শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে সামরিক বল প্রয়োগে সোভিয়েত প্রতিক্রিয়া। ইয়াহিয়ার কাছে সুপ্রীম সোভিয়েত সভাপতিমণ্ডলীর সভাপতি নিকোলাই পদগোর্নির বার্তা | প্রভাদা উদ্ধৃতিঃ সোভিয়েত তথ্য বিভাগ প্রচারিত পুস্তিকা- ‘বাআংলাদেসশ সংগ্রাম ও সোভিয়েত ইউনিয়নের ভূমিকা। | ৪ এপ্রিল, ১৯৭১ |
.
সোভিয়েত ইউনিয়নের সর্বোচ্চ সেভিয়েতের সভাপতিমন্ডলীর সভাপতি নিকোলাই পদগোর্নি পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের কাছে নিম্নোক্ত বার্তা পাঠিয়েছেন
“মাননীয় প্রেসিডেন্ট মহাশয়, ঢাকার আলোচনা ভেঙ্গে যাওয়ার খবর এবং সামরিক প্রশাসন চূড়ান্ত ব্যবস্থা অবলম্বন প্রয়োজন মনে করে পুর্ব পাকিস্তানের জনসাধারণের বিরুদ্ধে সামরিক বলপ্রয়োগ করেছেন- এই মর্মে খবর সোভিয়েত ইউনিয়নে গভীর উদ্বেগ সঞ্চার করেছে।
“এই ঘটনার ফলে পাকিস্তানের অগণিত মানুষের প্রাণহানি, নিপীড়ন ও দুঃখকষ্টের খবরে সোভিয়েতের জনগণ বিচলিত না হয়ে পারে না। মুজিবর রহমান এবং অন্যান্য রাজনৈতিক ব্যক্তিদের বন্দী করায় এবং নির্যাতন করায়ও সোভিয়েত ইউনিয়ন উদ্বেগ বধ করছে। এইসব নেতারা হালের সাধারণ নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের সন্দেহাতীত সমর্থন লাভ করেছিলীন। সোভিয়েত জনগণ সর্বদাই পাকিস্তানের মানুষের মঙ্গল কামনা করেছে এবং গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে দেশের জটিল সমস্যার সমাধানের তাদের সফলতায় আনন্দিত হয়েছে।
“পাকিস্তানের জনগণের কঠিন পরীক্ষার দিনে খাঁটি বন্ধু হিসেবে আমরা দুয়েকটা কথা না বলে পারি নাআ। আআম্রা বিশ্বাস করি যে পাকিস্তানের বর্তমানে যে জটিল সমস্যার উদ্ভব হয়েছে, বলপ্রয়োগ না করে রাজনৈতিকভাবে তার সমাধান করা যায় এবং করতে হবে। ঊর্ব পাকিস্তাণের দমননীতি এবং রক্তপাত যদি চলতে থাকে তাহলে নিঃসন্দেহে সমস্যার সমাধান আরো কঠিন হয়ে উঠবে এবং তাতে পাকিস্তানের সমস্ত মৌল স্বার্থেরই বিরাট ক্ষতি হবে।
“প্রেসিডেন্ট মহাশয়, সোভিয়েত ইউনিয়নের সর্বোচ্চ সোভিয়েতের সভাপতিমন্ডলীর পক্ষ থেকে আপনাকে কিছু বলা আমাদের কর্তব্য বলে মনে করি। পূর্ব পাকিস্তানের রক্তপাত বন্ধ করার জন্য, সেখানকার মানুষের নিপীড়নের অবসান ঘটানোর জন্য এবং সমস্যা সমাধানের একটি শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক উপায় উদ্ভাবনের জন্য অত্যন্ত জরুরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আপনাকে সনির্বন্ধ অনুরোধ জানাচ্ছি। আমরা বিশ্বাস করি যে পাকিস্তানেরসমস্ত মানুষের স্বার্থ এবং সে অঞ্চলের শান্তিরক্ষার স্বাআর্থ এর ফলে রক্ষিত হবে।
“উদ্ভুতসমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানকে সমগ্র সোভিয়েত জনগণ সন্তোষের সাথে গ্রহণ করবেন।”
আপনাকে আবেদন জানাবার সময়ে আমরা মানবাধিকার সংক্রান্ত সর্বজনীন ঘোষণায় লিপিবদ্ধ সর্বজনস্বীকৃত মানবিক নীতির দ্বারা এবং পাকিস্তানের বন্ধু জনগণের কল্যাণের জন্যে উদ্বেগের দ্বারা পরিচালিত হয়েছি।
“প্রেসিডেন্ট মহাশয়, আপনাকে এই অনুরোধ জানাতে আমরা কোন নীতি দ্বারা পরিচালিত হয়েছি, আশা করি আপনি তা সঠিকভাবে বুঝতে পারবেন। আমাদের একান্ত কামনা অবিলম্বে পূর্ব পাকিস্তানেশান্তি এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হোক।”
ক্রেমলিন, মস্কো, ২ এপ্রিল ১৯৭১ প্রাভদা, ৪ এপ্রিল, ১৯৭১