শিরোনাম | সুত্র | তারিখ |
শরণার্থীদের জন্য অর্থ সংগ্রহের উপর আরেকটি প্রতিবেদন | ইস্ট পাকিস্তান ইমারজেন্সী রিফিউজী ফান্ড | ২৩ নভেম্বর, ১৯৭১ |
পূর্ব পাকিস্তান জরুরী শরণার্থী তহবিল
সাউথ পয়েন্ট প্লাজা, লান্সিং, মিশিগান
নভেম্বর ২৩, ১৯৭১
অংশগ্রহন করার জন্য আপনার প্রতি আমন্ত্রন রইল
জাতীয় গণ ক্যাম্পেইনের জন্য জরুরী কৌশলগত সভা
আজ ভারতীয় শরণার্থী ক্যাম্পে প্রায় ৪০০০ শিশু মারা গেছে যাদের বেশীরভাগই ছোট বাচ্চা। (উৎসঃ সিনেটর কেনেডির ভাষণ, ৪ঠা নভেম্বর)
গত ২৬ শে অক্টোবর ব্রাসেলসে প্রদত্ত শ্রীমতী গান্ধীর ভাষ্য অনুযায়ী সারা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ১৩৫ মিলিয়ন ডলারের সাহায্য আসার কথা থাকলেও ভারতে পৌঁছেছে ৩০ মিলিয়ন ডলারের থেকেও কম। ভারত ইতোমধ্যে আনুমানিক ৩৫০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে এবং আগামী মার্চ এর মধ্যে আরও ৫০০ মিলিয়ন খরচ হবে।
হাউজ অফ সিনেটে ২৫০ মিলিয়ন ডলারের শরনার্থী ত্রান বিল পাশ হওয়া এবং বাঙ্গালীদের জীবন বাঁচানোর জন্য সেই অর্থ প্রশাসন কতৃক পাঠাবার সিদ্ধান্ত নিতে নিতে বাংলার অপুস্টিতে ভোগা রোগাক্লিষ্ট শিশুগুলো বেঁচে থাকবে কিনা সেটাই প্রশ্ন।
আমাদের অবশ্যই ভারতে এবং বাংলাদেশের যুদ্ধবিহীন এলাকায় শরণার্থীদের সাহায্যার্থে যথেষ্ট পরিমানে এবং অত্যন্ত দ্রুত উক্ত অর্থ ছাড় করতে হবে। যেখানে আমাদের মতই রক্ত মাংসের কিছু মানুষ এমন নিদারুন যন্ত্রণায় ভুগছে আর ধুঁকে ধুঁকে মরছে সেখানে আমাদের অন্য দিকে তাকিয়ে থাকার সুযোগ নেই।
যদি আমরা একটি মারাত্মক বিপর্যয় এড়াতে চাই তাই দেশজুড়ে এই পিপল-টু-পিপল প্রচারনার কৌশলগত সভায় আপনার অংশগ্রহণ অপরিহার্য।
একেতো বাঙ্গালীরা গত বছর বয়ে যাওয়া শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ ঘুর্নিঝড়ে বিরাট মুল্য দিয়েছে তার উপর মানব সৃষ্ট এই দুর্যোগ সেটিকেও ছাড়িয়ে গেছে যেখানে দশ লক্ষাধিক নিরীহ মানুষ জীবন দিয়েছে।
পিপল-টু-পিপল শুরু করার হয়েছে কয়েকটি গ্রুপ এবং আমেরিকার হাজার হাজার ব্যক্তির সহযোগিতায় যার একমাত্র উদ্দেশ্য হল বাংলাদেশের জনগণের ভয়াবহ যন্ত্রণা মুক্তিতে সাহায্য করা।
সকল সক্রিয় একক ব্যক্তি এবং সংগঠনসমুহের সাথে আমরা জাতীয় কৌশল নির্ধারণ এবং এই প্রচারণা শুরুর জন্য করনীয় সম্পর্কে আলোচনার জন্য একটি জরুরী সভা করতে চাই।
এই প্রচারনার উদ্দেশ্য হল ১ কোটি আমেরিকান খুঁজে বের করা যারা পরবর্তী ৬ মাস প্রতিদিন ৩৩ সেন্ট অথবা প্রতিমাসে ১০ ডলার করে দিতে রাজী হবে।
একবার ভেবে দেখুন, আমরা যদি সমগ্র আমেরিকার ২০ কোটি মানুষের মধ্যে মাত্র ৫% লোক খুঁজে বের করতে পারি যারা প্রত্যেকে একজন শরনার্থী শিশু, একজন মা কিংবা একজন বাবার দায়িত্ব নিবেন তাহলে আমরা মানব জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় উদ্ধার অভিযান শুরু করতে পারবো।
