প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রাপ্ত হয়েছে এবং ভারতীয় প্রতিনিধিদলের অনুরোধে এজেন্ডায় অন্তর্ভুক্তির জন্য গৃহীত হবে। ফলাফল নিম্নরূপঃ
ভোট সংখ্যা ৭৭৫
দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা ৫১৬
হ্যাঁ ভোট ৬২৭
না ভোট ৫৯
ভোটদানে বিরত ৮৯
সম্মেলনের সভাপতি ঘোষণা করেন যে, প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জিত হয়েছে এবং আইটেমটি ভারতীয় প্রতিনিধিদলের অনুরোধক্রমে এজেন্ডায় অন্তর্ভুক্তির জন্য গ্রহণ করা হবে। এবং এটি শুক্রবার সকালে তার ঘোষিত পদ্ধতি অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জর্ডানের জনাব রিমাওি ফিলিস্তিনের শরণার্থী সমস্যায় তার বাস্তব অভিজ্ঞতার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতীয় প্রতিনিধিদলের পাকিস্তানী শরণার্থী সমস্যায় সমর্থন দিয়েছেন।

ষষ্ঠ পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন
শনিবার, সেপ্টেম্বর ৪, সন্ধ্যা
সভা শুরু হয় রাত ৯.৫০ এ আসনে অধিষ্ঠিত জনাব মাকাদি (ইউনাইটেড আরব রিপাবলিক)(কনফারেন্সের একজন সহ-সভাপতি)দিয়ে।
জনাব ঢিল্লন বলেন যে, ভারত মহাসাগরে কেউ উত্তেজনা তৈরি করুক এটা ভারত চায় না। ভারত একটি পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত অঞ্চল এবং শান্তি ও সহযোগিতার একটি ক্ষেত্র রূপে পরিচিত হতে চায়। দুর্ভাগ্যবশত, পূর্ব বাংলায় একটি গণহত্যা সংঘটিত হয় এবং উপরন্তু সেখানে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট দ্বারা ভারতের বিপক্ষে যুদ্ধের হুমকি পুনরাবৃত্তি হয়। সিলন (শ্রীলংকা)-এর জনাব নভরত্নম মন্তব্য করেন যে, আন্তঃ পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন যদি ভিয়েতনাম ও মধ্যপ্রাচ্যের নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার আগেই পরিস্থিতি বিচার করত তাহলে পৃথিবী অনেক যুদ্ধ ও দুর্দশা এবং জীবন ও সম্পদের বিনাশ হতে রক্ষা পেত। ইউনিয়নের উচিত পাকিস্তানের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা। ইউনিয়ন যদি এই সমস্যার সমাধান না করতে পারে তাহলে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হবে। পূর্ব পাকিস্তানের পরিস্থিতি এখনো সম্ভাব্য সমাধানের পর্যায়ের বাইরে যায় নি। ইউনিয়ন যদি হস্তক্ষেপ না করেন, তাহলে পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটবে এবং এখন যা গৃহযুদ্ধ বলে বর্ণনা করা হচ্ছে তা একটি সশস্ত্র সংঘাতে পরিণত হবে এবং ভিয়েতনাম বা মধ্যপ্রাচ্যের চেয়ে একটি খারাপ অবস্থার অবতারণা ঘটবে। ইউনিয়নের শেখ মুজিবর রহমানের মুক্তির জন্য হস্তক্ষেপ করা উচিত যিনি সমগ্র পাকিস্তানের প্রধান নির্বাহী হতেন যদি ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনের পর সামরিক শাসন থেকে ক্ষমতা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে স্থানান্তরিত হত।
নেদারল্যান্ডের জনাব ডি নিয়েত বর্ণনা করেন যে, সম্মেলন দ্বারা গৃহীত জনাব ঢিল্লন দ্বারা পূর্ব পাকিস্তানের ব্যাপারে প্রস্তাবিত খসড়া রেজুলেশনের পদ্ধতির বিরুদ্ধে নেদারল্যান্ডের প্রতিনিধিদল দৃঢ়ভাবে আপত্তি জানাচ্ছে। রেজুলেশনটি সম্মেলনের কাছে দ্বিতীয়বারের মতন উপস্থাপন করা হয় এবং এখানে এটি খুব বিপজ্জনক নজির হিসেবে গণ্য করা হবে। যদিও উভয় সময়েই তাদের প্রতিনিধিদল রেজুলেশনটি এজেন্ডায় যুক্ত করার পক্ষে ভোট দিয়েছে। দ্বিতীয়ত, খসড়া প্রস্তাব অবশ্যই গৃহীত হবে কিন্তু পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ ও শরণার্থীদের পক্ষে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা – আইটেমটির এই শিরোনাম পরিত্যাগ করা হোক।
ইরানের জনাব রাশতি ব্যাখ্যা করেন যে, ইরানের সংসদ সমুদ্রের শান্তিপূর্ণ ব্যবহার এবং ছিনতাইয়ের ব্যাপারে জাতিসংঘ ও ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য আইন পাশ করেছে।
মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও সেখানে কোন প্রকৃত শান্তি নেই যাতে ওই এলাকার মানুষ নিরাপদে বাস করতে পারবে। যতদিন ফিলিস্তিনে বর্তমান দখল অবস্থা অব্যাহত থাকবে, ততদিন প্রকৃত শান্তি অর্জন করা সম্ভব নয়। জাতিসংঘ শান্তি আলোচনার মধ্যে একমাত্র অচলাবস্থার কারণ ছিল এই অব্যাহত দখল। পূর্ব পাকিস্থানে সমাধানের লক্ষ্যে সদস্যদল এমন কোন একশনে না যায় যা পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপের শামিল হয়।

