শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
সোভিয়েত পররাষ্ট্র মন্ত্রীর ভারত সগর শেষে প্রকাশিত সোভিয়েত-ভারত যুদ্ধ বিবৃতি | বাংলাদেশ ডকুমেন্টস | ১২ আগস্ট, ১৯৭১ |
সোভিয়েত ইউনিয়ন পররাষ্ট্র মন্ত্রীর বরাতে ভারত সোভিয়েত যৌথ বিবৃতি
মি. এ.এ. গ্রোমাইকো’র ভারত সফর
আগস্ট ১২, ১৯৭১।
ভারত সরকারের আমন্ত্রণে সোভিয়েত ইঊনিয়নের মাননীয় পররাষ্ট্রমত্রী মি. এ.এ. গ্রোমাইকো ৮ আগস্ট থেকে ১২ই আগস্ট ১৯৭১ ভারতে রাষ্ট্রীয় সফরে আসেন।
নিউ দিল্লিতে অবস্থানকালীন সময়ে ভারতের রাষ্ট্রপতি শ্রী. ভি ভি গিরি সোভিয়েত ইউনিয়নের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে আহ্বান জানান এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী উনাকে স্বাগতম জানান। এছাড়াও তিনি খাদ্য ও কৃষিমন্ত্রী ফকরুদ্দীন আলী আহমেদ, অর্থমন্ত্রী শ্রী উয়াই. বি. চৌহান এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী জগজীবন রাম প্রমুখের সাথে সাক্ষাৎ করেন। তাছাড়া উনি সাক্ষাৎ এবং বার্তালাপন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সর্দার শরণ সিং এর সাথে।
উষ্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ আবহের মধ্যে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। খুব সন্তোষজনক ভাবে উল্লেখ করা হয় যে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, প্রযুক্তিগত এবং বৈজ্ঞানিক ক্ষেত্রে ভারত-সোভিয়েত যৌথ ভাবে অগ্রসর হচ্ছে। এই শান্তি চুক্তির জন্য রাজনৈতিক ও আইঙ্গত ভিত্তি আরো শক্তিশালী হচ্ছে। বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার চুক্তি যেটি সাক্ষরিত হয়েছিল ভারত-সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে।
উভয় পক্ষই বিবেচনা করে যে চুক্তিটি তাদের দুই দেশের জন্যই ঐতিহাসিক ঘটনা। চুক্তির সম্পর্কের একটি যৌক্তিক পরিণতি হিসেবে যে আন্তরিক বন্ধুত্ব, পারস্পরিক আস্থা ও তারতম্য বন্ধন সোভিয়েত ইউনিয়ন ও ভারতের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যা সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। এটা ভারত ও সোভিয়েতের মধ্যে মৌলিক স্বার্থ তথা, জাতি ও মধ্যবর্তী ফলপ্রসূ সহযোগিতার উত্থাপন জন্য ব্যাপক সম্ভাবনা খুলে দিবে। দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে অন্যান্য বিধানাবলীর পাশাপাশি সোভিয়েত-ভারত সম্পর্ক, চুক্তি দুই পক্ষের নিয়মিত বজায় রাখার জন্য, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সমস্যা মোকাবিলার জন্য এটি একটি যথাযথ পদক্ষেপ। সোভিয়েত ইউনিয়ন ও ভারতের মধ্যে চুক্তিটি মূলত শান্তি নিশ্চয়তা, এশিয়া এবং বিশ্বের সর্বত্র এবং আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষার জন্য, নিরাপত্তা.জোরদার করার লক্ষ্যে। চুক্তিটি U.N. চার্টার মূলনীতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে করা হয় যেটি কারো বিরুদ্ধে পরিচালিত হয়নি এবং এটি বন্ধুত্ব ও প্রতিবেশীসুলভ সহৃদয়তার জন্যই সাক্ষরিত হয়েছে।
ভারত ও সোভিয়েত ইউনিয়ন সরিকার সুনিশ্চিত যে শান্তি, বন্ধুত্ব ও সহযোগীতার এ চুক্তি সম্পূর্ণ অনুমোদন পাবে তাদের কাছ থেকে যারা সত্যিই এশিয়ায় শান্তি সংরক্ষণে আগ্রহী । মিটিং এবং আলোচনায়, উভয় পক্ষের সন্তুষ্টি সঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে যে, আলোচনা বিভিন্ন সমস্যার উপর তাদের অবস্থানের অভিন্ন বা খুব ঘনিষ্ঠ ছিলেন। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্যাখ্যা করেন যে ৭ লক্ষেরও বেশি শরণার্থী ভারতে প্রবেশ করার কারনে তাদের সম্পদের উপর বোঝা পড়ছে। উভয় পক্ষই বিস্তারিত আলোচনার পর তাদের দৃঢ় বিশ্বাস পুনর্ব্যক্ত করেন যে, একটি রাজনৈতিক সমাধান এবং শরণার্থীদের নিরাপদ অবস্থার সৃষ্টির জন্য ও পাকিস্তানের সমগ্র মানুষ এবং এলাকায় শান্তি সংরক্ষণের কারনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। ভারতের সমস্যা বোঝার জন্য সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রতি ভারতের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ স্পষ্ট ছিল।
উভয় পক্ষই মনে করেন যে ভারত-চীন সম্পর্কের ক্ষেত্রে যে বাইরের হস্তক্ষেপ হয় সেটি অবিলম্বে থামা উচিত। তারা মনে করেন যে এই আরোপের প্রচেষ্টা গ্রহনযোগ্য নয়। তারা দক্ষিন ভিয়েতনামের অস্থায়ী বিপ্লবী সরকারের প্রস্তাবিত ৭ দফাকে স্বাগত জানান যেটি একটি শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক বন্দোবস্তের ভিত্তিতে গঠন করতে পারে। উভয় পক্ষ পশ্চিম এশিয়ার উপর 22 নভেম্বর, 1967-এর নিরাপত্তা পরিষদের রেজোলিউশন বাস্তবায়নের পক্ষে জরুরী প্রয়োজন এর বিশ্বাসে ছিল।
উভয় পক্ষই বিবেচনা করে যে সকল সীমান্ত বিরোধ সহ আন্তর্জাতিক সমস্যা শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে
করা এবং তাদের নিষ্পত্তির জন্য বলপ্রয়োগের বা ব্যবহারের হুমকি আবশ্যক নয়।
উভয় পক্ষই ঘোষণা করে যে তারা প্রাথমিক একটি প্রাথমিক চুক্তির পক্ষে জোরালোভাবে আছে এবং উভয় পারমাণবিক ও প্রচলিত অস্ত্র সহ সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরনে আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রনের অধীন।
সোভিয়েত ইউনিয়নের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারত সরকার কর্তৃক তাঁকে দেয়া সম্মানের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।