“মাত্র ৫ ডলারে আপনি একটি ভুল ধারণা ভেঙ্গে দিতে পারেন যে এশিয়ানদের বাঁচা মরায় আমেরিকানদের কোনো আগ্রহ নেই”
আমরা স্বীকার করি যে অনেক পরিবারের জন্যই এই ত্যাগ অনেক কিছু, কিন্তু আমাদের মন বলছে অন্তত ৫% জনগন এই প্রচারনায় অংশগ্রহণ করবে।
পরিবারসমুহ, চার্চ গ্রুপ, স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীরা বুধবার (অথবা অন্য যেকোনো দিন) রোজা-উপবাস থাকতে পারে এবং তাদের খাবারের এই অর্থ “বুধবারের মানুষ” ব্যানারে বাংলাদেশের জনগণের জন্য দান করতে পারে।
এই ক্যাম্পেইন এমন একটি মাত্রার বিরাট বিপর্যয় যে, (এতই বিরাট এক বিপর্যয় যে অনেকেই এর ভয়াবহতা অনুধাবন করতে পারছেন না) একজন সাধারন মানুষও কিছু না কিছু করতে পারে। তিনি একটি শিশুর সাথে একাত্মতা প্রকাশ করতে পারেন।
রোজার দ্বারা একজন মানুষ ব্যক্তিগতভাবে সম্পৃক্ত হতে পারেন এবং এই প্রক্রিয়ায় তিনি বাঙ্গালী সংস্কৃতি এবং জীবন যাপনের সাথে পরিচিত হয়ে নিজেকে আলোকিত করতে পারেন।
আপনি এই ক্যাম্পেইনে স্থানীয় এবং জাতীয় পর্যায়ে জরুরী এবং মোক্ষম ভুমিকা পালন করতে পারেন।
জাতীয় পিপল-টু-পিপল ক্যাম্পেইনের নীতিনির্ধারক কমিটি এই ধারনাটি দেশ জুড়ে ছড়িয়ে দেওয়ার কৌশল নিয়ে আপনাদের সাথে আলোচনা করতে চায় এবং আপনার দিকনির্দেশনা, সাহায্য এবং সহযোগিতা প্রার্থনা করে।
এখানে সংযুক্ত আলোচ্যসুচী থেকে আপনারা ধারণা পাবেন যে কি ধরনের আইডিয়া নিয়ে আপনারা আসতে পারেন এবং আপনার স্থানীয় কমিউনিটিতে কি ধরনের পদক্ষেপ কাজে লাগতে পারে।
আমরা প্রচুর পরিমানে সাহিত্য, স্লাইড, চলচ্চিত্র, পোস্টার, বাংলাদেশ ক্রিসমাস কার্ড, বই ইত্যাদি আশা করছি। তবে আপনারা যে যা পারেন অনুগ্রহপূর্বক নিয়ে আসবেন।
অনুগ্রহপুর্বক ১লা ডিসেম্বর, বুধবার এর আগেই আপনার উপস্থিতি নিশ্চিত করুন।
– ই পি ইমারজেন্সি রিফিউজি ফান্ড
অন্যান্য স্পন্সর সংস্থাসমুহঃ
বেওয়া, প্রজেক্ট রিলিফ, বিডিএল, অক্সফাম, বিআইসি
লান্সিং আসার নির্দেশনাঃ
ডেট্রয়ট মেট্রো এয়ারপোর্ট থেকে – গাড়িতে ১ ঘন্টা ১৫ মিনিট। পূর্ব লান্সিং ধরে, মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটি হয়ে ট্রোব্রিজ সড়ক দিয়ে বেরিয়ে যান। প্রথম বাতিতে বামে আসুন। শপিং সেন্টার পর্যন্ত এসে ডানে পিছনের চার্চ পার্কং লটে আসুন।
শিকাগো এবং ডেট্রয়ট থেকে এয়ার মিশিগান এবং ট্রান্স মিশিগান নামের কমিউটার এয়ারলাইন্সেও আসতে পারেন।
আলোচ্যসুচী
৩ রা ডিসেম্বর, শুক্রবার
সকাল ৯টা – দুপুর ১২টা রেজিস্ট্রেশন
দুপুর ১২টা – দুপুর ১ টা মধ্যাহ্ন ভোজঃ স্বাগত বক্তৃতা, বর্তমান পরিস্থিতির উপর রিপোর্ট
১টা ৩০ মিনিট – ৩টা ৩০ মিনিট দলীয় আলোচনাঃ আলোচনার বিষয়
১। জাতিসংঘের ভূমিকা
২। ত্রান কার্যক্রম
৩। যুদ্ধ
৪। শরনার্থীরা কি ফিরে যাবে?
