You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.11.07 | বাংলাদেশ প্রশ্নে চীন ‘ন্যায়সঙ্গত সমাধান’ চায় | স্টেটসম্যান - সংগ্রামের নোটবুক
শিরোনাম সূত্র তারিখ
বাংলাদেশ প্রশ্নে চীন ‘ন্যায়সঙ্গত সমাধান’ চায় স্টেটসম্যান ৭ নভেম্বর, ১৯৭১

বাংলাদেশ প্রশ্ন ‘ন্যায়সঙ্গত সমাধান ‘ চায় চীন সীমান্ত প্রশ্নে ইন্দো-পাক বৈঠক প্রস্তাব

পিকিং,৭ নভেম্বর – ভারত ও পাকিস্তান কে সীমান্তে উত্তেজনা হ্রাসে সলা করতে হুমকি দিলো আজ চীন। আরও,পাকিস্তান কে বাংলাদেশ প্রশ্নে “ন্যায়সঙ্গত সমাধান ” খুঁজতে বলা হয়েছে,সূত্র এএফপি এবং রয়টার। জনাব চেং পেং ফেই,বর্তমান চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী উচ্চ পদস্থ পাকিস্তানী প্রতিনিধিদল এর সম্মানে পেকিং এ আয়োজিত ভোজ এ ইসলামাবাদ এর প্রতি আহবান জানান বাংলাদেশ সমস্যা যেন তারা নিজেরা সমাধান করেন।তিনি বলেন এটি পাকিস্তান এর কাঠামো র মধ্যেই এর দেশটির সংহতি ও ও অখণ্ডতা বজায় রেখেই করা সম্ভব। জনাব চেং প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার সীমান্ত হতে “সংগত দুরত্বে ” সৈন্য প্রত্যাহার এর “সংগত প্রস্তাব ” এর প্রতি সমর্থন জানান।তিনি বলেন-“রাষ্ট্রসমূহের মধ্যকার দ্বন্দ্ব উভয়পক্ষের অংশগ্রহণ এ সমাধা হওয়া উচিত এবং অহংকার এর অবলম্বন এ নয়। ” উক্ত বক্তব্য সম্পর্কিত রেডিও পাকিস্তান এর রিপোর্ট এ অবশ্য দাবী করা হয়েছে যে চীন পাকিস্তান এর প্রতি তার সমর্থন পুনর্ব্যাক্ত করেছে ভারত এর ইউ এন আই সহ যেকোন বিদেশী হামলার প্রশ্নেই। রেডিও পাকিস্তান এ আরও বলা হয়েছে যে,জনাব চেং অভিযোগ করেছেন যে, ভারত পাকিস্তান এর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে।জনাব চেং কে উদ্ধৃত করে আরও বলা হয় যে,চীন নিজে অন্য কোন দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেনা এবং এ ধরনের হস্তক্ষেপ এর বিরোধী। তিনি প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার ভারত এবং পাকিস্তান উভয় রাষ্ট্রের সীমান্ত হতে সৈন্য প্রত্যাহার এর প্রস্তাব এর ন্যায্যতা প্রদান করে বলেন,উপমহাদেশ এ শান্তি আনয়ন এর জন্যই এটি প্রয়োজন। চীন এই পরিস্থিতি তে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন, তিনি যোগ করেন। রেডিও অনুযায়ী জনাব চেং বলেন- ভারত পূর্ব বাংলার পরিস্থিতির অন্যায্য সুবিধা নিচ্ছে।এই চীনা নেতা,চীন পাকিস্তান কে কোন ধরনের সাহায্য দিতে পারে সে সম্পর্কে অবশ্য কোন ইঙ্গিত দেননি। উক্ত ভোজ এ চীনা প্রধানমন্ত্রী জনাব চউ এন লাই ও উপস্থিত ছিলেন। জনাব ভুট্টো,যিনি পাকিস্তানী কূটনৈতিক দলের প্রধান ছিলেন চীন এর সমর্থন এর জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। চীন সফর এর তৃতীয় দিনে আজ,জনাব ভুট্টোর জনাব চউ এন লাই এর সহিত কয়েক দফা বৈঠক এর কথা ছিল। পাকিস্তানী তিনজন পদস্থ কর্মকর্তার তাদের অনুরূপ চীনা কর্মকর্তাদের সাথে আলাদা আলাদা বৈঠক করার কথা।
পরে এক সংবাদ সম্মেলন এ জনাব ভুট্টোকে তার পাকিস্তান সফর এর ফলাফল এবং পাকিস্তান এর প্রতি চীনা সাহায্যের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হয়।
.
পরে একটি সংবাদ সম্মেলনে জনাব ভুট্টোকে সফর ও পাকিস্তানে চায়না সাহায্যের ফলাফল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হল। ‘আমাদের ক্ষমতা প্রকাশ’ কে অস্বিকার করে জনাব ভুট্টো বললেন, “আমরা সবকিছু পরিমাপ করেছি। আমরা ভীষণভাবে আশ্বস্ত আমাদের সব সম্ভাব্যতা সম্পূর্ণরূপে হিসাবে আনতে পেরে”। যাহোক, অবশেষে তিনি সরাসরি চাইনিজ সরকারের প্রতিস্রুতির দ্বন্দে শাসন জারি করলেন, যে কোন সিদ্ধান্তই হবে ‘আমাদের নিজস্ব প্রচেষ্টা’।
জনাব ভুট্টো দাবি করলেন তার প্রতিনিধি যারা কাল খুব সকালে পিকিং ছেড়ে যাবে, তারা চাইনিজ নেতাদের সাথে ‘পরিপূর্ণ পরিচয়ে’ পৌঁছেছে।
তিনি আরো দাবি করলেন এই সফর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘আক্রমণাত্মক উদ্দেশ্য থেকে বিরত থাকতে দৃঢ় অবদান তৈরি করেছে’। সফর শেষে কোন প্রজ্ঞাপন প্রকাশিত হবেনা কারন জনাব ভুট্টো বলেছেনঃ
“আমরা কোন প্রজ্ঞাপনের প্রয়োজন দেখছিনা। চুক্তির কোন দরকার নেই”।
জনাব ভুট্টো স্বেচ্ছায় আরো বললেন, তিনি যা বলেছেন তা তার “ব্যক্তিগত অভিমত” যা “উদ্বেগের মধ্যে” জাতিসংঘ সিকিউরিটি কাউন্সিলের সমাধানে অকালপক্ক হতে পারে। “জাতিসংঘের বাইরেও সমাধান থাকতে পারে” তিনি বলেন।
তিনি বলেন পাকিস্তান ভারতের সাথে সম্পর্কের “একটি নতুন অধ্যায়” এর ব্যাপারে আশাবাদী এবং দাবি করেন পাকিস্তান কোন অস্ত্র দ্বন্দ্ব চায়না এবং “গতিশীলতা” চায় যখন ভারত “সন্ত্রাসবাদ, অন্ধ দেশহিতৈষিতা ও হস্তক্ষেপমূলক পররাষ্ট্রনীতি তে বিশ্বাস করে”।
তিনি পূর্ব বাংলা সমস্যার সমাধানে পাকিস্তানের সম্মতি ঘোষণা করেন “ সদ্বিবেচনা, অপ্রমাদ ও ধীরে সুস্থে”। মিসেস গান্ধীর সাম্প্রতিক বিদেশ সফরকে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “ভারত তার বন্ধুদের সাথে পরামর্শ করছে। আমরা আমাদের বন্ধুদের সাথে। গণপ্রজাতন্ত্রী চায়নার সাথে আমাদের সম্পর্কের ব্যাপারে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি”।