রেজুলেশনটি প্যারিসে অনুষ্ঠিত ৫৯-তম ইন্টার-পার্লামেন্টারি কনফারেন্সে গৃহীত হয়
সেপ্টেম্বর ১০, ১৯৭১
৫৯-তম ইন্টার-পার্লামেন্টারি কনফারেন্স
পূর্ব পাকিস্তানের দুঃখজনক ঘটনা এবং সর্বনাশা অবস্থার প্রতি উদ্বেগ জানিয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব এটিকে “মানব ইতিহাসের পাতায় একটি খুব ভয়ানক কলঙ্ক” হিসেবে অভিহিত করেছেন।
এছাড়াও তিনি ভারতে লাখ লাখ পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের অভিগমন, উদ্বাস্তুদের ক্রমেই সংখ্যাবৃদ্ধি এবং পূর্ব পাকিস্তানের এরচেয়ে বৃহত্তর সংখ্যার মানুষের পরিত্যক্ত অবস্থা দেখে উদ্বিগ্ন।
তিনি ঘোষণা করেন যে, এইসব মানুষ যারা পূর্ব পাকিস্থান থেকে পালিয়েছে এবং ভারতে আশ্রয় নিয়েছে, যা সম্পূর্ণ বিশ্ব প্রাক-দখলের উৎস এবং এই শরণার্থীদের দুঃখ কষ্ট দূর করার উদ্দেশ্যে এই অনুভূতি সকল দেশকেই সমানভাবে ভাগ করে নিতে হবে।
ইতিমধ্যে গৃহীত আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানান এবং সরকার ও অন্যান্য সরকারি বা বেসরকারি সংস্থাকে শরণার্থী ত্রাণ প্রচেষ্টা এবং পূর্ব পাকিস্থানে ত্রাণ প্রোগ্রামে অকাতরে দান করার জন্য আহবান জানান।
অনুরূপভাবে সকল জাতীয় দল এবং তাদের সরকারকে উদ্বাস্তুদের তাদের নিজের মাতৃভূমিতে নিরাপদে ফিরে যাওয়ার জন্য রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিবেশ সৃষ্টি করা এবং তাদেরকে স্বাধীন অবস্থায় তাদের প্রয়োজনীয় পর্যাপ্ত জীবিকা ও নিরাপত্তা’র গ্যারান্টির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ সম্পর্কে অবহিত করতে উৎসাহ প্রদানের জন্য আহ্বান জানান।
 

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!