You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.12.04 | বাংলাদেশ প্রশ্নে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে গণচীনের প্রতিনিধি মিঃ হুয়াং হুয়ার ভাষণ | চায়না,পাকিস্তান এ্যন্ড বাংলাদেশ - সংগ্রামের নোটবুক
শিরোনাম সূত্র তারিখ
বাংলাদেশ প্রশ্নে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে গণচীনের প্রতিনিধি মিঃ হুয়াং হুয়ার ভাষণ চায়না,পাকিস্তান এ্যন্ড বাংলাদেশ ৪ ডিসেম্বর,১৯৭১

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে চায়না প্রতিনিধি হুয়াং হু এর বিবৃতি
ডিসেম্বর,১৯৭১
ইদনীংকালে ভারতীয় সরকার কোনো গোপনীয়তা ছাড়াই পশ্চিম পাকিস্তান আক্রমণ করার জন্য সেনা পাঠাচ্ছে এবং বিশাল পরিসরে সশস্ত্র যুদ্ধ ঘটাচ্ছে। এইভাবেই ভারত পাকিস্তান উপমহাদেশ ও এশিয়ার মাঝে সম্পর্ক ক্রমশ বিরক্তিকর হয়ে উঠলো।এ ব্যাপারে চায়না সরকার ও জনসাধারণ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করলো এবং পরিস্থিতির উন্নয়নের আশা ব্যক্ত করলো।
১)পশ্চিম পাকিস্তানের আগ্রহ পুরোপুরিভাবেই পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নিবদ্ধ ছিলো,যেখানে কিনা নাক গলানোর অধিকার কারোরই নেই।পশ্চিম পাকিস্তানের আগ্রহের অজুহাতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সশস্ত্র হামলা চালানো ভারতীয় সরকারের জন্য অবৈধ.
২)ভারতীয় সরকার দাবী করলো তারা পশ্চিম পাকিস্তানে আত্মরক্ষার উদ্দেশ্যে সেনাবাহিনী প্রেরণ করেছে। এটি নিছক বেপরোয়া যুক্তি।The facts show that it is a India which has committed aggression against Pakistan and not Pakistan which has ‘menanced’ the security of India.ভারতীয় সরকারের যুক্তি অনুসারে,অন্য কোনো দেশকে আক্রমণ করার জন্য যেকেউ “আত্মরক্ষা”র অজুহাত ব্যবহার করতে পারে।এ ক্ষেত্রে,বিভিন্ন দেশের সার্বভৌম ক্ষমতা ও রাষ্ট্রাধীন অখন্ডতার নিশ্চয়তা কি?
৩)ভারতীয় সরকার দাবী করলো,সেনাবাহিনী পাঠানোর উদ্দেশ্য হলো পশ্চিম পাকিস্তানকে আক্রমণ করে পশ্চিম পাকিস্তানের শরণার্থীদের সাহায্য করে তাদের নিজ দেশে পাঠানো।এটি নিতান্তই অসমর্থনীয়।বর্তমানে তিব্বত,চায়না থেকে বিশাল সংখ্যায় তথাকথিত “আশ্রয়প্রার্থী”ভারতে আছে,ভারতীয় সরকার দালাইলামাকে পরিচর্যা করছেন যিনি কিনা তিব্বতীয় পাল্টা বিপ্লব বিদ্রোহের প্রধান। ভারতীয় সরকারের দাবী অনুসারে,তারা কি এর উপর ভিত্তি করে চায়নার বিরুদ্ধেও হামলা চালাবে?
৪)পাকিস্তানি সরকার পর্যায়ক্রমে দুইপাশের সীমান্ত থেকে সশস্ত্র বাহিনী প্রত্যাহার ও বিচ্ছিন্ন করার এবং পশ্চিম পাকিস্তানের শরণার্থীদের স্থায়ী হওয়া প্রসঙ্গে দুই সরকারের মাঝে আলোচনার প্রস্তাব দিলো।এটি সম্পুর্ণরূপে যুক্তিসংগত। যাই হোক,ভারতীয় সরকার অকস্মাৎ তা নাকচ করে দিলো।এ থেকে দেখা যায় যে,পশ্চিম পাকিস্তানের শরণার্থীদের সমস্যার স্থায়ী সমাধানে ভারতীয় সরকারের কোনো উদ্দেশ্যই নেই উপরন্তু এই সমস্যাকে পুঁজি করে অজুহাত হিসেবে নিয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ধ্বংস ও আক্রমণ করতে চায়।

জাতিসংঘের দলিল অনুসারে চাইনিজ প্রতিনিধি দল মনে করে,নিরাপত্তা পরিষদের উচিৎ ভারতীয় সরকারের আক্রমণাত্মক আচরণের তীব্র নিন্দা করা এবং ভারতীয় সরকার যেন অবিলম্বে ও নি:শর্ত ভাবে পাকিস্তান থেকে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী প্রত্যাহার করে সেই দাবি করা।
পরিশেষে,চায়না সরকারের পক্ষ থেকে আমি বলতে চাই যে,চায়না সরকার ও জনসাধারণ কঠোরভাবে পাকিস্তান সরকারকে সমর্থন করে এবং তাদের জনসাধারণ শুধু ভারতের হামলার বিরুদ্ধেই প্রতিবাদ করে।এখানে আমি নিরাপত্তা পরিষদ,জাতিসংঘ ও পৃথিবীর জনসাধারণকে ইঙ্গিত করে বলতে চাই যে,ভারতীয় সরকারের সাম্প্রতিক আক্রমনাত্বক কার্যক্রম সংগঠিত হয়েছে সামাজিক সাম্রাজ্যবাদের সমর্থনে।সত্য ঘটনার প্রাচুর্যে এটি সমর্থিত। এই ব্যাপারে আরো বেশি কিছু না বলে আমার কথা এখানেই শেষ করছি।