You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.11.05 | ডিসেম্বরের আগেই ঢাকায় স্বাধীন বাংলার পতাকা উড়বে। বিমান আক্রমণ উপেক্ষা সকল রণাঙ্গনে মুক্তি বাহিনীর অগ্রগতি - সংগ্রামের নোটবুক

ডিসেম্বরের আগেই ঢাকায় স্বাধীন বাংলার পতাকা উড়বে। বিমান আক্রমণ উপেক্ষা ঃ সকল রণাঙ্গনে মুক্তি বাহিনীর অগ্রগতি

(জয়বাংলার রণাঙ্গন প্রতিনিধি) সকল রণাঙ্গনে মুক্তিবাহিনী দুর্বার বেগে এগিয়ে চলেছে। প্রতিটি সেক্টরে প্রক্তিবাহিনীর প্রচণ্ড আক্রমণে ভারী অস্ত্রশস্ত্র অসংখ্য মৃতদেহ ফেলে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী দ্রুতবেগে পলায়ন করছে। দলে দলে রাজাকার মুক্তিবাহিনীর হাতে আত্মসমর্পণ করছে। যশােরে হানাদারদের তিনটি চৌকি এখন মুক্তিবাহিনীর হাতে। যশাের ক্যান্টনমেন্ট দ্রুত নাটোরে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে । মুক্তিবাহিনীর দুর্বার অগ্রগতি দৃষ্টে আশা পােষণ করা হচ্ছে, আগামী ডিসেম্বর মাসের আগেই দখলীকৃত ঢাকায় স্বাধীন বাংলার পতাকা সগর্বে উড্ডীন হবে। বাংলাদেশের বিভিন্ন রণাঙ্গনে ব্যাপক সফর শেষে মুজিবনগরে পৌছে বাংলাদেশ বাহিনীর প্রধান কর্ণেল ওসমানীও এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন একই কথা। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে হানাদার পাকিস্তানী বাহিনীর শেষ দিন ঘনিয়ে এসেছে।  মুজিবনগরে অনুষ্ঠিত সাংবাদিক সম্মেলনে কর্ণেল ওসমানী বলেন, মুক্তিবাহিনীর হাতে প্রচণ্ড মার খেয়ে উপায়হীন হয়ে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ সম্প্রসারিত করার ও ভারত আক্রমণের চেষ্টা করতে পারে। তিনি বলেন, বিভিন্ন রণাঙ্গন ঘুরে তিনি দেখেছেন মুক্তি বাহিনীর হাতে খান সেনারা বিপুলহারে ঘায়েল হচ্ছে এবং তারা বুঝতে পেরেছে, তাদের শেষ দিন ঘনিয়ে এসেছে। দিকে দিকে ওড়ে মুক্তি পতাকা। মুক্তিবাহিনীর প্রচন্ড আক্রমণে ৩০শে অক্টোবর পর্যন্ত চারদিনে বাংলাদেশের বিভিন্ন রণাঙ্গনে ৯৫ জন। হানাদার সৈন্য নিহত এবং ২১ জন আহত হয়েছে। মুক্তিবাহিনীর ৪ জন বীর শহীদ হয়েছেন।  হানাদার সেনাদের সঙ্গে মুক্তিবাহিনীর সংঘর্ষ হয় ঢাকা-কুমিল্লা-চীন গােসাইগঞ্জ হাট, পলাশবাড়ী, জয়পুরহাট ও অমরখানায় রংপুর-দিনাজপুর-রাজশাহী সেক্টরের লালমণিরহাটের উত্তর পশ্চিমে এবং কুষ্টিয়া-যশাের-খুলনা সেক্টরের মান্দ্রা ও বাসায়। এক্ষণে সিলেট ও ময়মনসিংহ জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে হানাদারদের সঙ্গে মুক্তিবাহিনীর তীব্র লড়াই চলছে। সিলেট জেলার রাধানগর, সারিঘাট, কানাইঘাট ছাড়াও সালুটিগড় বিমান বন্দরের কাছে প্রচণ্ড লড়াই হয়। রাধানগর ও সরাইঘাটির মধ্যে মুক্তিবাহিনীর অগ্রগতি রােধ করার জন্য হানাদারদের বিমান আক্রমণ চালাতে হয়। কিন্তু বিমান আক্রমণ সত্ত্বেও মুক্তিবাহিনীর অগ্রগতি অব্যাহত রয়েছে।

জয়বাংলা (১) ১ : ২৬

৫ নভেম্বর ১৯৭১

সূত্র:  গণমাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ -খন্ড  ০৯