You dont have javascript enabled! Please enable it!
শিরোনাম সূত্র তারিখ
উপমহাদেশীয় যুদ্ধে পাকিস্তানকে দৃঢ় সমর্থন দিবে চীন। ব্রিটিশ সাংবাদিক নেভিল ম্যাক্সওয়েলের সাথে সাক্ষাতকারে চীনা প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য  স্টেটসম্যান ৪ ডিসেম্বর, ১৯৭১

পাকিস্তানকে দৃঢ় সমর্থনের ব্যাপারে চৌ এর অঙ্গীকার
এস নিহাল সিং

লন্ডন, ডিসেম্বর ৪ – পাক-ভারত যুদ্ধ সম্পর্কে চীনের অভিব্যক্তির ব্যাপারে চৌ এন লাই যা বলেছেন,তাতে পাকিস্তানকে অর্থ এবং অস্ত্র সহায়তা দেওয়ার যে গুজব রটেছিল সেটা বন্ধ হয়ে গেছে।
আগামীকাল সানডে টাইমসে প্রকাশিতব্য নেভিল ম্যাক্সওয়েলের নেওয়া চীনা প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎকারে মি. চৌ উপমহাদেশীয় যুদ্ধের ক্ষেত্রে তার দেশের কেবলমাত্র “দৃঢ় সমর্থনের” কথাই ব্যক্ত করেন।

এই দৃঢ় সমর্থনের ধরণ কী হবে সেটা অনুচ্চারিত রয়ে গেছে, যদিও তিনি এ অবস্থার জন্যে ভারতকে দায়ী করেন এবং পূর্ববঙ্গ সমস্যা উপমহাদেশে যুদ্ধের পর ও অস্থিরতা টিকিয়ে রাখার জন্যে লর্ড মাউন্ট ব্যাটেনের রেখে যাওয়া একটি টাইম বম্ব।
পূর্ব পাকিস্তান এবং তিব্বত থেকে ভারতে পালিয়ে যাওয়া শরণার্থীদের সমস্যার মধ্যে সাদৃশ্য রয়েছে বলে জানান মি. চৌ। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট নিক্সনের চীন সফরের কথা ঘোষণা করার পর দুই বছর ধরে ঝুলে থাকা ভারত-সোভিয়েত চুক্তি তড়িঘড়ি করে স্বাক্ষর করা হয়। ১৯৬২ তে ইন্দোচীন সমস্যার জন্যেও তিনি রাশিয়াকে আংশিক দায়ী করেন। মি. চৌ এর মতে,১৯৬২ সালে চীন যে পালটা আঘাত হানবে না, সেটা রাশিয়াই ভারতকে জানিয়েছিল।

এই সাক্ষাৎকার যদিও ভারত পাকিস্তান যুদ্ধের ক্ষেত্রে চীনের অবস্থানকে স্পষ্ট করে কিন্তু এটা আসলে চীনের এক ধরণের রণকৌশল কারণ পশ্চিমা বিশ্বে এই যুদ্ধের প্রতি একটি সহানুভূতিশীল প্রতিক্রিয়া ছিল।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানানো হয়,তিনি যেন মিসেস গান্ধী এবং প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়াকে যুদ্ধ বিরতির কথা বলেন। কিন্তু পাক ভারতের ক্ষেত্রে ব্রিটেনের এ ধরণের প্রভাব বিস্তারের সীমাবদ্ধতা বুঝতে পেরে হোয়াইট হল এ ধরণের পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত থাকতে চাইছিল বলে মনে হয়।

প্রবাসী ভারতীয়
ব্রিটেনে প্রবাসী ভারতীয়রা তৎক্ষণাৎ প্রতিক্রিয়া দেখাল যে তারা দেশে ফিরে গিয়ে দেশের জন্যে যুদ্ধ করতে চায় এবং ভারতীয় হাইকমিশনে প্রচুর কল আসতে লাগলো।
ভারতের পশ্চিমাঞ্চলে পাকিস্তানের অতর্কিত বোমা হামলার বিষয়টি আজকে ব্রিটিশ প্রেসের প্রায় সব রিপোর্টে এসেছে।তবু ব্যাপারটি যে সম্পূর্ণ যুদ্ধাবস্থায় পরিণত হয় নি সে ব্যাপারটাতে জোর দেয়ার প্রবণতা ও লক্ষ করা গেছে, উদাহরণ হিসেবে টাইমস লিডারের কথা বলা যায়।

অপরদিকে, দি গার্ডিয়ান,যারা উপমহাদেশের এই যুদ্ধের প্রতি সহানুভূতিশীল তাদের মতে ইয়াহিয়া-মিসেস গান্ধীর একটি বৈঠকই যুদ্ধ পুরোমাত্রায় বন্ধ করে দেয়ার একমাত্র উপায়। দি টেলিগ্রাফের মতে,ভারতীয় বিমানবন্দরে পাকিস্তানি বোমা হামলা মিসেস গান্ধীর প্রতি পাকিস্তানের সতর্কবার্তা। কিন্তু এর সম্পাদকীয় তে বলা হয়,ইয়াহিয়া চাইলে শেখ মুজিবকে মুক্তি দিয়ে পূর্ব পাকিস্তান সমস্যার একটি রাজনৈতিক সমাধান খুঁজতে পারেন।
NONA’র উদ্ধৃতি দিয়ে পিটিআই বলেছে,চীন ভারতের সম্প্রসারণবাদী মনোভাব এবং ভারতকে সোভিয়েত সমর্থনের নিন্দা জানায় এবং পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ সমস্যার ব্যাপারে নিজেদের সমর্থন জ্ঞাপন করে।
চীনের দাপ্তরিক সংবাদ সংস্থা বলছে- ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র মন্ত্রী মি.চি পেং ফেই মৌরিতানিয়ান রাষ্ট্রদূত কর্তৃক প্রদত্ত এক সংবর্ধনায় এসব বলেন। মৌরিতানিয়ার একাদশতম স্বাধীনতা বার্ষিকীতে মোহাম্মদ কুইদ সিদি আলি বলেন- একজন ভারতীয় নেতা পূর্ব পাকিস্তান থেকে পাকিস্তানি সৈন্য প্রত্যাহারের যে দাবি জানিয়েছেন তা অযৌক্তিক। ভারত কর্তৃক পাকিস্তানের মাটি দখল করা কি নির্লজ্জতার পরিচয় নয়? এরকম দাবি ভারতীয়দের সম্প্রসারণবাদী মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ বলে তিনি ঘোষণা করেন।
 

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!