৫। আমেরিকার নীতি
৬। বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ
৭। বাংলাদেশ এবং মুক্তিবাহিনীর ভবিষ্যৎ
বিকাল ৪টা – ৫টা দলীয় আলোচনার প্রতিবেদনঃ আমেরিকায় কার্যক্রমের সারসংক্ষেপ
সন্ধ্যা ৭ টা – ৯ টা পিপল-টু-পিপল ক্যাম্পেইন এবং বুধবারের রোজা – এর কৌশলঃ
এস পোদ্দার – চেয়ারম্যান, ইপিইআরএফ
শেইলা ডোয়াম এবং রন ইন্ডেন – ন্যাশনাল ফাস্ট কমিটি
আলোচনা, প্রশ্নোত্তর পর্ব
৪ই ডিসেম্বর, শনিবার
সকাল ৯ টা- ১০টা ন্যাশনাল ক্যাম্পেইনের কতিপয় প্রকল্প কার্যকরকরণ
১০টা ৩০ মিনিট – ১২টা ৩০ মিনিট ওয়ার্কশপঃ মিডিয়া, যুবসমাজ, গণশিক্ষা, তদবির, তহবিল সংগ্রহ কৌশল
১টা ৩০ মিনিট – বিকাল ৩টা ওয়ার্কশপ প্রতিবেদন এবং আলোচনা
বিকাল ৩ টা – বিকাল ৫ টা দায়িত্ব বন্টনঃ সময়সুচী, ন্যাশনাল ক্যাম্পেইনের সমন্বয়
সন্ধ্যা ৭ টা ৩০ – ৯ টা ৩০ মিনিট বাংলাদেশ রাত্রিঃ বিনোদনমূলক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
৫ই ডিসেম্বর, রবিবার
সকাল ১০টা- দুপুর ১২টা
মুক্তালোচনা
আমন্ত্রিত অতিথিদের কয়েকজন নিন্মরুপঃ
সিনেটর এডওয়ার্ড কেনেডি
জনাব কে আহুজা, কনসাল জেনারেল অফ ইন্ডিয়া, নিউইয়র্ক
জনাব এম কে রাসগোত্রা, মিনিস্টার অফ পলিটিক্যাল এফেয়ার্স, ভারতীয় দুতাবাস
জনাব এম এস সিদ্দীকি, আমেরিকায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত
জনাব চেস্টার বোলস, ভারতে সাবেক রাষ্ট্রদূত
সম্মানিত রবার্ট ডিরিনান, ইউ এস কংগ্রেসম্যান-মাস
ডঃ হোমার জ্যাক, ওয়ার্ল্ড কনফারেন্স অফ রেলিজিওন ফর পিস
জনাব উইলিয়াম প্লাইম্যাট, প্রিফার্ড রিস্ক বীমা কোম্পানির চেয়ারম্যান
জনাব জর্জ ওয়াল্ড, নোবেল বিজয়ী, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়
জনাব হেনরি নাইলস, চেয়ারম্যান, বাল্টিমোর লাইফ ইনস্যুরেন্স কোঃ
জনাব থমাস কলিন্স, এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট, রাপ এন্ড কলিন্স
জনাব ম্যাক্সওয়েল ডেইন, প্রেসিডেন্ট, ডয়েল, ডেইন এন্ড বেমব্যাচ
জনাব রবার্ট রিস, ডয়েল, ডেইন এন্ড বেমব্যাচ
জনাব ইকবাল আহমেদ
জনাব কেনেথ স্মিথ, লিগ্যাল এডভাইসর, ইস্ট পাকিস্তান ইমারজেন্সি রেফিউজি ফান্ড, ইনকরপরেশন
জনাব স্টেইনলি বুর্কে, অক্সফাম- কানাডা
জনাব রবার্ট ফিঙ্ক, অক্সফাম- আমেরিকা
জনাবা শিলা ডাহম, প্রজেক্ট রিলিফ
জনাব রিচার্ড ফার্নান্দেজ, ভিয়েতনামের ক্লারগি এন্ড লেয়মেন সংশ্লিষ্ট
ডঃ ডব্লিউ বি গ্রিনাফ, ডঃ লিঙ্কন চেন এবং জনাব ডেভিড ওয়েসব্রড, বাংলাদেশ ইনফরমেশন সেন্টার
জনাব রন ইন্ডেন, বাংলাদেশ ইমারজেন্সি ওয়েলফেয়ার এপিল
জনাব রিচার্ড ওয়েনার, রিচার্ড ওয়েনার, ইনক।
রেভারেন্ড ডব্লিউ জে ডেয়, চেয়ারম্যান, লান্সিং এরিয়া ইমারজেন্সি রেফিউজি ফান্ড
জনাব ইসলাম তরফদার, বাংলাদেশ ইমারজেন্সি ওয়েলফেয়ার এপিল
জনাব টিনু পুরী
জনাব সুব্রত ঘোষ
জনাব হক
জনাব সামসুল বারী, বাংলাদেশ ডিফেন্স লীগ
ইউনিসেফ
কেয়ার
আমেরিকান রেডক্রস
ইন্টারন্যাশনাল রেস্কিউ কমিটি
ক্যাথলিক রিলিফ সার্ভিস
চার্চ ওয়ার্ল্ড সার্ভিস
আমেরিকান্স ফর চিল্ড্রেন্স রিলিফ
সেইভ দ্য চিল্ড্রেন ফেডারেশন ইমারজেন্সি ফান্ড
স্থানঃ ইউনাইটেড মিনিস্ট্রি অফ হাইয়ার এজ্যুকেশন
১১১৮ এস, হ্যারিসন রোড, ইস্ট লান্সিং, মিশিগান ৪৮৮২৩